সরকার ব্যাংক থেকে কম ঋণ নিচ্ছে

  14-07-2017 09:21AM

পিএনএস ডেস্ক: সদ্যসমাপ্ত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৯৪ হাজার ৫২ কোটি টাকার ব্যাংক ঋণ নিয়েছে সরকার। এর আগের ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এই ঋণ ছিল এক লাখ ৮ হাজার ৬৪৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে সরকারের ব্যাংক ঋণ ১৪ হাজার ৫৯৬ কোটি টাকা কমেছে। গত কয়েক বছর সরকারের ব্যাংক ঋণে এই নিম্নমুখী ধারা দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

অর্থনীতিবিদদের মতে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট পাসের দিন সংসদে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী। তাই ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ কমতে পারে। তবে সদ্যসমাপ্ত অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে যে পরিমাণ ঋণ হয়েছে- এতে সুদ খাতে সরকারের ব্যয় বাড়বে। প্রসঙ্গত, চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি মেটাতে ২৮ হাজার ২০৩ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে জানানো হয়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সরকারের মোট ব্যাংক ঋণের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নেয়া হয়েছে ১৫ হাজার ৯৬২ কোটি টাকা। গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ ছিল ২১ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নেয়া ঋণের পরিমাণ পাঁচ হাজার ৯১২ কোটি টাকা কমেছে।

সদ্যসমাপ্ত অর্থবছরে অন্যান্য তফসিলি ব্যাংক থেকে সরকার ঋণ নিয়েছে ৭৮ হাজার ৯০ কোটি টাকা। এর আগের ২০১৫-১৬ অর্থবছরে তফসিলি ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণের পরিমাণ ছিল ৮৬ হাজার ৭৭৪ কোটি টাকা। সে হিসাবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে সরকারের ঋণের পরিমাণ কমেছে আট হাজার ৬৮৪ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, আগে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ব্যাংক ঋণ নিত সরকার। গত কয়েক বছরে সঞ্চয়পত্রে সাধারণ মানুষের বিনিয়োগ বাড়ার ফলে সরকারের ব্যাংক ঋণ কমেছে। বর্তমানে সঞ্চয়পত্র থেকে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি অর্থ পাচ্ছে সরকার।

জাতীয় সঞ্চয়পত্র অধিপ্তরের প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে রেকর্ড হয়েছে। সরকারের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রাকেও অতিক্রম করেছে সঞ্চয়পত্র বিক্রি। গত অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে সঞ্চয়পত্রে সাধারণ জনগণের বিনিয়োগ ৪৬ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা। এর আগের ২০১৫-১৬ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের আয় ছিল ৩৩ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা। বছরের ব্যবধানে সঞ্চয়পত্র বিক্রি ১২ হাজার ৯৮০ কোটি টাকার বেশি বেড়েছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ব্যাংক ও অন্যান্য তফসিলি ব্যাংক থেকে সরকার ঋণ নেয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বাইরে সরকারের চাহিদা মাফিক ঋণের ৬০ শতাংশ পিডি (প্রাইমারি ডিলার) ব্যাংক পূরণ করার পর বাকি ৪০ শতাংশ নন-পিডি ব্যাংকগুলোকে ঋণ দিতে হয়।



পিএনএস/আলআমীন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন