আবার চালু হচ্ছে রাজশাহীর রেশম কারখানা

  23-11-2017 12:48PM

পিএনএস ডেস্ক: আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে চালু করা হবে রাজশাহী রেশম কারখানা। ১৫ বছর বন্ধ থাকার পর পরীক্ষামূলকভাবে বুধবার বিকেলে ওই কারখানাটির কয়েকটি লুম মেশিন পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়। যা সর্বশেষ চলেছিল ২০০২ সালের ২৯ নভেম্বর।

রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা ও বিভাগীয় কমিশনার নূর উর রহমানের উপস্থিতিতে বুধবার রেশম কারখানার লুম মেশিন পরীক্ষমূলকভাবে চালু করে দেখা হয়।

এসময় ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, 'রেশম কারখানা বন্ধ হওয়ায় দুর্ভাগ্য ছিল রাজশাহীবাসীর। রেশম কারখানা চালুর ফলে আবার সফলতা আসবে রাজশাহীবাসীর জন্য। রেশম কারখানাটি খুলে দেয়ার দাবিতে আমারা অনেক আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি।'

তিনি আরও বলেন, 'আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে রেশম কারখানা খুলছে। তিন স্তরের মাধ্যমে রেশম কারখানা চালু হবে। আগামী ৬ মাসের মধ্যে পুরো কারখানা চালু হবে। তুত চাষের উন্নয়নে ভারত থেকে ৩০ কোটি টাকা অনুদান পাওয়া গেছে। সরকার দেবে আরও দুই কোটি টাকা। রেশম শিল্পকে এগিয়ে নিতে এ টাকা তুতচাষিদের ঋণ দেয়া হবে।'

রেশম কারখানা খুলে দেয়াটা রাজশাহীবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি। তিনি সেই দাবি পূরণ করে রাজশাহীর ঐতিহ্যকে রক্ষা করছেন বলেও বাদশা বলেন।এ সময় রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার নূর-উর-রহমান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকার, বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য কামাল উদ্দিনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

রেশমবোর্ড সূত্রে জানা যায়, বন্ধ ঘোষণার সময় রেশম কারখানায় ৬৩টি লুম ছিল। এর মধ্যে উৎপাদন চলতো পুরনো ৩৫টি লুম দিয়ে। নতুন ২৮টি লুম চালুর আগেই কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। বন্ধের আগে কারখানাটি বছরে ১ লাখ ৬ হাজার মিটার রেশম কাপড় উৎপাদন করতো।

আগামী দেড় মাসের ভেতর কারখানার অন্তত পাঁচটি লুম চালুর মাধ্যমে উৎপাদনে যাবে রেশম কারখানা। পর্যায়ক্রমে কারখানার সব লুমই চালু করা হবে। এই ৬৩টি লুম চালু হলে বছরে কাপড় উৎপাদন হবে ২ লাখ ৮৭ হাজার মিটার।

উল্লেখ্য, রাজশাহীর শিরোইল বাস টার্মিনাল এলাকায় ১৯৬১ সালে সাড়ে ১৫ বিঘা জমির ওপর স্থাপিত হয় রাজশাহী রেশম কারখানা। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার প্রায় ১০ কোটি টাকার নতুন যন্ত্রপাতি কিনে কারখানাটির আধুনিকায়ন করে। লোকসান থাকলেও এটি তখন ভালোই চলছিল। কিন্তু মূলধন না থাকার অজুহাতে ২০০২ সালের ৩০ নভেম্বর কারখানাটি বন্ধ করে দেয় তৎকালীন চারদলীয় জোট সরকার।

ওই সময় কারখানাটির কাঁধে ছিল ১ কোটি ১৩ লাখ টাকার ঋণের বোঝা। ওই সময় সেখানে কর্মরত ছিলেন প্রায় ৩শ' স্থায়ী শ্রমিক। বন্ধের পর স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে চার শতাধিক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়ে।

পাশাপাশি বিপাকে পড়ে আরো প্রায় ৫০ হাজার পলুচাষী। সে সময় আন্দোলন করেও কারখানাটি চালু করতে পারেনি রাজশাহীবাসী। বিক্রি করতে না পেয়ে এ অঞ্চলের পলুচাষীদের অনেকেই পলুচাষ কমিয়ে দিতে বাধ্য হয়।

পিএনএস/কামাল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন