কূটনীতিকদের ব্যর্থতায় গণহত্যার স্বীকৃতি আসেনি : মোজাম্মেল হক

  24-03-2019 06:36PM

পিএনএস ডেস্ক : মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ২০১৫ সালে জাতিসংঘ যখন আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়, তখন দেশের কূটনীতিকেরা ২৫ মার্চের গণহত্যার প্রেক্ষাপট সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারেননি।

২৫ মার্চের গণহত্যার বিষয়ে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি না পাওয়া প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মন্ত্রী এ কথা বলেন। আজ রোববার ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘একাত্তরের ২৫ মার্চের গণহত্যা ও আমাদের ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে আ ক ম মোজাম্মেল হক প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। ‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’ নামের একটি সংগঠন এই সেমিনারের আয়োজন করে।

আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মতো ৯ ডিসেম্বরে কোনো সুনির্দিষ্ট ঘটনা নেই। আমাদের মুখ্য সুযোগ ছিল ২০১৫ সালে। তখন জাতিসংঘের ভুল সংশোধনের জন্য কূটনীতিকরা সেভাবে প্রতিবেদন উপস্থাপন করতে পারেননি। তিনি বলেন, ২৫ মার্চের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়া খুব সহজ হবে না। একাত্তরে পাকিস্তানকে সহযোগিতা, সমর্থন জানিয়ে আসা আমেরিকা, চীন ও ইসলামিক উম্মাহর দেশগুলোর অমানবিক চেহারা যে তাহলে প্রকাশ হয়ে যাবে। তবে সরকার এখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ২৫ মার্চের গণহত্যা বিষয়ে সারা বিশ্বে জনমত গঠনে কাজ করছে।

মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, এ দেশে যারা স্বাধীনতা প্রিয় এবং স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাস করেন, তাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানিরা যে পৈশাচিক, অমানবিক হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল, সেই দিনটিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে গণহত্যার স্বীকৃতি দেওয়ার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই কাজটি করেছেন। শুধু তাই নয়, দিবসটিকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে কীভাবে স্বীকৃতি পাওয়ানো যায়, সে বিষয়ে আন্তর্জাতিক মহলে কথা বলার ব্যাপারে জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। আমরা ইতিমধ্যে এ ব্যাপারে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছি। আশা করি, অতি দ্রুত এটি বাস্তবায়ন করা হবে।

মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কের বিষয়ে মোজাম্মেল হক বলেন, প্রতিষ্ঠিত সত্যকে যারা বিতর্কিত করতে চায়, রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের বিচার হওয়া উচিত। তিনি আরও বলেন, তারা ৩০ বছর ক্ষমতায় থেকে ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধকে পেছনে ঠেলে দিয়েছেন। তারা এখন শহীদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলে শহীদের সংখ্যাকে বিতর্কিত করতে চায়। তারা কি এখন এক দুই করে শহীদের সংখ্যা গোনেন? প্রশ্ন উঠতে পারে, আওয়ামী লীগ কি করেছে? তারা ক্ষমতায় ছিল ৩০ বছর। তাদের শেকড় অনেক ভেতরে। তবে আমরা জনমত গঠন করতে পারলে কাজটি আমাদের জন্য সহজ হবে।

‘সম্প্রীতি বাংলাদেশের’ আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে এ সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন নুজহাত চৌধুরী। সেমিনারে মুক্তিযোদ্ধা (বীরপ্রতীক) ওয়াকার হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অসীম সরকার, সাবেক তথ্য ও সংস্কৃতি সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন