পিএনএস ডেস্ক: দরবেশ বাবা সেজে বিভিন্ন উপায়ে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের ১৯ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
মাগুরা জেলা ও ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকায় পৃথক অভিযানে গ্রেপ্তারের সময় চক্রটির কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৪১টি মোবাইল ফোন, বিপুলসংখ্যক সিমকার্ড ও ডিজিটাল আলামত উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে চাঞ্চল্যকর তথ্য দেয় তারা।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া জানান, খিলগাঁও থানার মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এই চক্রের সন্ধান পায় সিআইডি।
তিনি বলেন, চক্রটি ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় গ্রুপে বিভক্ত হয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে অবস্থান করে প্রতারণা করত। এই চক্রটি স্বামী-স্ত্রীর নম্বর সংগ্রহ করে তাদের মধ্যে কলহ তৈরি এবং গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রলুব্ধ করে প্রতারণা করত। বিজ্ঞাপনে ভাগ্যবদল, পাওনা টাকা আদায়, মামলায় জেতানো, পারিবারিক সমস্যা সমাধান এবং বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বলে দিতে পারার কথা বলা হতো। এরপর বিজ্ঞাপনে দেওয়া নম্বরে কেউ যোগাযোগ করলে শুরু হতো পকেট কাটা। চমকপদ এমন বিজ্ঞাপন দেখে সম্প্রতি প্রতারণার শিকার হয়েছেন এক নারী চিকিৎসক।
সিআইডি জানায়, বিজ্ঞাপনে দরবেশ বেশধারী এক ব্যক্তি নিজেকে সৌদি আরবের মসজিদে নববীর ইমাম পরিচয় দিয়ে বলছেন, তিনি কোরআন হাদিসের আলোকে মানুষের সমস্যা সমাধানে কাজ করেন। বিজ্ঞাপনটি মন কাড়ে ওই নারী চিকিৎসকের। পরে বিজ্ঞাপনে দেওয়া মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করেন তিনি। অপর প্রান্তে থাকা ‘দরবেশ বাবা’ বেশধারী ব্যক্তি সুন্দরভাবে কথা বলে তার পারিবারিক সমস্যা শুনতে চান। ভুক্তভোগী চিকিৎসক তার পরিবারের সমস্যার কথা কথিত দরবেশ বাবার কাছে তুলে ধরলে তিনি সমাধানের আশ্বাস দিয়ে বলেন, বাবার ওপর আস্থা রাখো। তোমাকে মা বলে ডাকলাম। আজ থেকে তুমি আমার মেয়ে। তবে কিছু খরচ লাগবে। খরচের কথা কাউকে জানালে সমস্যার সমাধান তো হবেই না, বরং সমস্যা আরও বাড়বে।
‘এরপর ওই নারী চিকিৎসক ভণ্ড দরবেশের কথায় তার ভক্ত হয়ে যান। বিভিন্ন ধাপে বিভিন্ন সময়ে অলৌকিক সমস্যার কথা বলে প্রলোভন ও ভয়-ভীতির মাধ্যমে মোট ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় এই প্রতারক চক্র। পরে এমএফএস নম্বরের সূত্র ধরে মাগুরা জেলা থেকে আশিকুর রহমান নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। তার দেওয়া তথ্যমতে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে কথিত দরবেশ পরিচয়দানকারী ১৮ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, চক্রটি ২০২০-২১ সাল থেকে এই প্রতারণার সঙ্গে জড়িত। ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে চক্রটি এমএফএস নম্বরে টাকা হাতিয়ে নিত।
পিএনএস/এমএইউ
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ফাটল ধরিয়ে ‘দরবেশ’ সেজে দিতেন সমাধান! অবশেষে ধরা
21-02-2024 01:19PM