মিয়ানমারের সাইবার দুনিয়ায় বাংলাদেশসহ চার দেশের হ্যাকারদের হানা

  07-09-2017 01:09AM

পিএনএস ডেস্ক: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর হামলার প্রতিবাদে দেশটির সরকারি ওয়েব সাইটসহ বিভিন্ন ওয়েবসাইটে একের পর এক হামলা চালাচ্ছে বিভিন্ন দেশের হ্যাকারগ্রুপগুলো।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের বরাতে জানা যায়, এসব সাইট হ্যাকে বাংলাদেশ, তুরস্ক, পাকিস্তান এবং ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন হ্যাকার গ্রুপ জড়িত। মিয়ানমারে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর দেশটির আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নির্যাতনের প্রতিবাদে এসব হামলা চালানো হচ্ছে বলে দাবি করেছে এসব হ্যাকারগ্রুপ।

কেইমন নামে মিয়ানমারের একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ৩১ আগস্ট রাত থেকে দেশটির সাইবার স্পেসে হামলা চালানো শুরু করে তুরস্ক ভিত্তিক হ্যাকার সংগঠন আয়েলদিয টিম। এই হ্যাকারগ্রুপটি ১ সেপ্টেম্বর দেশটির ২২টি সরকারি ওয়েবসাইটে হামলা চালায়। এরই প্রতিবাদে তুরস্কের কয়েকটি ওয়েবসাইটে হানা দেয় মিয়ানমারের ইউজি নামে একটি হ্যাকার সংগঠন।
এদিকে তুরস্কের হ্যাকারগ্রুপের সাইবার হামলা চালানো অবস্থায় ইন্দোনেশিয়ার হ্যাকারদের সঙ্গে একজোট হয়ে মিয়ানমারের বিভিন্ন সাইটে হামলা চালায় বাংলাদেশ ভিত্তিক হ্যাকার সংগঠন সাইবার ৭১।

এসময় তারা মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট, তথ্য মন্ত্রণালয়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং প্রভাবশালী কোম্পানি এম কে গ্রুপের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট হ্যাক করে। সর্বশেষ এই হ্যাকার গ্রুপটি মিয়ানমারের অর্থনৈতিক বিভাগের একটি ওয়েবসাইট হ্যাকের দাবি জানিয়েছে।

এ ছাড়া পাকিস্তানের এক বা একাধিক হ্যাকার সংগঠনও মিয়ানমারের সাইবার স্পেসে হামলা চালিয়েছিল বলেও জানানো হয় সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে।

উল্লেখ্য,গত ২৫ আগস্ট রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি পুলিশ চেক পোস্টে হামলা চালায় দেশটির জঙ্গি সংগঠন আরাকান রহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি যা সংক্ষেপে এএসআরএ বাহিনী নামে পরিচিত। এই হামলায় বেশ কয়েকজন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিহত হয়। তবে পরবর্তীতে দেখা যায়, এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন শতাধিকেরও বেশি লোকজন। এদের মধ্যে স্থানীয় সংখ্যালঘুদের সংখ্যাই বেশি।

পরবর্তীতে ‘সন্ত্রাসী’ দমনের নামে রাখাইন রাজ্যে বিপুল পরিমাণে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করে দেশটির সরকার। এরপরই ওইসব এলাকাগুলোতে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে।

দেশটির আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, তারা সন্ত্রাস দমন করছেন। তবে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের দাবি, দেশটির সরকার তাদের ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে। নির্বিচারে মেরে ফেলা হচ্ছে তাদের।
এদিকে নির্বিচারে মানুষ হত্যায় কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় বিশ্ব নেতাদের সমালোচনার মুখে পড়েছেন মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী নামে পরিচিত অং সান সূচি।