মূল্যায়ন পদ্ধতি চূড়ান্ত হয়নি নতুন কারিকুলামে

  25-05-2024 08:36PM

পিএনএস ডেস্ক: নতুন কারিকুলামে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন পদ্ধতি এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি। এ বিষয়ে গত দুই বছর ধরে চলছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। প্রথমে নম্বর ও গ্রেডিং পদ্ধতি বাতিল করে ‘ত্রিভুজ’, ‘বৃত্ত’ ও ‘চতুর্ভুজ’ ইনডিকেটর ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের পারফরম্যান্স মূল্যায়ন শুরু হয়। এনিয়ে অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্টদের তীব্র সমালোচনার মুখে তা থেকে পিছু হটে কর্তৃপক্ষ। এরপর মূল্যায়ন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনার ঘোষণা দেন শিক্ষামন্ত্রী। গঠন করেন উচ্চপর্যায়ের কমিটিও।

সেই কমিটির মতামতের ভিত্তিতে এবার সাতটি স্কেল বা পর্যায়ে মূল্যায়ন করার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি এবং এসএসসি-এইচএসসির মতো পাবলিক পরীক্ষায় মূল্যায়নে একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে। চলতি মে মাসের ৩১ তারিখের মধ্যেই এ পদ্ধতির চূড়ান্ত ঘোষণা আসতে পারে।

এনসিটিবি সূত্র জানিয়েছে, নতুন যে পদ্ধতি চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ, তাতে বিষয়ভিত্তিক পারফরম্যান্স ইনডিকেটর দেওয়া হবে। প্রত্যেক বিষয় মূল্যায়নে সাতটি পর্যায় বা স্কেল থাকবে।

মূল্যায়নের পর্যায়গুলো হবে অনন্য, অর্জনমুখী, অগ্রগামী, সক্রিয়, অনুসন্ধানী, বিকাশমান ও প্রারম্ভিক। সবচেয়ে যে ভালো করবে সে ‘অনন্য’ পাবে। এভাবে অন্য পর্যায়গুলো দিয়েও মূল্যায়ন করা হবে। তবে সব বিষয়ের স্কেল মিলিয়ে তা সমন্বিতভাবে প্রকাশ করা হবে না।

আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, নতুন কারিকুলামে এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ বা অন্য কোনো গ্রেডিং থাকছে না। মূল্যায়নে বিষয়ভিত্তিক পারফরম্যান্স অর্জনে জোর দেওয়া হয়েছে। সেখানে সাতটি পর্যায় বা স্কেল থাকতে পারে।

তিনি বলেন, মূলত আমরা বিষয়ভিত্তিক পারফরম্যান্স ইনডিকেটর দেব। তবে শিক্ষার্থীরা একাডেমিক রিপোর্ট কার্ড পাবে। মূল্যায়ন পদ্ধতি চূড়ান্ত হলে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়নের জন্য নৈপুণ্য অ্যাপ প্রস্তুত করা হবে।

এনসিটিবির সদস্য (কারিকুলাম) অধ্যাপক ড. মো. মশিউজ্জামান বলেন, এসএসসি-এইচএসসিতে সাতটি স্কেলে বিষয়ভিত্তিক মূল্যায়ন করা হবে। সরকারের লক্ষ্য সব প্রতিষ্ঠান সমপর্যায়ে নিয়ে যাওয়া। কেউ ভালো করল, কেউ খারাপ করল- তা আর থাকবে না। আমরা চাই সব শিক্ষার্থী উল্লাস করুক। এ মূল্যায়ন পদ্ধতির ওপর নির্ভর করে পরবর্তী শ্রেণিতে ভর্তি প্রক্রিয়াসহ সব কিছুতেই পরিবর্তন আনা হবে।

এদিকে নতুন কারিকুলামের রূপরেখায় সামষ্টিক মূল্যায়ন বা লিখিত অংশে ৬৫ নম্বর এবং শিখনকালীন মূল্যায়ন বা শ্রেণি কার্যক্রমে ৩৫ নম্বর রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। শ্রেণি কার্যক্রম বলতে বোঝানো হয়েছে অ্যাসাইনমেন্ট, উপস্থাপন, অনুসন্ধান, প্রদর্শন, সমস্যার সমাধান, পরিকল্পনা প্রণয়নের মতো কাজ। এ ছাড়া আগে এসএসসি-এইচএসসিতে তিন ঘণ্টার পরীক্ষা হলেও নতুন কারিকুলামে প্রতিটি বিষয়ের মূল্যায়ন হবে পাঁচ ঘণ্টায়। পাবলিক পরীক্ষায় মোট ১০টি বিষয়ের ওপর শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে।

গত বছর দেশে নতুন শিক্ষাক্রম চালু করা হয়। এতে প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তমসহ মোট তিন শ্রেণিতে নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন করা হয়। চলতি বছর বাস্তবায়ন করা হচ্ছে দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবমসহ চারটি শ্রেণিতে। ২০২৫ সালে পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে, ২০২৬ সালে একাদশ এবং ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণিতে এ শিক্ষাক্রম ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে।

এসএস

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন