শেকৃবিতে দুই আঞ্চলিক গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ২

  15-03-2023 03:31AM

পিএনএস ডেস্ক : শ্রেণিকক্ষে উত্ত্যক্ত করার জেরে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢাকা আঞ্চলিক গ্রুপ ও উত্তরাঞ্চল গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) রাতে এই দুই গ্রুপের মধ্যে দুই দফা সংঘর্ষ হয়। এতে ঢাকা আঞ্চলিক গ্রুপের এএসভিএম অনুষদের ইয়াসির আরাফাত (১৯ ব্যাচ) এবং মোজাম্মেল মৃধা নোবেল (১৯ ব্যাচ) আহত হন।

আরাফাত সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং নোবেল ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে আহত নোবেলের মাথা ফেটে যাওয়ায় তিনটি সেলাই দেওয়া হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার রাতে নবাব সিরাজউদ্দৌলা হল সংলগ্ন এলাকায় এনিম্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন (এএসভিএম) অনুষদের ৭৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইয়াসির আরাফাত ও ৭৬তম ব্যাচের রবিউল ইসলামের মধ্যে বাকবিতণ্ডার জেরে এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয়। এ সময় রবিউল মারধরের শিকার হন। এরপর রবিউল তার বন্ধু এবং ক্যাম্পাসের বড় ও ছোট ভাইদের (উত্তর বঙ্গের) নিয়ে এসে পাল্টা আক্রমণ করলে আরাফাত আহত হন। এ পর্যায়ে প্রক্টরিয়াল বডি ও নবাব সিরাজউদ্দৌলা হল প্রশাসনের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি শান্ত করতে উভয় পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসলে বাইরে আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়।

সংঘর্ষে ঢাকা আঞ্চলিক গ্রুপের মোজাম্মেল মৃধা নোবেল নামের এক শিক্ষার্থী মাথায় গুরুতর আঘাত পান। আহতদের উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে আহত নোবেলকে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হসপিটালে নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে রবিউল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ৭৭ ব্যাচের তোফায়েল আহমেদ ও ৭৮ ব্যাচের ইয়াসির আমাকে দেখে সবসময়ই উপহাস করেন। গত ছয় মাস ধরে এভাবে বিরক্ত করছেন তারা। কারণ অনেক আগে আমি এবং তোফায়েল মাদকাসক্ত ছিলাম। এখন আমি সম্পূর্ণরূপে মাদক থেকে দূরে আছি। কিন্তু তিনি (তোফায়েল) এখনো মাঝেমধ্যে মাদক গ্রহণ করে ক্লাসে আসেন। বরাবরই তিনি আমাকে উত্ত্যক্ত করেন। এ বিষয়টি ডিন ম্যাডামসহ বিভিন্ন শিক্ষকের কাছে মৌখিক অভিযোগ দিয়েছিলাম। আজ মেসেজের মাধ্যমে আমি গালি দিলে আরাফাত আমাকে মারধর করেন। পরে আমিও ওকে (আরাফাতকে) মারধর করি।

ইয়াসির আরাফাত বলেন, রবিউল ১৭ ব্যাচের হলেও আমাদের সঙ্গে ক্লাস করেন। কিন্তু আমার সঙ্গে গত এক বছর কোনো কথা হয় না। তিনি তার মতো ক্লাস করেন, আমি আমার মতো। কিন্তু আকস্মিক মঙ্গলবার দুপুরে আমাকে ফোন দেন। কিন্তু ফোন রিসিভ না করায় ফোনে বাজে ভাষায় মেসেজ করেন। পরে ক্যাম্পাসের চাতালে আমার সঙ্গে দেখা হলে কথা হয়। তার জীবন ধ্বংসের জন্য আমি দায়ী এমন কথা বলেন। পরে ৬০-৭০ জন ছেলে মিলে আমাকে ধাওয়া দেন এবং মারধর করেন। এই ঘটনার কারণ আমি জানি না। তবে আমার সঙ্গে যখন কথা বলছিলেন তখন মনে হয়েছে তিনি মাদকাসক্ত ছিলেন।

ঢাকা অঞ্চলের আহত নোবেল জানান, ক্যাম্পাসে উত্তরাঞ্চল-ঢাকা অঞ্চলের বিষয়ে জানতাম না। বাইরে থেকে এসে নবাব হলের পাশ দিয়ে হাঁটছিলাম। পেছন থেকে হঠাৎ কেউ পিঠে বাড়ি দেন। পেছনে ঘুরে দেখি কৃষি অনুষদের আহসান (১৯ ব্যাচ) মারছেন।

তিনি অভিযোগ করেন, আহসানের সঙ্গে সমস্যা গত সেমিস্টার থেকেই। আমার ডিএসএলআর ক্যামেরার মেমোরি কার্ড নিয়ে তিনি হারিয়ে ফেলেন। বার বার চাইলেও ৩/৪ মাস ধরে ঘোরাচ্ছেন। ঘটনার এক পর্যায়ে এটা নিয়ে তার সাথে ধাক্কাধাক্কি হয়। পরে মেমোরি কার্ড দেয়নি, আমিও আর চাইনি। আজ হঠাৎ করে কোনো কারণ ছাড়াই আমাকে মারলো।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আহসান কবির বলেন, আমার সঙ্গে কারও মারামারির ঘটনা ঘটেনি। যতটুকু শুনেছি উত্তরাঞ্চল এবং ঢাকা অঞ্চলের মধ্যে মারামারি হয়েছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. হারুন-উর-রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, আহত দুজনের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। দুই পক্ষের বক্তব্য নিয়ে পরবর্তীতে তদন্ত অনুযায়ী প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন