টিম ম্যানেজমেন্টের এ কেমন সিদ্ধান্ত! অবাক ক্রিকেট বিশ্ব

  12-10-2017 03:47PM

পিএনএস ডেস্ক : কথাটা শুনে চটেই গেলেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। ম্যানেজার মিনহাজুল আবেদীন যা বলেছেন তা নাকি ভুল। ও রকম কোনো কথাই তিনি বলেননি। কিন্তু কথাটা কী?

ব্যাপারটা বুঝতে একটু পেছন ফিরে যেতে হবে। গত ৯ অক্টোবর বাংলাদেশ দলের ঐচ্ছিক অনুশীলনের দিন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন বাংলাদেশ থেকে সিরিজ কাভার করতে আসা সাংবাদিকেরা। কোচের সঙ্গে কথা বলে ম্যানেজার এসে জানান, সেদিন নয়, কোচ কথা বলবেন ১১ অক্টোবর। অর্থাৎ প্রস্তুতি ম্যাচের আগের দিন। কাল সকালে মাঠে আসার পর ম্যানেজারকে সেটা মনে করিয়ে দিলে জানা গেল নতুন তথ্য। ম্যানেজারের বক্তব্য, টিম ম্যানেজমেন্ট নাকি সিদ্ধান্ত নিয়েছে এখন থেকে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন ছাড়া দলের কেউ সংবাদমাধ্যমে কথা বলবে না। না কোনো খেলোয়াড়, না কোচিং স্টাফ বা টিম ম্যানেজমেন্টের কোনো সদস্য।

কাল অনুশীলন শেষে হাথুরুসিংহের কাছে বিষয়টি পরিষ্কার হতে চেয়েছিলেন এই প্রতিবেদক। যেকোনো ম্যাচের আগেই কোচ বা অধিনায়কের সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলাটা ক্রিকেটের অলিখিত রীতি। ম্যাচ নিয়ে দলের ভাবনা, লক্ষ্য এসব জানাই কথা বলার উদ্দেশ্য থাকে। যেমন কাল সংবাদ সম্মেলন করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকা আমন্ত্রিত একাদশের অধিনায়ক জাঁ পল ডুমিনি। তাদের বিপক্ষেই আজকের প্রস্তুতি ম্যাচের আগে তাহলে বাংলাদেশ দলের কেউ কথা বলবেন না কেন? তা ছাড়া কোচ নিজেই তো বলেছিলেন প্রস্তুতি ম্যাচের আগের দিন কথা বলবেন! সেই সিদ্ধান্ত বদলে হঠাৎ টিম ম্যানেজমেন্ট কাউকেই কথা বলতে না দেওয়ার এমন কঠোর সিদ্ধান্ত কেন নিল?

এই প্রশ্নের জবাবেই হাথুরুসিংহের ওই চোটপাট। বাংলাদেশ থেকে আসা অন্য সাংবাদিকদের সামনে এই প্রতিবেদককে কোচ স্পষ্ট বলে দিলেন, সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা না বলার সিদ্ধান্ত টিম ম্যানেজমেন্ট বা তাঁর নয়। এ ব্যাপারে ভালো বলতে পারবেন দলের ম্যানেজার। ম্যানেজারই ওই কথা বলেছেন বলার পর কোচ তো আরও রাগান্বিত। খামোখাই নাকি তাঁর সময় নষ্ট করা হচ্ছে বলে হাঁটা দিলেন গাড়ির দিকে।

কোচ-ম্যানেজারের বল ঠেলাঠেলিতে প্রস্তুতি ম্যাচের আগে আক্ষরিক অর্থেই সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলল না বাংলাদেশ দলের কেউ। ও হ্যাঁ, ম্যানেজার মিনহাজুল আবেদীন শেষ পর্যন্ত এক-দুই লাইন কথা বলেছেন। যাতে একটা পুরোনো তথ্যই শুধু নতুন করে জানা গেছে। তামিম ইকবাল প্রস্তুতি ম্যাচে খেলবেন না। কাল কিছুক্ষণ নেটে ব্যাটিং করেছেন। এরপর মাঠে এসে ফিজিও, ট্রেনারকে দুই পাশে রেখে মিনিট দুয়েক জগিংয়ের মতো করে উঠে গেছেন ড্রেসিংরুমে। হোটেলে ফেরার আগে তামিম বলেছেন, ব্যাটিং করতে গেলে একটু ব্যথা এখনো হচ্ছে।

বাংলাদেশ দলের অনুশীলনে তামিমের মিনিট দুয়েক জগিংয়ের দৃশ্যটাই কেবল স্বচক্ষে দেখার সৌভাগ্য হলো সাংবাদিকদের। এর আগে প্রায় চার ঘণ্টা দীর্ঘ অনুশীলনের পুরোটাই কোচ করিয়েছেন ইনডোরের মাঠে লোহার গেট লাগিয়ে। সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষেধ ছিল সেখানে। হাথুরুসিংহের জন্য রুদ্ধদ্বার অনুশীলন নতুন নয় বলে বাংলাদেশি সাংবাদিকেরা সেটি মেনে নেন। তবে বাংলাদেশ দলের কোচের অতিসতর্কতাকে দক্ষিণ আফ্রিকার সাংবাদিকদের কাছে মনে হয়েছে ‘বাড়াবাড়ি’। তাঁদের একজনের মন্তব্য, ‘টেস্টে দল খারাপ খেলেছে, সেটা তো আর সাংবাদিকদের দোষ নয়। তাহলে এর মানে কী?’

ইনডোর মাঠের গেটের ফাঁক দিয়ে যেটুকু দেখা গেছে তাতে মনে হলো মূল অনুশীলনের পর মুশফিকুর রহিম কিছুক্ষণ পুল শটের অনুশীলন করেছেন। অপর প্রান্ত থেকে কে বল করছিল, নাকি কেউ বল ছুড়ে মেরেছে তা অবশ্য দেখা যায়নি গেট লাগোয়া একটি ভবনের কারণে। প্রায় দুবছর পর ওয়ানডে দলের সঙ্গে অনুশীলন করেছেন মুমিনুল হকও। আসা-যাওয়ার পথে খেলোয়াড়দের সঙ্গে টুকটাক কথা বলে অনুশীলন সম্পর্কে আরেকটা ধারণাও পাওয়া গেছে। কালকের অনুশীলনটা নাকি ছিল খুবই কঠোর। বোলাররা একেকজন ১০ ওভার করে বল করেছেন নেটে। অনেকে আবার এর বাইরেও স্পট বোলিং করেছেন। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাকে মনে হলো এই অনুশীলন নিয়ে খুবই সন্তুষ্ট। অফ সিজনের ক্যাম্পেও ঠিক এ রকম অনুশীলনই হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।

পিএনএস/জে এ /মোহন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন