পদ্মা সেতুর ৪৭ ভাগ কাজ শেষ; প্রথম স্প্যানটি বসছে যেকোন দিন

  18-09-2017 09:18PM

পিএনএস : অবশেষে পদ্মা সেতুর প্রথম সুপার স্ট্রাকচার বা স্প্যানটি বসছে যেকোন দিন। এর মধ্যেই চূড়ান্ত করা হয়েছে স্প্যান বসানোর জন্য পদ্মাসেতুর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর দুটি পিলার।

এ দুটি পিলারের কংক্রিটিংয়ের কাজ শেষ হলেই স্প্যান বসানো হবে। চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষে এ দুটি পিলারের মধ্যে প্রথম স্প্যানটি বসাতে এখন সমায়ের ব্যাপর মাত্র।

তবে নাব্যতা সংকটে স্প্যান বসানোর বিশেষ ক্রেনটি আসা যাওয়া করতে যাতে বাধা হতে না পারে সে লক্ষে পুরোদমে চলছে ড্রেজিং। নদীর পাড় থেকে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যে ও ৩ হাজার টন ওজনের এক একটি স্প্যান পিলারের কাজে নিয়ে যেতে ব্যবহার করা হবে বিশ্বের সবোর্চ্চ শক্তিসম্পন্ন ৩৬শ মেট্রিক টন ওজন বহনের ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ক্রেন। এটি নদীতে চলাচল করতে ৫ মিটার গভীরতা প্রয়োজন হলেও সাধারনত পদ্মায় পানির গভীরতা থাকে ৩ মিটার। তাই দিনরাত্র এখানে ৮টি ড্রেজারের সাহার্য্যে পলি অপসারণ করা হচ্ছে। সেই সাথে দেশের দক্ষিনাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের অন্যতম প্রবেশ দ্বার শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি নৌরুটে যানবাহন পারাপারের জন্য ফেরি চলাচলের বিষয়টিও মাথায় রাখছেন কতৃপক্ষ।

পদ্মাসেতুতে মূল পিলার হিসেবে থাকবে ৪২টি এছাড়াও দুই পারে আরো ১২টি করে ২৪টি পিলার থাকবে। অথাৎ দেশের বৃহৎ এই সেতুটিতে সর্ব মোট পিলার বসবে ৬৬টি। মূল ৪২টি পিলারের প্রতিটি পিলারে ৬টি করে পাইল বসবে এতে মোট পাইল বসবে ২৫২টি। এর মধ্যে ১১৭টি পাইল ইতোমধ্যে পদ্মাবক্ষে স্থাপন করা হয়েছে। এ দিকে ৪২টি পিলারের উপর ৪১টি স্প্যান বা সুপার স্ট্যাকচার বসানো হবে। প্রতিটি সুপার স্ট্রাকচার বা স্প্যানের দৈর্ঘ ১৫০ মিটার এবং এর ওজন ৩ হাজার মে.টন। যার মধ্যে ২১টি স্প্যান ইতোমধ্যে তৈরি হয়ে গেছে। এবং বাংলাদেশে এসেছে ১৪টি স্প্যান। এ গুলিকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়াস্থ্য কুমারভোগে পদ্মাসেতু কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে রাথা হয়েছে।

এখানেই এগুলিকে ফিটিংসসহ নানা পরীক্ষা-নিরিক্ষা শেষে সেতুর উপর বসানো হবে। এর মধ্যে ৩টি স্প্যান ভর পরীক্ষাসহ সম্পূর্ণ রুপে প্রস্তুত করে করা হয়েছে। শুরু হয়েছে রংয়ের কাজও। আরও ৪টি স্প্যান প্রস্তুত করা হয়েছে। এ গুলিকেও ভর পরীক্ষা করার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। মোট ৭টি স্প্যান প্রস্তুত এবং ৭টি সংরক্ষণে রয়েছে যার পিটিংস কাজ পর্যায়ক্রমে চলবে। এসব সুপার স্ট্রাকচার বা স্প্যান তৈরির কাজ চলছে চীনের সাং হাই শহরের সিং হোয়াং দাও কারখানায়। নদীর পাড় থেকে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যে ও ৩ হাজার টন ওজনের এক একটি স্প্যান পিলারের কাছে নিয়ে যেতে ব্যবহার করা হবে বিশ্বের সবোর্চ্চ শক্তিসম্পন্ন ৩৬শ মেট্রিক টন ওজন বহনের ক্ষমতাসম্পন্ন ক্রেন। যা অনেক আগেই মাওয়াস্থ্য পদ্মাসেতু প্রকল্প এলাকায় পৌছেছে।

পদ্মা বহুমুখী সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, পদ্মাসেতুর কাজ পরিকল্পনা মাফিক এগিয়ে চলছে। কোন প্রতিকূলতাই আমাদের আঁচ করতে পারবে না। সব কিছু আমাদের আয়ত্বের মধ্যে আছে। প্রবল বর্ষণ আর তীব্র স্রোতের রাতেও আমাদের কাজ এগিয়ে চলছে। সার্বিক কাজের ৪৭ ভাগ কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। আশা করা হচ্ছে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামি ১৫দিনের মধ্যে ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারের উপর প্রথম সুপার স্ট্রাকচার বা স্প্যানটি বসানো সম্ভব হবে। হ্যামার জটিলতার কারণে কাজ ব্যাহত হলেও গত মাসে প্রকল্পে যোগ হয়েছে ১৯শ কিলোজুলের নতুন একটি হ্যামার। বর্তমানে তাই মোট দুটি হ্যামার দিয়ে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন