বরিশালে ধর্ষিতা কিশোরী নিজ ঘরে শিকলবন্দি

  14-09-2019 05:21PM

পিএনএস, বরিশাল প্রতিনিধি : জ্বীনে আচর করেছে আখ্যা দিয়ে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার ওটরা ইউনিয়নের কেশবকাঠী গ্রামের ১৪ বছর বয়সী ধর্ষিতা এক কিশোরীকে শিকলবন্দি করে রেখেছে পরিবারের সদস্যরা। শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নিজ বাড়িতে শিকলবন্দি অবস্থায় ওই কিশোরী স্থানীয় সংবাদকর্মীদের জানায়, তাকে জ্বীনে আসর করেছে বলে প্রায়ই তার বাবা-মা তাকে ঘরে শিকল বন্দি করে রাখতো। গত মঙ্গলবার বিকেলে পরিবারের অজান্তে সে (কিশোরী) শিকলের তালা খুলে বাড়ি থেকে বের হয়। পরে ওইদিন সন্ধ্যায় জামবাড়ী-মশাং সড়কের নির্জনস্থানে নিয়ে তাকে জোরপূর্বক এক ভ্যান চালক ধর্ষন করে।

স্থানীয় বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, মঙ্গলবার রাতে কেশবকাঠী এলাকার বাসিন্দা গিয়াস মৃধা ও কবির মৃধা জামবাড়ী-মশাং আঞ্চলিক সড়কের একটি নির্জনস্থানে একই এলাকার রবি শাহারুর পুত্র ভ্যান চালক সঞ্জিত শাহারু এবং ওই কিশোরীকে একত্রে দেখে তাকে খবর দেয়। পরে তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই কিশোরীসহ ভ্যান চালক সঞ্জিতকে উদ্ধার করে হাবিবপুর কলেজ মাঠে নিয়ে আসেন। পরবর্তীতে উভয়কে থানা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য গিয়াস ও কবিরকে অনুরোধ করেন। এরইমধ্যে স্থানীয় ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলামের পুত্র রাসেল হোসেন ঘটনাস্থলে এসে সঞ্জিতকে তার পরিবারের হাতে তুলে দেয় এবং ওই কিশোরীকে গিয়াস ও কবির মৃধার জিম্মায় রাখে। তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় বুধবার রাতে হাবিবপুর বাজারে বসে ওই কিশোরীর পরিবারকে না ডেকে কিংবা ওই কিশোরীর কোন বক্তব্য না শুনেই স্থানীয় ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম, শাজাহান হাওলাদার, গিয়াস মৃধা, কবির মৃধা ও জুয়েল মৃধা কথিত সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে সঞ্জিতকে তিন হাজার টাকা জরিমানা করে।

ধর্ষিতা ওই কিশোরীর পিতা জানান, ‘কথিত সালিশ বৈঠকে জরিমানা করার কথা তিনি শুনেছেন। তবে সালিশ বৈঠকে তাদেরকে ডাকা হয়নি। তিনি আরও জানান, তার কন্যার উপর মাঝে মধ্যেই বদ জ্বীন আসর করে। যার ফলে প্রায়ই তাকে শিকলবন্দি করে রাখা হয়।’ সালিশকারী কবির মৃধা ও জুয়েল মৃধা জানান, তারা কেউই সালিশিতে ছিলেন না বরং মোস্তাফিজুর নিজেই সালিশ-মিমাংসায় ছিলেন। উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিশির কুমার পাল জানান, এ ঘটনায় এখনো কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পিএনএস/মো. শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন