বাইশারাবাদ নদীতে অবৈধভাবে নেট-পাটা দিয়ে মাছ ধরায় ভোগান্তিতে মৎসজীবিরা

  20-10-2019 07:00PM

পিএনএস, পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি : পাইকগাছার বাইশারাবাদ নদী অবৈধভাবে নেট-পাটা দিয়ে মাছ ধরায় এলাকার প্রায় শতাধিক মৎসজীবি চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। বাইশারাবাদ নদীর স্লুইচ গেটের বাইরে ওসমান দপ্তরী একটি নেট পাটা ও নদীর মাঝ বরাবর ভীতরে জিয়াদুল ইসলাম একটি নেট পাটা অবৈধভাবে মৎস্য আহরণ করায় এলাকার মৎস্যজীবিরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তারা বাইশারাবাদ নদী থেকে অবৈধ নেট-পাটা উচ্ছেদ করার জন্য প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছে।

এলাকাবাসি ও মৎসজীবিরা জানায়, উপজেলার গদাইপুর ইউনিয়ানের বাইশা স্লুইচ গেটের গোড়ার বিলপর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার নদীটি ইজারা দিয়েছেন পাইকগাছা উপজেলার সোনাদানা ইউনিয়ানের ভিলেজ পাইকগাছা গ্রামের আজিজুল হাকিম। তিনি উপজেলা যুবলীগের সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির সদস্য। চলতি বছরে এপ্রিল মাসে তিনি গদাইপুর ইউনিয়ানের পুরাইকাটি গ্রামের মৎসজীবি জিয়াদুল ইসলামকে এক লাখ ৫ হাজার টাকার ইজারা দেন। মেয়ার শেষ হবে ২০২০ সালের এপ্রিলে। প্রশাসনের কোন অনুমতি না নিয়ে তিনি নদী ইজারা দিয়েছেন। জিয়াদুল এই তিন কিলোমিটার এলাকায় দখল নিয়ে জাল দিয়ে আটকে মাছ ধরছেন। নদী ইজারা দেওয়ায় ওই এলাকার প্রায় শতাধিক মৎসজীবিরা মৎস্য আহরণ করতে না পারায় বিপাকে পড়েছে। ফলে পরিবার পরিজন নিয়ে তারা মানবতার জীবন যপন করছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, জিয়াদুল নদীতে জালদিয়ে আটকে মাছ শিকার করছেন। একাজের জন্য তিনি নদীর ওপর একটি টোংঘর (নদীর মধ্যে তৈরি ছোট ঘর) তৈরি করেছেন।

এ সময় তিনি বলেন, এই নদী সরকার ইজারা দিয়েছে কি না জানি না। আমি এক বছরের (চৈত্র থেকে চৈত্র) লিজ নিয়েছি যুবলীগের আজিজুলের কাছ থেকে। এর জন্য ১ লাখ ৫ হাজার টাকা দিয়েছি।

মঠবাড়িয়া গ্রামের মো. আবুল বলেন, নদীটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকার কথা। কারণ এই নদীতে মাছ ধরে এই এলাকার প্রায় শতাধিক মৎসজীবি তাদের পরিবারের ভরণ-পোষণ চালায়। কয়েক পুরুষ ধরে তারা এভাবেই চলে আসছে। এখন নদীটি ইজারা দেওয়ায় পরিবার নিয়ে তারা এখন পথে বসেছে। এই বিষয়ে আমরা এমপির কাছে আবেদন করেছি।

গড়াইপুর ইউনিয়ানের চেয়ারম্যান জুনাইদুর রহমান বলেন, সে অন্যায় ভাবে গায়ের জোরে ইজারা দিয়েছে। আমি হজে যাওয়ার আগে জাল উঠিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু এখন দেখছি আবার সেখানে জাল। শুধু আমি নই ইউএনও ম্যাডামও কয়েকবার জাল উঠিয়ে দিয়েছেন কিন্তু সে মানছে না।

এ ব্যাপারে আজিজুল হাকিম বলেন, ডিসি অফিসের এলএ শাখা থেকে জলমল ইজারা নিয়েছি। তবে জলমল ইজারার দাগ নম্বরের সাথে বাইশারাবাদ নদীর দাগ নম্বরের সাথে মিল নাই। ইজারা নিয়ে জলমলের জায়গা ইতিপূর্বে বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে। দাগ নম্বর সংশোধনের জন্য চেষ্টা চলছে। আমি ইজারা দেইনি। তাহলে জিয়াদুল এর সাথে লেখা-পড়া থাকত।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জুলিয়া সুকায়না বলেন, এটা ইজারা দেওয়া নাই। আগে কয়েকবার উচ্ছেদ করা হয়েছে। আবার উচ্ছেদ কাজ করা হবে।

পিএনএস/মো. শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন