জবির হলে নির্যাতনে ছাত্রী অজ্ঞান

  07-03-2024 12:58PM



পিএনএস ডেস্ক: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে এক ছাত্রীকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনা জানতে অভিযুক্ত নারী শিক্ষার্থীকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিককে হত্যার হুমকি দিয়েছেন অভিযুক্তের প্রেমিক এবং শাখা ছাত্রলীগের কর্মী ফাহিম ইশতিয়াক।

হুমকি দেওয়া অডিওকল রেকর্ড এ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। অভিযুক্ত ফাহিম মার্কেটিং বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, মঙ্গলবার সকালে ছাত্রী হলে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী ইতি আক্তারকে রান্নাঘরে তুচ্ছ ঘটনার জেরে মারধর করে সংগীত বিভাগের ১২ ব্যাচের শিক্ষার্থী তাসনিম সানজানা বৃষ্টি। এ ঘটনায় অভিযুক্ত বৃষ্টির বক্তব্য জানতে ফোন দেন একটি পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি রকি আহমেদ। এর পরই বৃষ্টির প্রেমিক ফাহিম ইশতিয়াক ওই সাংবাদিককে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। নিউজ করলে মামলাসহ হত্যার হুমকি দেন।

হলের ভুক্তভোগী ছাত্রী ইতি আক্তার বলেন, আমি রান্না করছিলাম। পরে চুলা ফাঁকা থাকায় বৃষ্টি আপু ডিম ভাজতে চাইলে আমি চলে আসি। কিন্তু রান্না শেষ করতে দেরি হওয়ায় এবং আমার ক্লাসের সময় হওয়ায় দ্রুত রান্না শেষ করতে বলি। কিন্তু আমি জুনিয়র বলে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি দেয়। আমার বাবাকে পর্যন্ত অসম্মান করে গালি দেয়। আমি প্রতিবাদ করায় আমাকে চড়-থাপ্পড়, কিল-ঘুসি মারে। এর পর আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। তার পরের কোনো ঘটনা আমার মনে নেই।

অভিযুক্ত শিক্ষার্থী তাসনিম সানজানা বৃষ্টি বলেন, জুনিয়র হয়ে ইতি বেয়াদবি করেছে। আমার সামনে তেড়ে আসে। এ জন্য আমি কি বসে থাকব। আমিও মাইর খাইছি, আমিও অভিযোগ দিয়েছি।

এ বিষয়ে হল প্রভোস্ট দীপিকা রানী বলেন, এ বিষয়ে একটা অভিযোগ পেয়েছি। হলের শৃঙ্খলা কমিটিতে এটা তোলা হবে। আইনানুসারে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

হাতে আসা কল রেকর্ডে শোনা যায়, এই নিউজ যদি হয়, তুই যদি জড়িত থাকিস তোর খবর আছে। তোর নামে মামলা হবে। তোর লাইফ কীভাবে হেল করতে হয় আমি দেখব। তুমি নিউজ করো মিয়া। তোমার লাইফ হেল করে দেব। তুমি কার নামে নিউজ করতে যাচ্ছ, এখনো বুঝ নাই। তোর বাবার নাম কি বল। নাকি তোর বাপ নেই। তোর কি কোনো পরিচয় নেই? মেয়েটা আমার খুবই ক্লোজ। দুজন মেয়ে মারামারি করেছে তোর কি হইছে তোর বাপের নাম বল। তুই আজ দেখা কর। তোর খবর আছে। তোকে মেরে ফেলব।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিক রকি আহমেদ বলেন, হলে দুই ছাত্রীর মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এক ছাত্রীর গুরুতর আহত হওয়ার ছবি পাই। এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে আমি ইতির পর মারধর করা শিক্ষার্থী বৃষ্টির বক্তব্য নেই। এর পরই বৃষ্টির ক্লোজ বন্ধু পরিচয়ে আমাকে একজন অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। নিউজ হলে দেখে নেবে, হত্যা করবে এমন হুমকি দেয়।

অভিযুক্ত ফাহিম ইশতিয়াক বলেন, সাংবাদিক পরিচয়ে এক ব্যক্তি আমার বান্ধবীকে কল দিয়ে নিউজ করার হুমকি দেয়। বান্ধবী বিষয়টি আমাকে জানালে আমি ওই সাংবাদিককে কল দিয়ে কথা বলি। আমি মূলত বুঝতে পারিনি, উনি যে একজন সাংবাদিক। তাই আবেগতাড়িত হয়ে তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করে ফেলেছি।

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজি বলেন, আমি ফাহিম নামের কাউকে চিনি না। এ নামে কেউ আমাদের রাজনীতিও করে না। বিষয়টি দুঃখজনক।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এটি একটি নিন্দনীয় কাজ। সাংবাদিকরা তাদের পেশাগত কাজ করবে। লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। -সূত্র : যুগান্তর

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন