আদালতে মেয়ে জন্য বাবার কান্না, সে যেতে চায় কানাডা

  13-04-2022 01:54PM

পিএনএস ডেস্ক : ১৯ বছরের তরুণী আর এক মুহূর্তও তার বাবা-মায়ের কাছে বাংলাদেশে থাকতে চান না। তিনি কানাডা যেতে চান। তাই আদালত আজই আদেশ দিয়ে তাকে কানাডিয়ান দূতাবাসে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে।

বুধবার (১৩ এপ্রিল) ১৯ বছর বয়সী কানাডিয়ান তরুণীকে গৃহবন্দি রাখার অভিযোগের রিটের শুনানিতে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ মন্তব্য করেন।

এ সময় তরুণীর বাবা কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমি নিজেই আমার মেয়েকে কানাডা নিয়ে যেতে চাই। ও আর কয়েকটি দিন আমাদের কাছে থাকুক।’ বিচারপতিরাও এ সময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

তখন আদালত বলেন, ‘আপনার মেয়ের সাথে কথা বলুন। সে যদি আপনাদের সাথে থাকতে চায়, তাহলে আমরা রোববার আদেশ দেব। অন্যথায় আজই আদেশ দিয়ে তাকে কানাডা দূতাবাসে পাঠিয়ে দেব। কারণ সে এক মুহূর্ত আপনাদের কাছে থাকতে চান না। সত্যিই বড় কঠিন।’ এরপর আদালত শুনানি দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত মুলতবি করেন।

এর আগে সকালে কানাডা হাইকমিশনারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশি বাবা মায়ের সন্তান ১৯ বছরের কানাডিয়ান তরুণীর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা, থাকা খাওয়ার খরচ বহনসহ সব ধরনের নিরাপত্তা দেবে কানাডা সরকার।

হাইকোর্টকে লিখিতভাবে কানাডা হাইকমিশনার পক্ষ হয়ে এ তথ্য জানান রিটের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন। পরে এজলাস কক্ষে বিচারক একান্তে তরুণীর কথা শোনেন।

গতকাল হাইকোর্ট বলেছিলেন, ১৯ বছরের প্রাপ্ত বয়স্ক তরুণী বাবা-মা ছেড়ে কানাডা যেতে চান। তাকে আটকে রাখা যাবে না। তবে তরুণীর নিরাপত্তা কানাডা সরকারকেই নিশ্চিত করতে হবে।

উল্লেখ্য, গত ৫ এপ্রিল রাজধানীর উত্তর মুগদায় ১০ মাস ধরে বাবা-মায়ের বাসায় গৃহবন্দি থাকা ১৯ বছরের কানাডিয়ান তরুণীকে হাজির করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। মুগদা থানার পুলিশ ও তার বাবা-মাকে তরুণীকে হাজির করতে বলা হয়।

একইসঙ্গে ১৯ বছরের তরুণীর অসম্মতিতে তাকে ১০ মাস ধরে আটক রাখা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।

রিটের নথি থেকে জানা যায়, ১৯ বছরের ওই তরুণীর জন্ম কানাডায়। তিনি জন্মসূত্রে কানাডার নাগরিক। কানাডার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। তার বাবা-মাও কানাডায় থাকতেন। ১০ মাস আগে তার বাবা-মা বেড়ানোর কথা বলে তাকে নিয়ে বাংলাদেশে আসেন। এরপর ওই তরুণী কানাডায় ফিরে যেতে চাইলেও তাকে যেতে দেওয়া হয়নি।

রিট আবেদনে বলা হয়েছে, তরুণীর কাছ থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে তাকে তার নানি ও মা সবসময় বাসায় বন্দি করে রাখেন। এক পর্যায়ে ওই তরুণী ল্যান্ড ফোনে কানাডা সরকার ও ঢাকায় কানাডিয়ান হাইকমিশনকে তাকে জোরপূর্বক ঘরবন্দি করে রাখার কথা জানান। ওই তরুণী কানাডায় ফিরে যাওয়ার ইচ্ছার কথা জানান।

গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর মুগদা থানায় কানাডিয়ান হাইকমিশন থেকে সাধারণ ডায়েরি করা হয়। তারপর হাইকমিশনের পক্ষে মানবাধিকার সংগঠন ব্লাস্ট, আইন ও সালিশ কেন্দ্র হাইকোর্টে রিট করে। রিটে পুলিশের আইজি, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, মুগদা থানার ওসি, ওই তরুণীর বাবা-মাকে বিবাদী করা হয়।

পিএনএস/আলাউদ্দিন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন