আমি দুর্নীতির কোনো শব্দ উচ্চারণ করি নাই: দুদক চেয়াম্যান

  20-07-2019 05:11PM

পিএনএস ডেস্ক: ‘সরল বিশ্বাসে দুর্নীতির’ এর ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, 'এ ব্যাপারে আমার উত্তর একেবারে সহজ। একটি প্রশ্নের বিপরীতে আমি যে উত্তরটি দিয়েছিলাম সেটির ভিডিও ক্লিপস আপনাদের কাছে আছে। সেখানে আমি দুর্নীতির কোনো শব্দ উচ্চারণ করি নাই। আপনারা দেখে থাকতে পারেন। দুর্নীতি কিভাবে আসলো আই হ্যাভ নো আইডিয়া (আমার কোনো ধারণা নেই)। যারা এনেছেন সেটা তাদের দায়, আমার দায় মোটেও নেই। আমি কোনো ব্যাখ্যা দিতে প্রস্তুত নই। কারণ আপনারা আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন পরিস্কার করতে। আমি পরিস্কার করেছি ওই ভিডিওতে।’

শনিবার (২০ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ আয়োজিত ‘দুর্নীতি দমনে আইনজীবী এবং বিচার বিভাগের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘অনেকেই বলেন সরকারদলীয় মন্ত্রী-এমপিদের কিছু করা হয় না। আমার জানামতে আন্ডার প্রসিকিউশন, আন্ডার ইনভেস্টিগেশন এর নামে ইনকোয়ারিতে ১০ থেকে ১৫ জন রয়েছেন সরকার দলীয়। এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের এক দলে রয়েছে ১৫ জন, আরেক দলে রয়েছে ১২ জন, আরেক দলের ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত ইন কোয়ারিতে আছে প্রায় ২৫ জন। এছাড়াও উর্দ্ধতন আমলা রয়েছে- সচিব থেকে শুরু করে জয়েন্ট সেক্রেটারি পর্যন্ত প্রায় ১৫ জন আছে। ইনভেস্টিগেশনের সময় তথ্য প্রকাশ হলে সেটি বিব্রতকর হয়ে পড়ে। সেজন্য সব তথ্য জানিয়ে দেওয়া একটু অসুবিধার বিষয়। এরপরও কিভাবে যেন সেই তথ্য পাচার হয়ে যায়। সেটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ, সেই দায় আমার।’

তিনি আরও বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন আকাশ থেকে উড়ে আসে নাই। দুর্নীতি দমন কমিশনে যারা কাজ করেন, তারা কিন্তু বিদেশ থেকে আসে নাই। আমরা সবাই এই সমাজের মানুষ। আমরা সবাই এই মাটির সন্তান, এই পরিবেশের প্রোডাক্ট। তাই, আমরা কোন মরুদ্দার নই। আমরা এই সমাজেরই অংশ। সমাজের অন্যান্য জায়গায় যা হয়, আমার এখানে তা হয় না কথাটা সঠিক নয়। ছোট গাছ উপড়ে ফেলার যতটা সহজ, বট গাছ উপড়ে ফেলা অনেক কঠিন। তাই বলে যে আমরা বট গাছ ধরছি না তা নয়।’

ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘দুর্নীতি দমন আইন যারা করেছে, তারাও যথেষ্ট চিন্তা ভাবনা করে করেছে। এখানে দুর্নীতি দমনের বিষয়টি খুবই গৌণ। এখানে বলা হয়েছে প্রতিরোধ গুলোই কার্যকর করার জন্য। সে কারণে আপনারা দেখেন আমরা বিভিন্ন জায়গায় যাই দুর্নীতি করা আগে। তবে, আমার বলতে দ্বিধা নাই এমন কোনো নথি আমি পাই না যেখানে ফলস পাওয়া যায় না। এখন আপনি যদি বলেন অ্যাকশন নিন। তাহলে আমার ৪৭৪ জন স্টাফের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নিতে হবে। তাহলে তো আর প্রতিষ্ঠিত না থাকবে না।’

সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বিবেচনা করে আপনারা সংবাদ পরিবেশন করবেন। যাতে প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি না হয়। ব্যক্তি ক্ষতি হোক অসুবিধা নাই। কারণ, প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রের, সরকারের নয়। আমাদের ব্যর্থতা আছে। সে ব্যর্থতা কাটানোর জন্য কি করা যায় সেটা আপনারা বলুন। সবার সম্মিলিত প্রয়াস ছাড়া দুর্নীতি দমন সম্ভব না।’

আলোচনা সভায় আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নিজামুল হক, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ এর প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন