পিএনএস ডেস্ক: ইসরাইলের বিরুদ্ধে ইরান ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর বিশ্বজুড়ে, বিশেষ করে পশ্চিমা নেতারা সমস্বরে যেন কোরাস গাইছেন। নিন্দা জানাচ্ছেন এই হামলার। কিন্তু ১লা এপ্রিল যখন সিরিয়ার দামেস্কে ইরানের কন্স্যুলেট ভবনে ভয়াবহ বোমা হামলা চালালো ইসরাইল, রেভ্যুলুশনারি গার্ডের কমান্ডার মোহাম্মদ রেজা সহ কমপক্ষে ৭ জন সদস্য নিহত হলেন, মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হলো ওই ভবনটি- তখন কি তাদের কণ্ঠে এমন নিন্দার বিন্দুমাত্রও ছিল! এর মধ্য দিয়ে তারা বিশ্বকে কী বার্তা দিলেন- ইসরাইল যত অন্যায় করুক, সেটা বৈধ। পক্ষান্তরে ইসরাইলের বিরুদ্ধে হামলা চালালে, তারা সমস্বরে নিন্দায় ভাসিয়ে দেবেন। কোনো স্বাধীন ভূখণ্ডের বিরুদ্ধে অন্য দেশের হামলা চালানো কোনোক্রমেই সমর্থনযোগ্য নয়। কিন্তু ইসরাইলের জন্য এক নিয়ম, অন্য দেশগুলোর জন্য কেন অন্য নিয়ম! হামাস নিধনের নামে গাজায় ইসরাইল যে গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে, তা বন্ধে তাদের ভূমিকা কী! এক্ষেত্রে তারা বার বার বলছে, ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে। ব্যাস, এই ‘লাইসেন্স’ ব্যবহার করে গাজায় প্রায় ৩৪ হাজার নিরীহ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করে দেয়া যায়! কমপক্ষে ৭৬ হাজার মানুষকে আহত করে পঙ্গু করে দেয়া যায়! নিহত ও আহতদের বেশির ভাগই শিশু ও নারী। এখানে কোনো মানবতা কাজ করে না! এসব মানুষ কি হামাস সদস্য! আসলে হামাসের ধোঁয়া তুলে ইসরাইল পুরো গাজা ভূখণ্ডকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিতে চায়। তারা গাজাকে ‘নির্জন দ্বীপে’ পরিণত করতে চায়। তবে ইরানের বিরুদ্ধে ইসরাইলের পাল্টা আক্রমণে যোগ না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
তাদের এমন সিদ্ধান্তের প্রশংসা করতেই হয়। কারণ, ইসরাইল এখন পাল্টা আক্রমণ চালালে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে নতুন এক যুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে। তা থেকে রেহাই পাবে না বাকি বিশ্ব। এমনও হতে পারে সেখান থেকে শুরু হয়ে যেতে পারে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। ইসরাইলের বিরুদ্ধে ইরানের হামলার জবাবে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে আলোচনা হওয়ার কথা আছে। ইরানে হামলা চালানো হবে কিনা তা নিয়ে ইসরাইলের পার্লামেন্টে রোববার তীব্র বিতর্ক হয়েছে। কিন্তু কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি নেসেট সদস্যরা। গাজায় তাদের হামলা বন্ধ হয়নি। তারা একইভাবে গাজার কেন্দ্রীয় অঞ্চলে নুসেইরা শরণার্থী শিবিরে আবারও বোমা হামলা করেছে। এতে কমপক্ষে ৫ জন নিহত ও কয়েক ডজন মানুষ আহত হয়েছেন।
এতে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরাঁ। তিনি সাবধান করে দিয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যে আরেকটি যুদ্ধ সহ্য করার সামর্থ রাখে না বিশ্ব। ওদিকে দখলীকৃত পশ্চিমতীরজুড়ে সোমবার সকালে অভিযান চালিয়েছে ইসরাইলি সেনারা। সেখান থেকে তারা কমপক্ষে আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তুলকারেম শহরের কাছে ঘেরাও দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৬ জনকে। অন্য দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কাফর নিমা থেকে। শেষোক্ত ব্যক্তিকে ভয়াবহ নির্যাতন করেছে ইসরাইলি সেনারা। নাবলুস শহরের দক্ষিণে ইয়াতমা, ক্বলকিলিয়া, হেব্রনের উত্তরে বেইত উম্মর শহরেও ঘেরাও দিয়েছে ইসরাইলিরা। বেইত উম্মরে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। সেখানে ইসরাইলি সেনারা সরাসরি গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে।
পিএনএস/আনোয়ার
ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে, ইরান বা ফিলিস্তিনের নেই?
15-04-2024 12:30PM