স্বামীকে খুঁজতে এসে নির্মম নির্যাতন নববধুর

  15-03-2017 09:51PM

পিএনএস, জেলা প্রতিনিধি (পটুয়াখালী) : গাজীপুর থেকে স্বামীকে খুঁজতে পটুয়াখালির বাউফলে এসে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ফাহিমা আক্তার হেপি (২০) নামের এক নববধূ। খবর পেয়ে পুলিশ আজ বুধবার (১৫মার্চ) ১টার দিকে ওই নববধূকে উদ্ধার করে। এবং ঘটনার সাথে জড়িত লিটন (৩৫) নামের এক জনকে আটক করেছে পুলিশ।

নির্যাতিত নববধূ হেপি জানান- তার বাড়ি ময়মনসিংহ জেলা শহরের সদরের কালি বাড়ি রোডের চর এলাকায়। তার বাবার নাম জামাল উদ্দিন।

গত ৬ মাস ধরে তিনি গাজিপুর এএসআর নামের একটি গার্মেন্টেসে ফিনিসিং অপারেটর হিসাবে চাকুরি করছেন।
একই গার্মেন্টেসে প্রশাসন বিভাগের সুপার ভাইজার হিসাবে চাকুরি করতেন পটুয়াখালী সদর উপজেলার কমলাপুর ইউনিয়নের ভায়লা গ্রামের আবদুল হক সিকদারের ছেলে আল-আমিন সিকদার (২৩)। একে অপরের সাথে পরিচয়ের সুবাধে এক পর্যায়ে তাঁরা হৃদয়ঘটি সম্পর্কে জড়িয়ে পরেন। ৫ মাস ধরে চলে তাদের প্রেম।

এরপর গত ২ মার্চ তারা বিয়ে করে মাওনা চৌ-রাস্তায় সেলিম মিয়ার বাড়িতে একটি রুম ভাড়া করে বসবাস শুরু করেন। গত ৫ মার্চ তার স্বামী আল-আমিন বিশেষ প্রয়োজনে তার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে বাড়ি চলে আসেন।’
ফলে ঘটনার আগের দিন পর্যন্ত স্বামীর সাথে তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকে। একপর্যায়ে স্বামীর খোঁজে কাবিনের কাগজে উল্লেখিত ঠিকানা মোতাবেক সোমবার গাজীপুর থেকে ঢাকা আসেন। এবং ওই দিন সন্ধ্যায় সদরঘাট থেকে একটি দোতালা লঞ্চযোগে উঠে মঙ্গলবার সকালে পটুয়াখালী এসে নামেন।

এরপর এক আইনজীবীর মাধ্যমে তার স্বামীর ভগ্নিপতি লিটনের মোবাইল নম্বর পেয়ে যোগাযোগ করেন। সন্ধ্যার দিকে তার স্বামী ও স্বামীর ভগ্নিপতি এসে তাকে ভায়লা গ্রামের বাড়ির কথা বলে বাউফলের আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের কাশিপুর বাধ এলাকায় ভগ্নিপতির বাসায় নিয়ে যায়।’’

একপর্যায়ে স্বামী ও ভগ্নিপতি লিটন ও তার স্ত্রী স্বেচ্ছায় তালক নেয়ার জন্য তাঁর ওপর চাপ প্রয়োগ ও ভয়ভীতি দেখায়। এতে তিনি রাজী না হলে তাকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। মুখের মধ্যে চামচ ডুকিয়ে দেয়া হয়। এতে তার ঠোঁট কেটে যায়।’

এ ভাবে দফায় দফায় তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়। এতেও তিনি তালাক দিতে রাজি না হওয়ায় সবাই মিলে গামছা দিয়ে হাত-পা ও মুখ বেধে তাকে হত্যার চেষ্টা করেন। এসময় তিনি জীবন বাঁচাতে তাদের প্রস্তাবে রাজি হন।

পরের দিন বুধবার সকালে প্রকৃতির ডাকে সাঁড়া দেয়ার কথা বলে তিনি বাসার সামনে রাস্তার দিকে দৌড় দেন। এসময় স্বামী আল-আমিন ও তার ভগ্নিপতি তাকে ধরার জন্য পিছু নেয়।

রাস্তায় এসে তিনি ডাক চিৎকার করলে স্থানীয় লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে এবং ভগ্নিপতি লিটনকে হাতে নাতে আটক করে। কিন্তু স্বামী আল-আমিন পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।

এ খবর পেয়ে ঘটনার দিন দুপুরে বাউফল থানার এসআই সাইদুর রহমান ও এসআই টিপু লাল ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্যাতিত হেপিকে উদ্ধার করেন এবং লিটনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আযম খান ফারুকী সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে হ্যাপিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তার বাবাকে খবর দেওয়া হয়েছে। তার আসার জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় লিটন নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। এবিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন