পিএনএস ডেস্ক: মায়ানমারের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাখাইনে শত শত সেনা পাঠিয়েছে দেশটির সরকার। রোহিঙ্গা মুসলিম অধ্যুষিত রাজ্যটিতে সাম্প্রতিক কিছু হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষাপটে এসব সেনা পাঠানো হয়। শুক্রবার সামরিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
নতুন সেনা পাঠানোর ফলে গোলযোগপূর্ণ অঞ্চলটি আরো সহিংস ও অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে।
গত অক্টোবরে কথিত জঙ্গি হামলায় ৯ পুলিশ নিহত হওয়ার পর পরিচালিত সামরিক অভিযানে ব্যাপক হত্যা, ধর্ষণ ও জ্বালাওপোড়াওয়ের অভিযোগ পাওয়া যায়। সরকারি সেনারা রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নৃশংস তাণ্ডব চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে।
রাখাইনে দু’টি সামরিক সূত্র জানায়, গত সপ্তাহে মাঙডু শহরতলীর কাছে পার্বত্য এলাকায় সাত বৌদ্ধকে পিটিয়ে হত্যা করার পর সেখানকার নিরাপত্তা জোরদার করতে আরো সেনা পাঠিয়েছে সেনাবাহিনী।
মঙ্গলবার বুথিদাঙ ও মাঙডুসহ বাংলাদেশ সীমান্তের নগরগুলোতে প্রায় ৫০০ সেনা পাঠানো হয়েছে।
রাখাইনের পুলিশপ্রধান কর্নেল সিন লউন রয়টার্সকে বলেন, নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় আমরা নিরাপত্তা অভিযান বাড়াতে চাচ্ছি। তিনি বলেন, বিদ্রোহীরা কিছু মুসলিম ও বৌদ্ধকে হত্যা করেছে।
সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র এবং মায়ানমারের প্রধান নেত্রী অং সান সু চির মুখপাত্র অবশ্য তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেননি।
গত অক্টোবরের অভিযানে ব্যাপক হত্যা, ধর্ষণের ঘটনা ঘটায় সামরিক শক্তি বৃদ্ধি ওই এলাকায় নতুন করে সহিংসতার আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে।
বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়া প্রায় ৭৫ হাজার রোহিঙ্গার কয়েকজনের সাক্ষাৎকার গ্রহণের ভিত্তিতে জাতিসঙ্ঘ তদন্তকারীরা বলছেন, মায়ানমারের সেনারা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করে থাকতে পারেন।
বিষয়টি তদন্তের জন্য জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার সংস্থা কমিশন গ্রহণ করলেও মায়ানমার সরকার তা প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
গত বছর ব্যাপক অভিযান সত্ত্বেও সরকার অভিযোগ করে আসছে, বিদ্রোহীরা এখনো পার্বত্য এলাকাগুলোতে প্রশিক্ষণ ক্যাম্প পরিচালনা করছে। তারা মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে থাকা সরকারের চরদের হত্যা করছে বলেও মায়ানমার সরকার অভিযোগ করছে।
সাত বৌদ্ধকে হত্যার জন্য সরকার ‘চরমপন্থীদের’ অভিযুক্ত করেছে।
রাখাইনে প্রায় ১১ লাখ মুসলিম রোহিঙ্গা বাস করে। মায়ানমার সরকার তাদেরকে নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে না। ২০১২ সালের সহিংসতার পর থেকে প্রায় এক লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গা বিভিন্ন ক্যাম্পে বাস করছে।
পিএনএস/আনোয়ার
রাখাইনে শত শত সেনা পাঠিয়েছে মায়ানমার
12-08-2017 10:18AM