বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে এনামুলদের লাশের মিছিল বড় থেকে আরও বড়ই হচ্ছে

  23-01-2017 07:56PM

পিএনএস : বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক কমিটির অন্যতম নেতা ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক জননেতা কমরেড আবু হাসান টিপু বলেছেন, দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে এনামুলদের লাশের মিছিল বড় থেকে আরও বড়ই হচ্ছে। তিনি বলেন, হত্যাকান্ডের ছয় বছর অতিক্রান্ত হলেও খুনিরা মালিক পক্ষের লোক হওয়াতে আজও তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে। যেই ৬ দফা বাস্তবায়নের জন্য এনমুল জীবন দিল সেই দাবী-দাওয়া বাস্তবায়নতো দুরের কথা উল্টো খুনীদের দেয়া মামলায় বহু শ্রমিক আজও গৃহ ছাড়া। তিনি বলেন ধনীকশ্রেনীর এই প্রচলিত রাষ্ট্র ব্যবস্থায় কেবল জীবন দিলেই শ্রমজীবী মনিুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয় না এটা আজ প্রমানীত। আর তাই অধিকার আদায় করতে হলে শ্রমিকশ্রেনীর শক্তিশালী সংগঠন ও আন্দোলনের ধারাবাহিক রক্ষা করা ছাড়া বিকল্প কোন পথ নেই।

ঐতিহাসিক ২৩ জানুয়ারী এসিআই শ্রমিক শহীদ এনামুল হত্য দিবস উপলক্ষে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির উদ্যোগে আজ সকালে এসিআই কারখানার পার্শ¦বর্তী গ্রান্ডট্রাঙ্ক রোড সংলগ্ন মাঠে অনুষ্ঠিত শ্রমিক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে ছাটাইকৃত শ্রমিকদের কাজে পুননিয়োগসহ এনামুলের রক্ত¯œাত ৬ দফা বাস্তবায়নের দাবী করে আবু হাসান টিপু আরও বলেন, শ্রমিক অসন্তোষ জারি রেখে শিল্পে উত্তম উৎপাদন অসম্ভব আর তাই ঔষধ শিল্প বিকাশের স্বার্থেই শ্রমিকদের আইনসম্মত দাবী-দাওয়ার বাস্তবায়ন করা ছাড়া বিকল্প কোন পথ নেই।

এসিআই শ্রমিকনেতা জাবেদ মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ শ্রমিক সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, শ্রমিকনেতা মোক্তার হোসেন, মোহাম্মদ আলী, তৌহিদুল ইসলাম প্রমূখ।

প্রসঙ্গত: ২০১১ সালের ২৩ জানুয়ারী নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল এলাকায় অ্যাডভান্সড কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড (এসিআই) ফার্মাসিউটিক্যালস কারখানায় শুধুমাত্র মজুরী বৃদ্ধিসহ ৬ দফা দাবীতে আন্দেলন করার অপরাধে কারখানাটির তৎকালীন জিএম ইসতিয়াক ক্রোধান্বিত হয়ে তারই কথিত আত্মীয় সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসির নেতৃত্বে ঐ মধ্যযুগীয় বর্বরতার সৃষ্টি করে। কারখানাটির মূল গেট বন্ধ করে দিয়ে পুলিশ নির্বিচারে শ্রমিকদের ওপর লাঠিচার্জ ও গুলি চালায়। বুকে পিঠে, হাতে-পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে আন্দেলনরত শ্রমিক এনামুল হকসহ অর্ধশতাধিক শ্রমিক তৎক্ষণাৎ মাঠে লুটিয়ে পরে। তাদের মৃত্যু যন্ত্রনা আর বেঁচে থাকার আকুতি চিৎকারে সেদিন এসিআই-এর আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠে।

এসিআই-এর সবুজ ঘাসকে বুকের রক্ত দিয়ে রাঙ্গিয়ে প্রাণ হাড়ান এনামুল হক। গুরুতর আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে দীর্ঘ মেয়াদী চিকিৎসা গ্রহন করেন, আরিফ, মুন্না, শামীম, আক্তার, হারুন, সাজ্জাদ, সিরাজ, হারুন, আরিফুল আলম, ময়না, সজীব, বিললাল, মামুন, রাসেল, আতিকুল্লাহ, সোহেল, তৌহিদুল ইসলাম জাবেদ, মাছুম, সাদ্দাম, নজরুল, ইউনুছ, আসাদ, রুবেল, রেহান, হেলাল, আকতারুজ্জামান, আরিফ, মুরাদ, সাহেদসহ অর্ধশতাধিক শ্রমিক।

পিএনএস/মো: শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন