'রোহিঙ্গা ইস্যুতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট না করার আহ্বান'

  17-09-2017 10:38PM

পিএনএস : রোহিঙ্গা ইস্যুকে কেন্দ্র করে কেউ যেন পার্বত্যাঞ্চলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তি বিনষ্ট করতে না পারে সে বিষয়ে সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমা সার্কেল চিফ রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়। রবিবার রাঙামাটি চাকমা রাজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।

ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় বলেন, রাখাইন রাজ্যের শরণার্থীদের প্রতি তাদের স্বদেশে অত্যাচার ও বাংলাদেশে তাদের আগমনকে ঘিরে নানা প্রচার, অপ-প্রচার, গুজব এবং সীমিত পর্যায়ের হিংসাত্মক ঘটনার কথা আমরা জানতে পেরেছি। তাছাড়া বার্মার সংখ্যা-গুরু সম্প্রদায় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী এবং শরণার্থীদের সিংহভাগ মুসলিম ধর্মাবলম্বী, বিষয়টাকে অহেতুকভাবে ধর্মগত সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্ব হিসেবে কোন কোন মহল থেকে অপব্যাখ্যা প্রদান করা হচ্ছে। এসবের অসংযত বহিঃপ্রকাশের ফলে সাম্প্রদায়িকতা বেড়ে যাচ্ছে।

পার্বত্যাঞ্চলে বসবাতরত পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যে কোন রকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য জনসচেনতা বাড়াতে হবে। একই সাথে রোহিঙ্গাদের প্রতি বার্মার সরকারের বৈষম্যমূলক, হিংসাত্মক এবং মানবাধিকার-বিরোধী ও মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডকে তীব্র নিন্দা জানান তিনি।

চাকমা রাজা আরও বলেন, রাখাইন রাজ্য থেকে কয়েক লাখ ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নারী, পুরুষ ও শিশুর মর্মান্তিক অবস্থায় বাংলাদেশে আগমনে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তাই মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া সরকারের ও দেশের মানুষের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য।

তিনি বলেন, একটি সম্প্রদায়িক মহল দেশের বৌদ্ধদেরও রাখাইন রাজ্যের নিপীড়নের জন্য দায়ি করছেন। কিন্তু মিয়ানমার সরকারের সামরিক শাসনামলে নিপীড়নের শিকার শুধু মুসলিমরা নয়। বৌদ্ধ ধর্মের সংখ্যাগুরু বামার সম্প্রদায়ের শ্যান, রাখাইন, মোন, ক্যারেনসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর ও বৌদ্ধ ধর্মের নর-নারীও অত্যাচার-বৈষম্যের শিকার হয়েছেন।

১৯৩০, ১৯৪৪-৪৫ ও ১৯৬২ সালের ঐতিহাসিকভাবে দেখা যায় বার্মা থেকে ভারতীয় ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নিপীড়নমূলক কর্মকাণ্ডে ফলে হাজার হাজার মুসলিম, হিন্দু, শিখ ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মানুষ বার্মা থেকে বিতাড়িত হয়েছিল। তাই বাংলাদেশে বসবাসরত নাগরিকদের মধ্যে বাঙালি উপজাতিসহ মুসলমান, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ ও অন্যান্য ধর্ম বা আধ্যাত্মিকতায় বিশ্বাসী সম্প্রদায়গুলোর মধ্যেও যাতে সম্প্রীতি বিনষ্ট না হয় সেদিকে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। এছাড়া বাংলাদেশে আগত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিজস্ব নিরাপত্তা ও সার্বিক কল্যাণার্থে নিদিষ্ট আশ্রয় শিবিরে রাখাও প্রয়োজন।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন