পিএনএস ডেস্ক: ঢাকার সাভারের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) একটি পুকুর পাড়ে ডেকে নিয়ে প্রথম বর্ষের (৫২ ব্যাচ) অন্তত ১৫ জন শিক্ষার্থীকে র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে দ্বিতীয় বর্ষের (৫১ ব্যাচ) কয়েকজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইন্সটিটিউট শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুর দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ক্লাব সংলগ্ন পুকুর (ভিসি পুকুর) পাড়ে বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইন্সটিটিউটের ৫২ ব্যাচের ১০-১৫ জন্য শিক্ষার্থীদের ডেকে নিয়ে র্যাগিং দেন ৫১ ব্যাচের ৯-১০ জন শিক্ষার্থী। তারা ৫২ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে এক জায়গায় জমা রেখে তাদের সঙ্গে অসদাচার করেন।
পরে ঘটনাস্থলে নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. জেফরুল হাসান চৌধুরী, মোহাম্মদ আবু সৈয়দ এবং এ এস এম রাশিদুল হাসান উপস্থিত হন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ ছেড়ে দেন। জিজ্ঞাসাবাদে ৫১ ব্যাচের অভিযুক্ত ছাত্রদের পরিচয় জানা যায়।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন মেহেদী হাসান আবির, শিপন হোসাইন, মাসুম বিল্লাহ, শরিফুল ইসলাম সরল, সতীর্থ বিশ্বাস, দীপন রয়, জানিব হাসান মাটিয়া, সাজিয়া জাহান সিজা, সাদনান নিদ্রা ও দীপান্বিতা চক্রবর্তী।
নিরাপত্তা কর্মকর্তা জেফরুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘র্যাগিংয়ের তথ্য পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে আমরা ঘটনা স্থলে উপস্থিত হই। এরপর ৫১ ও ৫২ ব্যাচকে আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করি। তাদের সবার নাম সংগ্রহ করি। তারা দাবি করেন, ক্রিকেট খেলার বিষয়ে কথা বলার জন্য ৫১ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা তাদের ওখানে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে ৫২ ব্যাচের সবার মোবাইল ফোন আলাদা করে একত্র করে রেখেছিলেন। কিন্তু এ রকম জায়গায় ডেকে নিয়ে যাওয়া ও সবার মোবাইল ফোনগুলো জমা নেওয়ার পেছনে নিশ্চয়ই অন্য উদ্দেশ্য ছিল।
র্যাগিংয়ের ঘটনায় অভিযুক্ত ৫১ ব্যাচের শিক্ষার্থী শিপন হোসাইন বলেন, ‘আমাদের ব্যাচের মেয়েরাও ছিল আমাদের সঙ্গে। আসলে র্যাগিংয়ের কোনো বিষয় ছিল না সেখানে। দিনের বেলায় এভাবে র্যাগ দেওয়া যায় না কি! আগামীকাল থেকে ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে যাবে। বন্ধের পরে আমাদের ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ম্যাচ আছে। সে বিষয়ে কথা বলার জন্যই ৫২ ব্যাচকে ডাকা হয়েছিল।’
ক্রিকেট টুর্নামেন্টের কথা বলতে এ রকম জায়গায় জুনিয়রদের নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এত জনকে নিয়ে রোদের মধ্যে তো কথা বলা যায় না, তাই পুকুর পাড়ের ওইদিকে ছায়ায় আমরা বসেছিলাম।’
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মনির উদ্দিন শিকদার বলেন, ‘র্যাগিংয়ের অভিযোগের বিষয়ে সিন্ডিকেটে একাধিক সিদ্ধান্ত হয়েছে, প্রশাসন সবসময় র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে। এক্ষেত্রে প্রশাসন জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে। এ কারণে তুলনামূলকভাবে র্যাগিং কমেছে। তারপরও বিচ্ছিন্নভাবে কিছু জায়গায় এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। আজকে আমরা শোনামাত্রই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করার চেষ্টা করেছি। আমরা ঘটনাস্থলে কয়েকজনকে পেয়েছি। পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে সর্বোচ্চ শাস্তির সুপারিশ করা হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মো. রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘অপরাধ অপরাধ-ই। কেউ যদি অপরাধ করে থাকলে অবশ্যই তাকে শাস্তি পেতে হবে। সে আমার ছাত্র হোক, বা যেই হোক না কেন। তাদের তো আমি শাস্তি দিবই, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেন শাস্তির আওতায় আনে সেই ব্যবস্থাও করব।’
এসএস
জাবিতে পুকুরপাড়ে ডেকে নিয়ে কনিষ্ঠদের ‘উত্যাক্ত’
29-05-2024 12:35AM