হিজাব ইসলামী সভ্যতার নিদর্শন

  20-06-2024 10:45AM



পিএনএস ডেস্ক: সভ্যতা ও শালীনতাবোধ থেকেই পোশাকের রীতি চালু হয়েছে। লজ্জাস্থান ঢাকার প্রয়োজনেই মানুষ পোশাক পরিচ্ছদ তৈরির পথে হেঁটেছে। কালক্রমে যা পাচ্ছে সভ্যতা সংস্কৃতির মর্যাদাও।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, আদিকালে এক সময় মানুষ জামা কাপড়ই পরিধান করত না। এমনকি পোশাকের প্রয়োজন বোধও তাদের ছিল না। সর্বোচ্চ তারা গাছের ছাল বাকল ও পাতার আবরণে শরীর ঢেকে রাখতে সচেষ্ট হতো। এরপর মানুষ সুতা থেকে কাপড় তৈরি করতে শিখল। পোশাক তৈরি করতে শিখল। শরীরকে ঢেকে রাখার জন্য তারা বিভিন্ন ধরনের জামাকাপড় বানাতে শুরু করল। এভাবেই মানবসভ্যতার সূচনা হয়। আমরা পোশাকের মাধ্যমেই জানতে পারি বিভিন্ন দেশ জাতি ও বর্ণের রুচি ও সংস্কৃতি সম্পর্কে। আমাদের পরিধেয় কাপড় ও পোশাক আমাদের রুচি ও সভ্যতার পরিচয়। এক একটি জাতির সাংস্কৃতিক পরিচয় ও সংস্কৃতি বিনিময়ের মাধ্যম।

খুব বেশিদিন আগের কথা নয়, নব্বইয়ের দশকেও ইউরোপ আমেরিকার নারীরা লম্বা জামা পরতেন। ভারতীয় সনাতন ধর্মাবলম্বী ব্যতিক্রম কিছু ব্যতীত অতীত থেকেই রাজা-প্রজা নারী-পুরুষ সবাই লম্বা জামাকাপড় পরতেন। এমনকি পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যেও অনেক খ্রিষ্টান নারী মুখ ঢেকে চলাফেরা করেন। কেউবা বোরকা পরেই বের হন। এখনো রক্ষণশীল অনেক ইহুদি নারী তাদের ধর্মীয় অনুশাসন মেনে আপাদমস্তক ঢেকে বাইরে চলাফেরা করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়াতে খ্রিষ্টান নারীদেরকে ধর্মীয় কারণে মুখচ্ছবিবিহীন আইডি কার্ড দেয়া হয়েছে। আজকের এ বিজ্ঞানের যুগেও এমনটি নারীর অধিকারই বটে, যা নারীদেরকে পরপুরুষের সামনাসামনি হতে সংরক্ষণ করে। আমাদের নারীদের জন্যও হিজাব-নিকাব কখনো বাধার কারণ হতে পারে না। ধর্মীয় এ বিধান পালনেও কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকা উচিত নয়।

বেপরোয়া বেপর্দা চলাফেরা ও অশালীন পোশাকই অনাচার ব্যভিচার বৃদ্ধির জন্য দায়ী। সিসিলির যৌন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার স্টিফেন ক্লার্কও এমন দাবি করেছেন তার গবেষণায়।

ইসলাম আমাদেরকে সভ্যতা ও সুস্থ সংস্কৃতি শিক্ষা দিয়েছে। হিজাব-নিকাব ইসলামী সভ্যতার অন্যতম নিদর্শন। ইসলাম পুরুষদেরকে যেমন বলে, তাদের দৃষ্টি হিফাজত করতে। পরনারী থেকে দৃষ্টিকে বিরত রাখতে। তেমনি নারীদেরকে নিরাপদ নিরাপত্তায় রাখতে গৃহে অবস্থানের কথা বলে ইসলাম।

এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা সতর্ক করে নারীদেরকে ঘরে অবস্থান করতে বলেছেন। তবে প্রয়োজনে বাইরে বেরুতে হলে রয়েছে পর্দা ও শালীনতার সাথে বের হওয়ার নির্দেশনা। ‘আর তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করবে; প্রাচীন জাহেলি যুগের মতো নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না। তোমরা সালাত কায়েম করবে ও জাকাত প্রদান করবে। আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অনুগত থাকবে। হে নবী পরিবার! আল্লাহ তায়ালা শুধু চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র করতে।’ (সুরা আহজাব-৩৩)

লেখক : খতিব, ভবানীপুর মাইজপাড়া হক্কানি জামে মসজিদ, গাজীপুর


পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন