মা ও নবজাতকের ঘাতক ডাক্তারকে খুঁজে পাচ্ছেনা পুলিশ

  24-11-2017 07:15PM

পিএনএস, কুমিল্লা প্রতিনিধি : ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার কারণে কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মাধবপুর রয়েল হসপিটাল এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের কর্তব্যরত অভিযুক্ত ডাক্তার এম শরীফ আহাম্মদকে পুলিশ খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ। নিহত প্রসুতির মা মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে গত বৃহস্পতিবার ওই ডাক্তার ও হাসপাতালের মালিক মারুফ আহাম্মদসহ অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

এদিকে এ ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছে ডাঃ শরীফ আহাম্মদ। বিভিন্নস্থানে অভিযান করেও তাঁকে খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ।

উল্লেখ্য, রয়েল হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার এম শরীফ আহাম্মদ গত বুধবার ভোর ৬টায় ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার কান্দুঘর গ্রামের ব্যবসায়ী উজ্জলের স্ত্রী সোনিয়া আক্তার (২০) এর সিজারিয়ান অপারেশন করে একটি কন্যা শিশু বের করে আনেন ডাক্তার। কিন্তু ভুল অপারেশনের কারণে নবজাতক কন্যা শিশুর মৃত্যুসহ সোনিয়ার হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের। এখবর শোনার পর উত্তেজিত জনতা হাসপাতালটি ভাংচুর করে। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছার আগেই ওই ডাক্তার, হাসপাতালের মালিক, কর্মচারীসহ সকলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ওইদিনই কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মজিবুর রহমান চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে আগামী ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ প্রদান করেন। অভিযুক্ত ভুয়া ডাক্তারকে গ্রেফতার করার জন্য পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে- লাইসেন্স, অভিজ্ঞ ডাক্তার ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মাধবপুর এলাকায় দুইটি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত।

গত বৃহস্পতিবার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সম্রাট খীসা, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ কামরুল ইসলাম খান ওই হাসপাতালে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন।

ভ্রাম্যমান আদালত সূত্র জানায়, রয়েল হাসপাতালের বিরুদ্ধে মামলা, লাইসেন্স ও অভিজ্ঞ ডাক্তার না থাকায় এবং হাসপাতালের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পলাতক থাকার কারনে ভ্রাম্যমান আদালত হাসপাতালটিতে সিলগালা করে দেন। ভ্রাম্যমান আদালত একই এলাকার মাতৃসেবা জেনারেল হসপিটালের লাইসেন্স, অভিজ্ঞ ডাক্তার ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় সে হাসপাতালটিও সিলগালা মেরে বন্ধ করে দেন।

এসময় হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার কেরানীগঞ্জ জেলার মালিভিটা গ্রামের আকবর হোসেনের ছেলে আনোয়ার হোসেন (৩৫) এর আলট্রাসোনোগ্রাম করার মত প্রয়োজনীয় সনদ না থাকার অপরাধে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই হাসপাতালের ম্যানেজারের দায়িত্বে থাকা উপজেলার কান্দুঘর গ্রামের মৃত এলাহী বক্সের ছেলে মফিজুল ইসলাম (৪৩)কে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করে নগদ আদায় করে ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করে দেন।

এ বিষয়ে ব্রাহ্মণপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আবু মোঃ শাহজাহান কবির আজ শুক্রবার বিকেল পৌনে ৫টায় বলেন, ওই ডাক্তারকে গ্রেফতারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সম্ভাব্য কয়েকটি স্থানে অভিযান করেও তাঁকে খুঁজে পাইনি। তবে আশা করছি খুব দ্রুত তাঁকে গ্রেফতার করতে পারবো।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন