সিলেটে পিকআপ-লেগুনার সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৬

  18-03-2024 07:29PM

পিএনএস ডেস্ক: সিলেটে একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে পিকআপের সঙ্গে লেগুনার মুখোমুখি সংঘর্ষে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার (১৮ মার্চ) বিকেল ৩টার দিকে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ছয়জনে।

এর আগে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের দরবস্ত এলাকার সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলে তিনজন ও হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও তিনজনের মৃত্যু হয়।

নিহতরা হলেন উপজেলার চিকনাগুল ইউনিয়নের পশ্চিম ঠাকুরের মাটি গ্রামের সন্তোষ পাত্রের স্ত্রী মঙ্গলী পাত্র (৫০), সন্তোষ পাত্রের পুত্রবধূ সুচিতা পাত্র (৩০), সুচিতা পাত্রের শিশু মেয়ে বিজলী (৬ মাস), সন্তোষ পাত্রের বোন নিপেন্দ্র পাত্রের স্ত্রী শ্যামলা পাত্র (৫৫), একই বাড়ির নন্দ পাত্রের স্ত্রী সাবিত্রি পাত্র (৩২) ও সুবেন্দ্র পাত্রের মেয়ে ঋতু পাত্র (৬)।

নিহতের স্বজনরা জানান, সন্তোষ পাত্রের মেয়ে অনামিকা পাত্রের জলপান (বউ ভাত) অনুষ্ঠানে লেগুনা দিয়ে জাফলং মোকামপঞ্জি এলাকায় যাচ্ছিলেন স্বজনরা। দরবস্ত পল্লী বিদ্যুতের সামনে পৌঁছামাত্র বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পিকআপের সঙ্গে লেগুনার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে মঙ্গলী পাত্র, সুচিতা পাত্র ও সাবিত্রি পাত্রের মৃত্যু হয়। সুচিতা পাত্রের ছয়মাসের শিশু সন্তান বিজলীকে গুরুতর আহত অবস্থায় জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর শ্যামলা পাত্র ও ঋতু পাত্রের মৃত্যু হয়।

দুর্ঘটনায় স্ত্রী, পুত্রবধূ ও নাতনিকে হারিয়ে শোকে কাতর সন্তোষ পাত্র জাগো নিউজকে বলেন, ‘১৫ দিন আগে ছোট মেয়ে অনামিকাকে জাফলংয়ের মোকামপঞ্জি এলাকায় বিয়ে দেওয়া হয়। আজ মেয়ের বাড়িতে জলপান অনুষ্ঠান ছিল। তিন ছেলে, ছেলের বউ ও আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে লেগুনায় করে মেয়ের বাড়িতে যাচ্ছিলাম। তামাবিল সড়কের দরবস্ত পল্লী বিদ্যুতের সামনে পৌঁছামাত্র দুর্ঘটনা ঘটে। এতে সবকিছু তছনছ হয়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ের অনুষ্ঠানের কারণে সবাইকে নিয়ে যাচ্ছিলাম। এতো আনন্দ মুহূর্তেই শেষ হয়ে গেছে। এ শোক আমি কেমনে সইবো! আমার মৃত্যু হয়ে যদি ওরা বাঁচতো তাহলে এতো কষ্ট সহ্য করতে হতো না।’

নিহতদের স্বজন নির্মল পাত্র বলেন, ‘সবাই প্রফুল্ল মন নিয়ে বোনের বাড়ি যাচ্ছিলাম। নিমিষেই সব আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে। একসঙ্গে এতো মৃত্যু আমাদের গোত্রকে শেষ করে দিয়েছে।’

এদিকে, দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনায় সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম, তামাবিল হাইওয়ে পুলিশের একটি টিম, জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম লিয়াকত আলীসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। পরে প্রশাসনের ও স্থানীয় নেতাদের আশ্বাসে জনতা অবরোধ প্রত্যাহার করলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

জৈন্তাপুর মডেল থানার ওসি তাজুল ইসলাম বলেন, স্থানীয়রা সড়ক অবরোধ করলে তাদেরকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়।

এসএস

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন