ঈদের ছুটি কাটিয়ে আসুন দেশের বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী শহরে; পর্ব ২ (ভিডিও)

  26-06-2017 12:15AM

পিএনএস ডেস্ক: শহরের ইট পাথরের যান্ত্রিক জীবন থেকে একটু স্বস্তির ছোয়া দিতে, ভ্রমণের জন্য গত পর্বে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলাম বাংলাদেশের দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলে বাগেরহাট শহরের ঐতিহাসিক পুরনো “ষাট গম্বুজ মসজিদ”।
আর এ পর্বে থাকছে উক্ত মসজিদের নির্মাতা হজরত খানজাহান আলী (রঃ) এর মাজার এবং তাঁর ঐতিহাসিক দীঘি।
হযরত খান জাহান আলীর(রঃ) মাজার খুলনা বিভাগের বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত। বাগেরহাট জেলা যে কয়জন ব্যক্তিদের মাধ্যমে সুপরিচিতি লাভ করে তাদের মধ্যে হযরত খান জাহান আলী (রঃ) অন্যতম। তিনি ভারতে জন্মগ্রহণ করলেও এই অঞ্চলে আসেন ইসলাম ধর্ম প্রচারে। এখানে এসে তিনি নির্মাণ করেন স্বরণকালের বিখ্যাত মসজিদ ষাট গম্বুজ মসজিদ। আর সেই মসজিদের কিছুটা দূরেই আছে তাঁর মাজার এবং বিখ্যাত দীঘি।
হজরত খানজাহান আলী (রঃ) শুধুমাত্র একজন নির্মাতা ও ধর্মপ্রচারকই ছিলেন না বরং একজন সূফী ছিলেন পঞ্চাদশ শতাব্দীতে। এই অঞ্চলে তাঁর আবির্ভাব অলৌকিক বলে বিবেচিত হয়। স্থানীয় জনশ্রুতি অনুযায়ী যে কুমির দুটির পিঠে আরোহণ করে তিনি আগমন করেছিলেন তাদের কালাপাহাড় ও ধলাপাহাড় নামে ডাকা হত। তারা খানজাহান আলী (রঃ) এর প্রথম অনুচর। খানজাহান আলী (রঃ) এর মাজারের মাত্র কয়েক পা দূরেই ঠাকুরদীঘি নামে মিঠা পানির পুকুরে আজো ঐ কুমির দুটির বংশধররা বাস করছে।
ঐতিহাসিকদের মতে, খানজাহান আলীর (রঃ) এর অনুচররা এই কুমিরগুলোকে পুকুরে রেখেছিল এই জন্য যে, মানুষখেকো এই প্রানীর ভয়ে যাতে লোকজন এই দীঘির পানি দূষিত না করে। কালক্রমে এই কুমিরগুলো খানজাহান (রঃ) এর প্রতীকে পরিনত হল এবং মানুষ এগুলোকে গভীর শ্রদ্ধায় দেখাতে লাগলো।
খান জাহান আলী দীঘির উত্তর পাড়ে এক উচ্চ ভূমিতে তাঁর সমাধি সৌধ। তাঁর সমাধি সৌধটি বর্গাকৃতি। এর আয়তন (৪২×৪২)ফুট এবং প্রাচীরের উচ্চতা ২৫ ফুট। এবং এর ছাদে একটি গম্বুজ আছে। সৌধের ভিতরে একটি প্রস্তর নির্মিত বেদিতে হযরত খানজাহান আলী (রঃ) এর মাজার অবস্থিত। সমাধি সৌধের স্থাপত্য শিল্প অনেকটা ষাট গম্বুজের মতোই। শিলালিপিতে মৃত্যু,দাফন তারিখ ছাড়াও আল্লাহ্‌র নাম, কোরআন শরিফের কয়েকটা সূরা এবং তাঁর উপর শান্তি বর্ষিত হোক ইত্যাদি লিপিবদ্ধ আছে। প্রতিদিন দেশ-বিদেশ থেকে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে হাজার হাজার মানুষ তাঁর রুহানী দোয়া লাভের আশায় মাজার জিয়ারত করতে আসেন।

যেভাবে ভ্রমেন যাবেন
ঢাকা থেকে সরসসরি বাগেরহাট যাওয়া যাবে। সায়েদাবাদ থেকে প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে ১০টা এবং সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ফাল্গুনী, দোলা, মেঘনা, বনফুল, পর্যটক, আরা, হামিম এই গাড়িগুলো ছেড়ে যায়।
এবং গাবতলী থেকে সোহাগ, শাকুরা, হানিফ ও ইগল পরিবহন ছেড়ে যায়।
এছাড়া আপনি ট্রেনেও যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে খুলনাগামী ট্রেন সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও চিত্রা এক্সপ্রেসে করে খুলনা শহরে নামতে হবে। সেখান থেকে বাগেরহাটে বাসে করে যেতে ৩৫ মিনিট সময় লাগে।

থাকার ব্যবস্থা
বাগেরহাট শহরে বিভিন্ন হোটেল আছে, তাছাড়া সরকারী গেস্ট হাউজ আছে। কিছু হোটেলের মধ্যে হোটেল মমতাজ, হোটেল অভি(০১৮৩৩৭৪২৬২৩), হোটেল আল-আমিন (০৪৬৮-৬৩১৬৮, ০১৭১৮৬৯২৭৩৭), হোটেল মোহনা(০৪৬৮-৬৩০৭৫, ০১৭২২৮৫৮৩১৩) উল্লেখযোগ্য।
তাছাড়া আপনি খুলনা শহরে গিয়েও উন্নতমানের বিভিন্ন হোটেলে থাকতে পারবেন কারণ খুলনা শহর থেকে বাগেরহাটের দূরত্ব মাত্র ৩৫ মিনিটের।

নিচে ভ্রমণের ভিডিওতে ফুটে উঠেছে দীঘি ও মাজারের ভেতর বাহির
ভিডিও-১


ভিডিও-২


পিএনএস/হাফিজুল ইসলাম

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন