তাবিজ দেওয়ার কথা বলে বাসায় নিয়ে ধর্ষণ!

  26-05-2018 09:53PM

পিএনএস ডেস্ক : স্বামীকে বশে আনতে কবিরাজের শরণাপন্ন হয়েছিলেন এক গৃহবধূ। ওই কবিরাজ তাবিজ দেওয়ার কথা বলে বাসায় নিয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ধর্ষণের শিকার গৃহবধূর অভিযোগ, জিন ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করেছে এই ভয় দেখিয়েও তাঁর ওপর একাধিকবার যৌন নির্যাতন চালানো হয়। এসব অভিযোগে কবিরাজসহ দুজনকে আটক করেছে র‍্যাব।

এই ঘটনা ঘটেছে সিরাজগঞ্জে। গতকাল শুক্রবার রাত আটটার দিকে জেলার একটি বাড়ি থেকে দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব-১২) সদস্যরা। আটক ব্যক্তিরা হলেন, জাকারিয়া আনছারী (৪৫) ও আপেল মাহমুদ (২৯)। সদর থানায় একটি মামলা করেছেন ওই গৃহবধূ।

মামলার বিবরণ ও র‌্যাব সূত্রে জানা গেছে, স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় ওই গৃহবধূ কবিরাজ জাকারিয়া আনছারী (৪৫) হুজুরের কাছে যান। স্বামীকে বশীভূত করতে চেয়েছিলেন তিনি। ওই কবিরাজ আগে একটি মাদ্রাসায় কর্মরত ছিলেন। তাবিজ দেওয়ার কথা বলে ওই গৃহবধুকে স্থানীয় একটি মসজিদের পাশে যেতে বলেন জাকারিয়া।

সেখান থেকে ওই গৃহবধূকে বাসায় নিয়ে ধর্ষণ করেন তিনি। কিন্তু সেই তাবিজে পারিবারিক কলহ দূর না হওয়ায় কবিরাজ জানান, জিন ভিডিও ধারণ করেছে। এই ভয় দেখিয়ে জাকারিয়া জিন তাড়ানোর জন্য গৃহবধূকে নিয়ে যান বন্ধু মো. আপেল মাহমুদের (২৯) কাছে। সেখানে ওই গৃহবধূকে ফের ধর্ষণ করা হয় এবং মুঠোফোনে তার ভিডিও ধারণ করা হয়। এই ঘটনার সূত্র ধরে ভয় দেখিয়ে ও হুমকি দিয়ে ওই গৃহবধূর কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে বড় অঙ্কের টাকা ও স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নেয় অভিযুক্তরা।

র‍্যাব বলছে, পরে আরও টাকা দাবি করলে ওই গৃহবধূ বিষয়টি তাঁর বড় ভাইকে জানান। পরে তাঁর ভাই বাদী হয়ে গত ১৫ মে সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরবর্তীতে বিষয়টি র‌্যাব সদস্যদের জানানো হলে র‌্যাব সদস্যরা গতকাল জাকারিয়া ও আপেল মাহমুদকে আটক করে। একই সঙ্গে তাঁদের কাছে থাকা মুঠোফোনও জব্দ করা হয়।

সিরাজগঞ্জ র‌্যাব-১২ কার্যালয়ের কোম্পানি অধিনায়ক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ সাকিবুল ইসলাম বলেন, কবিরাজি চিকিৎসার নামে দীর্ঘদিন ধরে এই দুজন ধর্ষণ ও ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে হুমকি দিয়ে রোগীদের কাছ থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নিচ্ছিলেন।

বিষয়টি জানতে পেরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করা হয়। আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা র‌্যাবের কাছে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে। ভিডিওসহ আসামি দুজনকে থানা-পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবু দাউদ বলেন, এ ঘটনায় ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। র‌্যাবের কাছ থেকে পাওয়া দুই এজাহারভুক্ত আসামিকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। মামলাটির তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পিএনএস/জে এ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন