তাহসান ও ফারিণ জানালেন কি ঘটেছিলো সেদিন

পিএনএস ডেস্ক: : এপেক্সের একটি আউটলেটে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ভিডিও লাইভের কারণ জানানোর প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলন ডেকে সাংবাদিকদের নীতিনৈতিকতা শেখালেন জনপ্রিয় অভিনেতা ও গায়ক তাহসান খান ও অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ জামিল।

শুক্রবার (১ মার্চ) দুপুর ৪ টা ১৫ মিনিটের দিকে রাজধানীর শাহীনবাগে ইম্পেরিয়াল হোটেলে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

যদিও সংবাদ সম্মেলনটি শুরু হওয়ার কথা ছিল সাড়ে ৩টায় কিন্তু নির্ধারিত সময়ের পরও ৪৫ মিনিট দেরি করে শুরু হয়।

এই সংবাদ সম্মেলনটি আয়োজন করে ‘পাওয়ার ক্রিয়েটিভ মিডিয়া’।

এপেক্সের সেই ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের তাহসান খান বলেন, অনেক সময় অদৃশ্য কিছু হাত থাকে। যে হাতটি সবকিছু পরিচালনা করে। আমরা আসলে পুতুলের মতো সেই হাত দ্বারা পরিচালিত হই। সেজন্যই আমরা এখানে বসে আছি। এবার ঈদে আমাদের একটা গান আসছে। অলরেডি রেকর্ডিং হয়ে গেছে। সেই গানের ভিডিওশুট করতে আমাদের বিভিন্ন জায়গায় যাওয়া হয়েছে। সে হিসেবে আমরা একটা স্টোরে গিয়েছিলাম। আজকে এতটুকুই বলতে পারি।

তাহসান খান বলেন, আমি আসলে যে যুগে কাজ করা শুরু করেছি সেই যুগটা অন্যরকম ছিল। সে সময় আমরা গান গাইতাম, বই পড়তাম তারপরে আমরা কাজের মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছেছি। তারপরে মানুষের ভালোবাসার কারণে সেলিব্রিটি হয়েছি হয়ত। বর্তমান যুগটা ডিফারেন্ট। এখন যা কাজ কি হচ্ছে, তার চাইতে মাইক সামনে কতগুলো আছে সেগুলোকে বেশি ইমপর্টেন্ট দেওয়া হয়। যারা সুন্দর করে মাইকের সামনে কথা বলতে পারেন, তারা আসলে বেশি যোগ্য। আজকে আসলে কতটুকু বলা উচিত বা কি বলা উচিত সেটা আমি এখনো শিওর না। তবে আমি এতটুকুই বলতে পারি জীবনে অনেক ঘটনাই ঘটে, সবকিছু এক্সপ্লেইন করা একটু মুশকিল হয়ে যায়।

সাংবাদিকদের উদ্দেশে তাহসান আরও বলেন, এখন যে কেউ আপনাদের কাতারে এসে দাঁড়াতে পারছে। যে কেউ একটা মোবাইলফোন, একটা ফেসবুক পেজ থাকলেই নিজেকেই সাংবাদিক বলে দাবি করতে পারছি। আমি মনে করি এজন্য আপনাদেরই সোচ্চার হওয়া উচিত। আপনাদের জায়গাটা তো এতো ঠুনকো না। ভূঁইফোঁড় শিরোনামের কাজগুলো বেশি হয়। প্রতিযোগিতার দৌড়ে আপনাদের কারও কারও হয়ত ভাবতে হচ্ছে, তাদের নিউজে এত বেশি ভিউ হচ্ছে, তাদের নিউজটার মতো আমাদেরও নিউজ করতে হবে। এজন্য হয়ত আপনাদের করতে হচ্ছে। কিন্তু এর বাইরে এসে আপনাদের কাজটা করতে হবে। আমাদের উদ্দেশ্য ভাইরাল হওয়া না, আপনাদের ভাইরাল করা না। আমার প্রতিবাদের ভাষাটা আমি এখানে বলে দিলাম।

এ সময় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তাসনিয়া ফারিণ বলেন, আপনারা নিউজ করেন এবং মাঝে মাঝে এমন এমন হেডলাইন করেন, সেই নিউজের ভেতরে কি আছে অডিয়েন্স সেটা পড়ে দেখে না। সেই হেডলাইন থেকে তাদের মনে একটা ধারণা তৈরি হয়ে যায়। এটাকে আমরা অপসাংবাদিকতা বলব।

সেই লাইভের বিষয়ে তাহসান বলেন, আপনারা হয়ত একটা লাইভে দেখেছেন আমরা কোথাও আটকা পড়েছিলাম। আমরা আসলে আটকা পড়িনি, এ কথাটা বলতে এসেছি। আমরা বলতে এসেছি, আমরা ভালো আছি। মূলত কি ঘটেছিল সেটা আপনারা কয়েকদিনের মধ্যেই জানতে পারবেন। আজকে সেই সুযোগটা নেই। আজকে আমরা পুরোটা এক্সপ্লেইন করতে পারব না। আমাদের হাতে বিষয়টা নেই।

এসময় তাসনিয়া ফারিণ বলেন, আপনারা যে স্টোরে আমাদেরকে দেখেছেন সেটা একটা অ্যাপেক্সের স্টোর ছিল। আমরা মূলত ওখানে একটা কাজের জন্য গিয়েছিলাম। সেখান থেকে একটা লাইভ হয়। পরে সেখান থেকে আমি একটা স্ট্যাটাস দিয়েছি। পরে সেটার একটা ভিডিও আপনারা দেখেছেন। বিষয়টা এতটুকুই।

এরপর স্টেজে আয়োজকদের একজন এসে বললেন, আমার মনে হয় প্রেস কনফারেন্স এখানেই শেষ করা উচিত। সময় স্বল্পতার একটা বিষয় আছে। এরপরে সবাই স্টেজ থেকে নেমে যায়।

প্রসঙ্গত, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টার দিকে অভিনেতা ও গায়ক তাহসান খানের ফেসবুক পেজ থেকে একটি লাইভ আপলোড হয়। কিন্তু আবার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মুছেও ফেলা হয়। ভিডিওটি দেখে ভালোভাবে কিছু বোঝা না গেলেও সেটিতে তাহসানের সঙ্গে অন্ধকারাচ্ছন্ন একটি শোরুমে দেখা যায় অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিনকে।

ভিডিওটি দেখে তাহসানের ফ্যানপেজে ব্যাপক কৌতূহল দেখা যায়। অনেকেই বিভিন্ন ধরনের কমেন্ট করতে থাকেন এবং অনেক ফেসবুক গ্রুপ, মিমপেজ এবং ব্যক্তিগত প্রোফাইলে লাইভের বিষয় নিয়ে মতামত শেয়ার করতে দেখা যায়।
অন্যদিকে তাসনিয়া ফারিণও লাইভ ভিডিও আপলোডের একঘণ্টা পর তার প্রোফাইল থেকে একটি স্ট্যাটাস দেন ‘এত রাতে এ কোথায় ফেঁসে গেলাম। ’

এরপর এই ঘটনাটি নিয়ে বিভিন্ন ধরনের ব্যাখ্যা দেখা যায় সোশ্যাল মিডিয়া, টিভি-নিউজ, বিনোদনমূলক পেজ ও বেশ কয়েকটি খবরের অনলাইন পোর্টাল।

পিএনএস/শাওন