ইসরাইলের সামরিক গোয়েন্দা প্রধানের পদত্যাগের নেপথ্যে

  23-04-2024 02:37PM



পিএনএস ডেস্ক: ইসরাইলের সামরিক গোয়েন্দা প্রধান মেজর জেনারেল আহারন হালিভা পদত্যাগ করেছেন। গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের হামলা ঠেকাতে ব্যর্থতার দায় নিয়ে তিনি পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।

ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি ইসরাইলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতির বরাত দিয়ে সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।

এতে বলা হয়, সামরিক গোয়েন্দা প্রধান হিসেবে ৭ অক্টোবরের ঘটনার ব্যর্থতার দায় নিয়ে হালিভা ইসরাইলের সেনাপ্রধানের সঙ্গে আলাপ করে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেওয়ার অনুরোধ জানান। এরই পরিপ্রেক্ষিতে নিয়ম অনুসারে ও পেশাগত প্রক্রিয়া মেনে উত্তরসূরি নিয়োগের পর হালিভা তার দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন এবং তিনি অবসরে যাবেন, এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে।

পদত্যাগ করলেন ইসরাইলের সামরিক গোয়েন্দাপ্রধান-

ইসরাইলি সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরাইলি সামরিক বাহিনীতে ৩৮ বছরের পেশাগত জীবন হালিভার।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পদত্যাগপত্রে ৭ অক্টোবরের হামলা ঠেকাতে না পারার কথা উল্লেখ করেছেন হালিভা। হামলার পর পরই সরে দাঁড়াতে তার ওপর চাপ ছিল। তবে গাজায় সামরিক অভিযানের বিষয়টি বিবেচনা করে তিনি দায়িত্ব পালন করে গেছেন। গাজায় চলমান যুদ্ধের ছয় মাস পার হওয়ায় হালিভার সরে দাঁড়ানোর পেছনে অন্য কারণও আছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

ইসরাইলের হারেৎজ পত্রিকার কলাম লেখক আকিভা এলদার বলেন, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু অচিরেই গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করতে চান না বলে পদত্যাগ করে থাকতে পারেন সামরিক গোয়েন্দা প্রধান। অন্য কারণটি হতে পারে যে জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে আগ্রহী নন প্রধানমন্ত্রী।

আকিভা আরও বলেন, নেতানিয়াহু হলেন সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। হামাসের হামলা ঠেকানোর ব্যর্থতার দায় তিনি কখনো স্বীকার করেননি। তাই নেতানিয়াহুকে ব্যক্তিগতভাবে একটি বার্তা দিতে চেয়েছেন হালিভা।

সামরিক গোয়েন্দা প্রধানের পদত্যাগের ঘটনায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভ আরও জোরদার হবে। এতে যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সদস্য বেনি গানৎজ ও গাদি আইজেনকটের ওপরও চাপ বাড়বে।

আকিভা বলেন, এই পদত্যাগের ফলে মন্ত্রিসভায় থাকার উপযুক্ত কারণ আছে- নিজের নির্বাচনি এলাকার ভোটারদের এমনটা বোঝানো তাদের জন্য কঠিন হবে।

এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক আরও বলেন, যদি হালিভা মনে করতে পারেন যে বিদায় বলার সময় হয়েছে, তাহলে অনেকেই তাদেরও (বেনি ও গাদি) সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাবেন। কারণ, ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে এই সংঘাত অবসানের কৌশলগত ঘাটতির সঙ্গে তারাও জড়িত।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরাইলে আকস্মিকভাবে প্রাণঘাতী হামলা চালায়। ইসরাইলের সরকারি তথ্য অনুয়ায়ী, হামাসের হামলায় ১ হাজার ১৭০ জন নিহত হয়েছেন।

জবাবে সেদিন থেকেই ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরাইল। গতকাল গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরাইলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৪ হাজার ১৫১ জন নিহত হয়েছেন। যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।


পিএনএস/এমএইউ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন