ধর্ষণের ভিডিও করে ফের ধর্ষণের ফাঁদ, স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা

  13-10-2017 08:30PM

পিএনএস ডেস্ক : ধর্ষণের ভিডিও করে তা ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ফের ধর্ষণ করতে চাইলে ক্ষোভে নিজের ঘরে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে নবম শ্রেণি পড়ুয়া রহিমা আক্তার সোনিয়া (১৪)। সোনিয়ার পরিবারের এমন অভিযোগের চারদিন পার হলেও মামলা নেয়নি তেঁতুলিয়া থানা পুলিশ।

গত মঙ্গলবার তেঁতুলিয়া উপজেলার কালারাম জোত গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সোনিয়ার বাবা দিনমজুর পাথর শ্রমিক। ঘটনাটির সংবাদ ভিন্ন গণমাধ্যম এবং ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা এই ঘটনার প্রতিবাদে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে রবিবার মানববন্ধনের ডাক দিয়েছে।

সোনিয়ার মামা ফারুক জানান, সোনিয়ার মায়ের অসুস্থতার সুযোগ নেয় মৃত সোলায়মান আলীর ছেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ওয়ার্ডবয় রাজন (৩২)। ঘটনার দিন সোনিয়ার মা চিকিৎসার জন্য রংপুর গেলে সুযোগ বুঝে রাজন ওষুধ দেবার কথা বলে সোনিয়াকে ডেকে আনে তেঁতুলিয়ার চৌরাস্থায় তার ফার্মেসিতে।

এরপর বাড়িতে ওষুধ রয়েছে এ কথা বলে কৌশলে থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তার কোয়ার্টারে সোনিয়াকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। গোপনে সেটা মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে রাজনের বন্ধু স্থানীয় বাশির উদ্দিনের ছেলে আতিকুর রহমান (৩৪)। এরপর ভয় দেখিয়ে আতিকুরও সোনিয়াকে ধর্ষণ করে।


ফারুক আরো বলেন, গত সোমবার সোনিয়া ঘটনাটি আমাকে ও তার মা সেলিনা বেগমকে জানায়। পরে আমরা রাজন ও আতিকের সঙ্গে কথা বলি। কিন্তু পরদিন মঙ্গলবার দুপুরে কোচিং করতে যাওয়ার সময় সোনিয়াকে তারা আবার একই হুমকি দেয়। ওইদিনই বাসায় ফিরে সোনিয়া গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে।

সোনিয়ার মা সেলিনা বেগম বলেন, পুলিশ সুরতহাল রেকর্ডের সময় আমাদের বক্তব্য রেকর্ড করে। কিন্তু চার দিন পেরিয়ে গেলেও রাজন ও আতিকের নামে মামলা নিচ্ছে না পুলিশ। আমি আমার মেয়ের হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।

সোনিয়া বাবা দিন মজুর জাহেরুল ইসলাম বলেন, বুধবার রাতেই ধর্ষণ এবং আত্মহত্যায় প্ররোচণার অভিযোগে রাজন ও আতিকের নামে তেঁতুলিয়া থানায় মামলা করতে যাই। কিন্তু পুলিশ মামলা নেয়নি, এখনো কাউকে গ্রেফতারও করেনি।

তেঁতুলিয়া উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রাজিয়া সুলতানা বলেন, দুই যুবক প্রতারণার ফাঁদে ফেলে সোনিয়াকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে, এটাতো পরিষ্কার। পুলিশের ভূমিকাও রহস্যজনক। আমরা সঠিক বিচারের দাবিতে রবিবার মানববন্ধন করবো।

তেঁতুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ সরেষ চন্দ্র বলেন, আমরা যখন লাশ উদ্ধার করতে যাই তখন পরিবারের কোনো অভিযোগ ছিল না। এ ব্যাপারে একটি ইউডি মামলা করা হয়েছে। তবে অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

পিএনএস/জে এ /মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন