প্রশাসন এখন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান: গয়েশ্বর

  08-06-2024 10:39PM

পিএনএস ডেস্ক: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, বাংলাদেশের এমন কোনো কারাগার নেই যেখানে আমাদের কর্মীরা বন্দি নেই। এই আটকও একটি বাণিজ্য। ধরে আনতে পারলে বাণিজ্য। আত্মীয় স্বজনরা দেখা করতে গেলে টাকা, খাবার দিতে গেলে টাকা, আদালতে এনে রিমান্ড না নেওয়ার জন্য টাকা। এ রকম অনেক খাত আছে। প্রশাসন এখন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে রূপ নিয়েছে।

শনিবার বিকালে রাজধানীতে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি জহির উদ্দিন তুহিনসহ রাজবন্দিদের মুক্তির দাবিতে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। মানববন্ধনটি বিএনপি কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে ফকিরাপুল বাজার পর্যন্ত বিস্তৃত হয়।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আজকে বিচারের আগেই পুলিশ হাত-পা ভেঙে বিচার করছে। থানায় ঢুকে ছাত্রলীগের কর্মীরা পুলিশের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীদের পেটাচ্ছে। কোনো বিচার নেই।

গয়েশ্বর বলেন, জনগণের নিরাপত্তা দিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা থাকে না। যেখানে সরকারই ভেজাল সেখানে প্রশাসন নির্ভেজাল থাকে না। যে দেশে আইনের শাসন নেই সে দেশে জনগণ বিচার চাইবে কার কাছে। বিচারপতিই স্বাধীন না। সরকারের বিরুদ্ধে রায় দিলে দেশ ত্যাগ করতে হয়। একজন জোর গলায় বললেন এসকে সিনহাকে কিভাবে দেশ ত্যাগ করিয়েছিলাম। তারপরও সেই বিচারপতিরাই তাকে সালাম দিচ্ছেন।

তিনি বলেন, আজকে আমেরিকা বা কোনো রাষ্ট্র আমাদের দেশের কারো বিরুদ্ধে স্যাংশন দিলে তা জাতির জন্য লজ্জার। কিন্তু সরকার লজ্জা পায় না। বেনজীর র‌্যাবের ডিজি থাকা অবস্থায় বিএনপি নেতা সালাউদ্দিনকে উত্তরা থেকে আটক করলো। তার তিন মাস পর ভারতে তাকে পাওয়া গেল। এটি কিভাবে সম্ভব হলো? কেন তদন্ত করলেন না! আপনারা (সরকার) কি বিষয়টি জানতেন না!

এমপি আনার হত্যা প্রসঙ্গে গয়েশ্বর বলেন, আনার একসময় সর্বহারা পার্টি করতেন। আওয়ামী লীগে যোগদান করে মুক্তিযোদ্ধা হয়ে গেলেন। আনার যে খুন হয়েছে তা এখনো প্রমাণ করতে পারেনি। তার শরীরের টুকরো এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। আর যদি খুন হয়েই থাকে তাহলে তাকে খুনের দায়ে যাদের আটক করা হয়েছে খুনীরা কেন তাকে খুন করলো তা প্রকাশ করছেন না কেন?

বিএনপির এই নেতা বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে চার লক্ষ কোটি টাকার রাজস্ব আয়ের কথা বলা হয়েছে। এই টাকায় রাষ্ট্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন হবে। জনগণের টাকায় বেতন হবে, জনগণের টাকায় খাবেন আর জনগণের উপর লাঠি চালাবেন, এটি একটি সীমাহীন বেয়াদবি। গরু মোটাতাজা করার মতো চোর-ডাকাত এবং লুটতরাজদের মোটাতাজা করার জন্য এ বাজেট। এ রাজস্ব আদায় হবে কিভাবে? উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। কর্মহীন যুবকের জন্য কিছু নেই। তারপরও যদি রাজস্ব দিতে হয় তাহলে জনগণের না খেয়ে মরা ছাড়া উপায় নেই।

তিনি বলেন, ভারতের নির্বাচনে মোদি বুঝেছে নির্বাচন কাকে বলে। সেখানে এখনো জবাবদিহিতা আছে। কিন্তু আমাদের দেশে কোনো জবাবদিহিতা না দেখে সরকার যা ইচ্ছে তাই করছে।

বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় এতে আরো বক্তব্য দেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, ওলামা দলের আহ্বায়ক মাওলানা সেলিম রেজা, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক রিয়াজ উদ্দীন নসু, স্বেচ্ছাসেবক দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব পাপ্পা সিকদার, ছাত্রদলের পাভেল সিকদার, খালিদ হাসান জ্যাকী, শামসুজ্জামান সুরুজ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ইউনুস মৃধা, মোহাম্মদ মোহন, মোশাররফ হোসেন খোকন, আবদুস সাত্তার, হাজী মনির হোসেন চেয়ারম্যান, সাইদুর রহমান মিন্টু প্রমুখ।

পিআর

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন