পিএনএস ডেস্ক : যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া। বর্বর ইসলামী জঙ্গিদল আইএসের হামলার ক্ষতবিক্ষত। এই দেশে বেঁচে থাকাটাই যেখানে অনিশ্চিত, সেখানে স্বপ্ন দেখা তো অনেক দূরের ব্যাপার। ১৮ বছর বয়সী তরুণী নুজিন মুস্তাফার স্বপ্ন ছিল ফিজিসিস্ট বা অ্যাস্ট্রোনট হওয়ার। সেই স্বপ্ন পূরণ হওয়ার আগেই তাকে শরণার্থী হিসেবে দেশ ছাড়তে হয়েছে। জার্মানিতে থেকেই পূরণ হলো তার আরেক স্বপ্ন।
নুজিনের স্বপ্ন ছিল আর্জেন্টিনার ফুটবল জাদুকর লিওনেল মেসিকে একবার সামনে থেকে দেখা। শুধু মেসি নন; নুজিন দেখা পেলেন মেসির সতীর্থ বার্সা তারকাদেরও। নুজিনের সঙ্গে দেখা করেন স্বয়ং বার্সা প্রেসিডেন্ট জোসেফ মারিয়া বার্তামেউ। এছাড়া ইনিয়েস্তা, পিকেরা আসেন এই অসহায় মেয়েটির সঙ্গে দেখা করতে।
নুজিনের সঙ্গে দেখা করতে এসে তার নামাঙ্কিত জার্সি উপহার দিলেন বার্সা স্টার জেরার্ড পিকে।
দুই বছর আগে বোন নাসরিনের হাত ধরে হুইল চেয়ারে দেশ ছেড়েছেন সিরিয়ার এই তরুণী। সেরিব্রাল পক্ষাঘাতে আক্রান্ত নুজিন হুইল চেয়ার বসে দেশ ছেড়েছেন। ৫ হাজার ৬০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম দুই বোন চলে আসেন কলোগনিতে। উত্তর জার্মানির এই শহরে রিফিউজি হিসেবে নতুন পরিচয় পান তারা। নুজিন বার্সা ভক্ত জানার পর তাকে বার্সেলোনা বনাম সেল্টা ভিগোর ম্যাচে মেসির সঙ্গে দেখা করিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেয় স্থানীয় ক্রীড়া সংগঠকরা।
সাংবাদিকদের নুজিন বলেন, '২০০৭ থেকে আমি মেসির ভক্ত। ওর মুখটা বাচ্চাদের মতো ছিল কিন্তু এখন ওর লুকটা অনেক পরিণত। '
কলোগনি থেকে মেসির সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার সময় নুজিন তার দাদীকে বলেছিলেন, 'দূর পথে পাড়ি দেওয়ায় আমি অভ্যস্ত। '
বার্সা সভাপতি জোসেফ মারিয়া বার্তামেউকে নিজের লেখা বই উপহার দিচ্ছেন নুজিন।
বার্সেলোনার টিম বাসে উঠে নুজিন প্রায় হতবাক হয়ে যান! রিফিউজিদেরও যে স্বপ্নপূরণ হয়, তখনও বিশ্বাস হয়নি নুজিনের। বার্সার খেলা দেখতে এসে নুজিন নিজের লেখা 'ওয়ান গার্লস ইনক্রেডিবল জার্নি ফ্রম ওয়ার–টর্ন সিরিয়া ইন এ হুইলচেয়ার' নামক বইটি বার্সা প্রেসিডেন্ট বার্তামেউকে উপহার হিসেবে দেন।
মেসির সঙ্গে দেখা হওয়ার সময় নুজিনকে তার নাম লেখা একটি বার্সার জার্সিও উপহার দেন পিকে। ফুটবলের রাজপুত্রের দেখা পাওয়ার পর নুজিন ইংল্যান্ডের রানির সঙ্গেও দেখা করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। বার্সা সুপারস্টারদের সঙ্গে তার দেখা হওয়ার ক্ষণ নিয়ে দারুণ একটি ভিডিও প্রতিবেদন টুইটারে প্রকাশ করেছে কাতালান জায়ান্টরা।
En Navidad, todos tenemos un sueño.
— FC Barcelona (@FCBarcelona_es) December 14, 2017
Nosotros hemos hecho realidad el de Nujeen.
Aquí está su historia#CompartimosSueños pic.twitter.com/4I3oTXiJos
পিএনএস/জে এ /মোহন