ধর্ষণের মামলা না নিয়ে অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীকে অন্য যুবকের সাথে বিয়ে দিলেন ওসি, অতঃপর...!

  13-06-2019 07:52PM

পিএনএস ( ময়মনসিংহ প্রতিনিধি) : হালুয়াঘাট উপজেলার কিসমত নড়াইল গ্রামের ১৩ বছর বয়সী কিশোরীর সাথে উপজেলার করুয়াপাড়া গ্রামের মৃত ইদ্রিস আলীর ছেলে ধারা বাজারের ‘তাহা কসমেটিকস’ দোকানের মালিক দুই সন্তানের জনক আলাল মিয়ার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এর পর বিয়ের প্রলোভনে আলাল কিশোরিকে তার দোকানে প্রায় সময়ই ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে কিশোরী ধর্ষক আলালকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। বিয়ে না করায়
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট থানায় কিশোরী অভিযোগ দেন। ধর্ষক আলাল কিশোরী বিয়ে না করে উল্ঠো থানার ওসি ও ইউপি সদস্যা তাছলিমা সহযোগিতায় হাফেজ ইলিয়াস নামের এক যুবকের সাথে ৫ লক্ষ টাকা কাবিন বিয়ে দেয়।

এ বিষয়ে গত ১৭ এপ্রিল ময়মনসিংহ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ধর্ষক ও তার সহযোগি এক ইউপি সদস্যার নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত নামা তিন জনসহ পাঁচ জনের নামে মামলা (নং-৫১/২০১৯)দায়ের করেন কিশোরি।

এ মামলার প্রেক্ষিতে ময়মনসিংহ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মি.এস,এম এরশাদুল আলম মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ময়মনসিংহ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)কে নির্দেশ দেন।

কিন্তু বিয়ের প্রায় দুইমাস পর গত ১৯ এপ্রিল ওই কিশোরি কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়ায় আদালত ওই কিশোরির নবজাতক কন্যা, হাফেজ ইলিয়াস ও ধর্ষক আলাল মিয়াকে ঢাকায় নিয়ে ডিএনএ পরীক্ষা করার নির্দেশ প্রদান করলে গত ১২ জুন বুধবার ওই কিশোরির সন্তানসহ ৩ জনের ডিএনএ পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয় বলে নিশ্চিত করেন ময়মনসিংহ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুবক্কর সিদ্দিক।

এ ঘটনার পর প্রকৃত ধর্ষককে আঁড়াল করে অপর ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে দেওয়ায়, ভোক্তভোগী কিশোরি সন্তানের পিতৃ পরিচয় ও স্বামীর দাবী সেই সাথে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবীতে পাঁচজনকে বিবাদী করে আদালতে মামলা দায়ের করেন। একইসাথে থানায় গিয়ে ধর্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করতে ব্যর্থ হয়ে আদালতে মামলা করতে বিলম্ব হয় বলে মামলায় উল্লেখ করেন বলে জানান ওই আইনজীবি।

ভোক্তভোগী ওই কিশোরি এ ব্যাপারে বলেন, ‘তার কোন কথা না শুনেই থানার ওসি ও ইউপি সদস্যা তাছলিমা, হাফেজ ইলিয়াস এর সাথে থানায় বসে তার বিয়ে দেয়। প্রকৃত পক্ষে তার নবজাতক সন্তানটি হাফেজ ইলিয়াসের নয়। নবজাতকটি কসমেটিকস দোকানের মালিক দুই সন্তানের জনক আলাল মিয়ার। এ ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির ও সন্তানের সঠিক পিতৃ-পরিচয়ের জন্য আদালতে মামলা দায়ের করেছেন বলে জানান তিনি।’

এ বিষয়ে ইলিয়াস বলেন, ‘তিনি কোনো ঘটনার সাথে জড়িত না। পুলিশ তাকে আটক করে থানায় আনার পর সদ্য বিদায়ী ওসি জাহাঙ্গীর আলম তালুকদার তাকে বিভিন্ন মামলার ভয় দেখিয়ে ৫ লক্ষ টাকা কাবিন মূলে অন্তঃসত্ত্বা কিশোরিকে তার সাথে বিয়ে দেয়। তিনি এ ঘটনায় মানহানিসহ অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ্য হয়েছেন। তিনি ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি দাবী করেন।’

এদিকে মামলার মূল বিবাদী আলাল মিয়া বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে উদ্যেশ্য প্রণোদিত ভাবে মিথ্যা রটনা চালানো হচ্ছে। এ ঘটনা সম্পর্কে তিনি অবগত নন বলে জানান তিনি।’

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন