রেলের জায়গায় বাণিজ্য করছেন ক্ষমতাসীনরা

  13-09-2014 10:20AM

পিএনএস : রাজধানীর কারওয়ান বাজার মাছের আড়তের পাশে রেলক্রসিং থেকে তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ড পর্যন্ত রেললাইনের দুই পাশে প্রায় এক কিলোমিটারজুড়ে বস্তি, মাছের বাজার ও দোকানপাট গড়ে তুলেছে ছয় সদস্যের একটি চক্র।
দখল করা জায়গাগুলো রেলওয়ের; আর দখলবাজ চক্রটি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। রেললাইনে গড়ে ওঠা বস্তির বাসিন্দা, দোকানপাটের মালিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
অন্য দিনের মতো গত বৃহস্পতিবার সকালে নিয়ম ভেঙেই রেললাইনের জমি নিয়ন্ত্রণকারীরা এই লাইনের ওপর মাছের বাজার বসিয়েছিল। প্রচণ্ড ভিড়, হইচই ও হট্টগোলের মধ্যে দুই পাশের দুটি লাইন দিয়ে আসা ক্রেতা-বিক্রেতারা ট্রেনের মধ্যবর্তী স্থানে আটকা পড়ে এবং ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা লেগে চারজন প্রাণ হারান। অবশ্য মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনার পর গতকাল রেললাইনের পাশের দোকানপাট ও কিছু বস্তি উচ্ছেদ করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। রেলওয়ের নিয়ম অনুযায়ী, রেললাইনের দুই ধারে ১০ ফুটের মধ্যে সাধারণের জমায়েত নিষিদ্ধ।
সরেজমিনে দেখা যায়, কারওয়ান বাজার মাছের আড়তের পূর্ব পাশের রেলক্রসিং থেকে তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ড-সংলগ্ন রেলক্রসিং পর্যন্ত দুই ধারে হাজার হাজার ঝুপড়ি ঘর। বস্তির বাসিন্দারা ঝুঁকিপূর্ণ রেললাইনে হাঁটাহাঁটি করছে। এসব ঝুপড়ির মধ্যে টং দোকান, খাবার হোটেল ও রেস্তোরাঁ এবং আওয়ামী লীগের ক্লাব রয়েছে।
সরেজমিনে অনুসন্ধান করে এবং বস্তিবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মাছের আড়ত, গাড়ি মেরামতের দোকান, রেস্তোরাঁসহ ৪০টি দোকানপাট গড়ে তুলেছেন পরিবহননেতা মকবুল আহমেদ ও তাঁর সহযোগীরা। মকবুল আহমেদ ছাড়াও রেললাইনের দুই পাশে জমি দখল করে বস্তি, দোকানপাট, খাবার হোটেল ও রেস্তোরাঁ গড়ে তুলেছেন সিরাজুল ইসলাম ওরফে সিরাজ কমান্ডার, মজিবর রহমান, দেলু সরদার, মাহমুদা খাতুন ও জলিল মিস্ত্রি। এঁরা সবাই স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।
এ ছাড়া রেললাইনের ওপর মাছের বাজার, বস্তি ও দোকানপাট থেকে তাঁদের হয়ে টাকা তুলত টিটু, মিন্টু, মনির, সেন্টু, কালু, মোস্তফা, ফারুক, রাজ্জাক, জসিমসহ অন্তত ৫০ সহযোগী। রেললাইনের বস্তি এলাকায় সিরাজ কমান্ডার নিজেকে রেল কমিটির লোক আবার কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির নেতা পরিচয় দেন। উচ্ছেদ হওয়া বিল্লাল অটোমোবাইলের মালিক বিল্লাল হোসেন বলেন, কারওয়ান বাজার মাছের আড়ত ঘেঁষে রেলের জমিতে মকবুল আহমেদ ৪০টি দোকানঘর তুলেছেন। প্রতিদিন একেকটি দোকান থেকে ৫০০ টাকা ভাড়া নিতেন তিনি। অবশ্য তিনি সিরাজ কমান্ডারের মাধ্যমে এই টাকা তুলতেন। দোকানপাট উচ্ছেদের কথা শুনে গত বৃহস্পতিবার রাতে গ্যারেজ থেকে তিনি মালামাল সরিয়ে নিতে চাইলে সিরাজ কমান্ডার তাঁকে বলেন, ‘আমি ওপরে আলাপ করে এসেছি। মালামাল সরাতে হবে না। উচ্ছেদ হবে না।’
রেললাইনে রেল কমিটির অফিস পরিচয়ে একটি দোকানে খোঁজ নিয়ে সিরাজ কমান্ডারের খোঁজ মেলেনি। পরে একাধিককার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। সৌজন্যে প্রথম আলো

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন