ডান পায়ের পরিবর্তে বাম পা কাটা সেই ডাক্তারের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ

  13-11-2022 11:25PM

পিএনএস ডেস্ক : ঝিনাইদহের আব্দুল মান্নান ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় পাড়ি জমিয়েছিলেন মালয়েশিয়ায়। কিন্তু বিধি বাম। সেখানে নির্মাণকাজ করার সময় পড়ে গিয়ে তার ডান পা ভেঙে যায়। এরপর চিকিৎসার জন্য দেশে ফিরে আসেন মান্নান। দ্বারস্থ হন পঙ্গু হাসপাতালের।

তবে সেখানকার চিকিৎসক ডা. করিম রেজা তাকে শ্যামলীর ঢাকা সেন্ট্রাল ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হতে বলেন। সেখানেই চিকিৎসার নামে ডান পায়ের বদলে তার বাম পা কেটে ফেলা হয়।

এ ঘটনার পর ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিলেও প্রতারণার শিকার হন ২২ বছর বয়সী এ যুবক। দ্বারস্থ হন উচ্চ আদালতের।

ভুল চিকিৎসায় আব্দুল মান্নানের ডান পায়ের বদলে বাম পা কেটে ফেলা কেন অবৈধ হবে না এবং তাকে কেন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না- তা জানতে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এ ঘটনায় বিএসএমএমইউ’র অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধানের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের খুঁজে বের করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আগামী দুই মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

রোববার (১৩ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আব্দুল মান্নানের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ফখরুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম (মাসুদ)।

এর আগে আব্দুল মান্নানের পা কেটে ফেলার ঘটনায় চলতি বছরের আগস্টে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ ও ডা. এম আর করিম রেজার সনদ বাতিল চেয়ে রিট করা হয়। রিটে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক (ডিজি), বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস চেয়ারম্যান, সচিব, ডা. এম আর করিম রেজা, অ্যাকটিভ মেডিকেল কলেজেন ডাক্তার মো. নাজিম আজাদকে বিবাদী করা হয়।

আদালত প্রাঙ্গণে এসে ভুক্তভোগী আব্দুল মান্নান বলেন, পা কেটে ফেলার ঘটনায় চিকিৎসক আমাকে ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে মামলা করতে মানা করেছিলেন। বলেছিলন মামলা করলে চাকরি যাবে তার। পরে এ বিষয়টি বিবেচনা করে আমার পরিবার ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা থেকে বিরত থাকে। আমাকে এককালীন দশ লাখ টাকা দেওয়ার কথা ছিল। পরে প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা করে পরিশোধ করার কথা ছিল। কিন্তু ৩ লাখ টাকা দেওয়ার পর বাকী টাকা পরিশোধ করেননি।

পা কাটার বিষয়ে মান্নান বলেন, আমি মালয়েশিয়ায় নির্মাণশ্রমিক হিসেবে কাজ করার সময় ওপর থেকে পড়ে গিয়েছিলাম। এটি ২০১৯ সালের ঘটনা। পরে আমি চিকিৎসার জন্য দেশে আসি। ডাক্তার রেজার কাছে যাই। তখন তিনি আমাকে বলেন, তোমার পা প্লাস্টিক সার্জারি করো। দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবে। আমি চিন্তা করলাম এরকম চিকিৎসা নিয়ে আমি দ্রুত মালয়েশিয়া যেতে পারবো। আয় করে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবো।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন