কে এই আলোচিত শিলাস্তি রহমান

  25-05-2024 04:25PM

পিএনএস ডেস্ক: কলকাতায় ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারকে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার তিন আসামির আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল শুক্রবার আদালতে তোলার সময় ক্যামেরা দেখে মুখ লুকাতে থাকেন শিলাস্তি রহমান। পরে তাকে আদালতের ডকে তোলা হলে তিনি কাঁদতে থাকেন। আদালতে শুনানির আগে শিলাস্তি রহমান বলেন, আমি কীভাবে আসামি হই, জিজ্ঞাসা করেন। আমি শুধু ওই বাসায় ছিলাম। তাছাড়া কিছুই জানি না।

জানা গেছে, এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যায় নাম আসা নারী শিলাস্তি রহমান চেয়েছিলেন মডেল হতে। কিন্তু পুরান ঢাকার এই তরুণী বিত্তশালী আক্তারুজ্জামান শাহীনের খপ্পরে চলে যান অন্ধকার জগতে। মার্কিন পাসপোর্টধারী শাহীন দেশে এলেই ঘুরে বেড়াতেন তার সঙ্গে। বিভিন্ন পার্টিতে অংশ নিতেন শাহীনের ফ্ল্যাটে। কলকতায় এমপি আনার খুন হওয়ার পর মাস্টারমাইন্ড শাহীনের বান্ধবী হিসেবে নাম আসে এই শিলাস্তি রহমানের, যার আরেক নাম সেলে নিস্কি।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ১৩ মে কলকাতায় এমপি আনার খুন করার পর ১৫ মে ঢাকায় চলে আসেন প্রধান কিলার আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়া। তার সঙ্গে একই ফ্লাইটে কলকাতা থেকে ঢাকায় ফেরেন শাহীনের বান্ধবী শিলাস্তি রহমান। বিমানবন্দর থেকে চলে যান শাহীনের ঢাকার একটি অভিজাত ফ্ল্যাটে। এমপিকে খুন করে সফল হওয়ায় ওই রাতেই শাহীন সেখানে ফুর্তি পার্টির আয়োজন করেন। সেখানে মনোরঞ্জন করেন এই শিলাস্তি ওরফে সেলে নিস্কি। এর আগে ৩০ এপ্রিল শাহীনের সঙ্গে গিয়েছিলেন কলকাতায়। ১০ মে শাহীন দেশে ফিরলেও শিলাস্তিকে রাখা হয় কলকাতাতেই।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শিলাস্তির গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের নাগরপুরে। তবে তিনি বড় হয়েছেন পুরান ঢাকায়। অবশ্য বিত্তশালীদের ডেরায় গিয়ে নিজেও থাকতেন উত্তরার অভিজাত ফ্ল্যাটে। সূত্র আরও জানায়, এই শিলাস্তিকে দিয়েই এমপি আনারকে কলকাতা নেওয়ার ফাঁদ পাততে পারেন খুনের মাস্টারমাইন্ড শাহীন। হয়তো ওই হানি ট্র্যাপেই পা দিয়ে নিজের জীবন দিয়েছেন এমপি আনার।

এদিকে, এমপি আনার কলকাতার সঞ্জীবা গার্ডেনের যে ফ্ল্যাটে গিয়েছিলেন তার একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, এমপি আনার দু’জনের সঙ্গে সেখানে গিয়েছিলেন। কিন্তু জীবিত আর বের হননি। ফুটেজ অনুযায়ী, ১৩ মে দুপুর ২টা ৫১ মিনিটে সঞ্জীবা গার্ডেনের আলোচিত সেই ফ্ল্যাটে ঢোকেন এমপি আনার। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন শিমুল ভুঁইয়া ও তার সহযোগী ফয়সাল। এমপি আনার বেশ শান্তশিষ্টভাবে দরজার বাইরে র‍্যাকে তার জুতা রাখেন। পরে ফ্ল্যাটে ঢোকেন তিনি।

কয়েক ঘণ্টা পর বের হয়ে আসেন শিমুল ভুঁইয়া ওরফে আমানুল্লাহ, হাতে ছিল একটা লাগেজ। এরপর তার সঙ্গে পলিথিনের ব্যাগ হাতে বের হন আরেকজন। বের হওয়ার সময় শিমুল দরজা দিয়ে লক করে দেন। লিফট দিয়ে নেমে তারা বের হয়ে যান।

গোয়েন্দাসূত্রে বলা হয়, এমপি আনর হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক আখতারুজ্জামানের কলকাতায় যাওয়ার দুই মাস আগেই জিহাদকে ডেকে আনা হয়। জিহাদ জানিয়েছে- আখতারুজ্জামানের নির্দেশে তিনিসহ চারজন এমপি আনারকে ফ্ল্যাটে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। হত্যার পর এমপি আনারের শরীর থেকে মাংস এবং হাড় আলাদা করে জিহাদ। পরে মূলত পরিচয় নষ্ট করার জন্য এমপির মাংস কিমা করে তা প্লাস্টিকের ব্যাগে রাখা হয়। আর হাড়গুলোকে ছোট ছোট টুকরো করে নেওয়া হয়। পরে ওই ব্যাগগুলো ফ্ল্যাট থেকে বের করে নানা ধরনের যানবাহন ব্যবহার করে কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চলে ফেলে দেওয়া হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, জিহাদ হাওলাদার (২৪) একজন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী। তার বাড়ি খুলনা জেলার দিঘলিয়া থানায়। তার বাবার নাম জয়নাল হাওলাদার। তবে জিহাদ বসবাস করত ভারতের মুম্বাই শহরে। সেখানে সে একটি মাংসের দোকানে কসাইয়ের কাজ করত।

এসএস

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন