মহানবীর (স.) হাসি যেমন ছিল

  10-09-2023 10:34AM

পিএনএস ডেস্ক: একজন মুসলিম ব্যক্তি সব সময়ই রাসূলকে অনুসরণ এবং অনুকরণ করার চেষ্টা করেন। রাসুল স. কে আল্লাহ তায়ালা বার্তা বাহক পাঠিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা দিয়েছেন। রাসুল স. আল্লাহর পক্ষ থেকে পাওয়া শিক্ষা আবার মানুষের মাঝেও ছড়িয়ে দিয়েছেন।

রাসুল কেমন করে হাসতেন, কীভাবে কথা বলছেন। কীভাবে চলতেন এগুলো সবই নজিবীর উন্মদদের আকৃষ্ট করে। তেমনই এক অনুসঙ্গ হলো হাসি। কারণ হাসি মানুষের ব্যক্তিত্বের বহিপ্রকাশ। আল্লাহর তরফ থেকে যখন কোনো সুংবাদ আসত তখন রাসুলের চোহার দেখেই সাহাবীরা বুঝে ফেলতেন।

নবী করিম (স.)হাসিখুশির ভঙ্গিও ছিল তার ব্যক্তিত্বের খুবই জরুরি অনুষঙ্গ। এ সম্পর্কিত বেশকিছু হাদিস রয়েছে।

ইবনে মালেকের (র.) ঘটনা অনেকেরই জানা আছে। তাবুক যুদ্ধে শরিক না থাকায় তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। পরে যখন আল্লাহ তার তাওবা কবুল করেন। সে সময়ে নবীজির অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি নিজেই বলেছেন, আমি নবীজিকে সালাম দিলাম, আনন্দে তার চেহারা ঝলমল করছিল। তিনি বললেন, ইতোমধ্যে তোমার কেটে যাওয়া জীবনের ওপর সুসংবাদ গ্রহণ করো...। (বুখারি, হাদিস: ৪৪১৮)

কাব (র.) বলেন, রাসুল (স.) আনন্দিত হলে তার চেহারা এমন আলোকিত হয় মনে হয় যেন এক টুকরো দীপ্তিমান চাঁদ। দেখামাত্রই আমরা তার আনন্দ বুঝতে পারতাম। (বুখারি, হাদিস: ৪১৪১)

আয়েশা (র.) বলেন, আমি রাসুল (স.)-কে কখনো এমনভাবে হাসতে দেখিনি যাতে তার মুখের আলজিভ দেখা যায়। তিনি বরং সবসময় মুচকি হাসতেন। (মুসলিম, হাদিস: ৪১৯)

নবীজির (সা.) সঙ্গে সাহাবিদের মজলিসের চিত্র বর্ণনা করতে গিয়ে জাবের ইবনে সামুরা (রা.) বলেন, সাহাবিরা জাহেলি যুগের আলোচনা করে সশব্দে হাসতেন। কিন্তু রাসুল (সা.) কেবল মৃদু হাসতেন। (বুখারি, হাদিস: ১৯৩৬)

হাসার সময় রাসুল (সা.)–এর দু পাশের দাঁত প্রকাশ পেত না বলেই জানা যায়।

হাসির বৈশিষ্ট্য

ইবনুল কাইয়িম (র.) বলেন, নবীজির (স.) হাসি ছিলো মুচকি হাসি। তিনি সাধারণভাবেই মৃদু হাসতেন। হাসিতে দুই পাশের দাঁত দেখার ঘটনা ছিল স্বল্প। (ফাতহুল বারী, খণ্ড ১০, পৃষ্ঠা ৫০৪)

নবীজি (স.) সবসময় হাস্যোজ্জ্বল চেহারা ও প্রশস্ত হৃদয় নিয়ে মানুষকে স্বাগত জানাতেন। ফলে তার সাহাবিরা ভাবতেন, তিনিই নবীজির (স.) সবচেয়ে প্রিয়। জারির ইবনে আবদুল্লাহ (র.) বলেন, ইসলাম গ্রহণের পর যখনই আমি তার কাছে যেতাম, তিনি আমাকে দেখলেই তিনি চেহারায় মুচকি হাসি ছড়িয়ে দিতেন। (বুখারি, হাদিস: ৩০৩৫)

হাসিমুেখে কথা বলাতে রয়েছে সওয়াব। আবু যর (র.) বলেন, নবীজি (স.) আমাকে বলেছেন, কোনো সৎকাজকে তুচ্ছ মনে কোরো না, যদি তা তোমার ভাইয়ের সঙ্গে হাসিমুখে সাক্ষাতের মতো বিষয়ও হয়ে থাকে। তোমার ভাইয়ের সামনে তোমার মুচকি হাসিও সদকা। (মুসলিম, হাদিস: ২৬২৬)

অকারণে হাসতে রাসূল (স.) নিরুৎসাহিত করেছেন। আবু হোরায়রা (র.) বর্ণনা করেন, নবীজি (স.) বলেছেন, তোমরা বেশি হেসো না। কেননা, বেশি হাসি অন্তরকে নির্জীব করে দেয়। (তিরমিজি, হাদিস: ১৯৭০)

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন