‘মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার মানুষকেও কথা বলতে বাধা দিচ্ছে সরকার’

  09-12-2023 09:53PM

পিএনএস ডেস্ক: দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার মানুষকে সরকার কথা বলতেও বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। শনিবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপরক্ষে এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে এই অভিযোগ করেন তিনি।

রিজভী বলেন, গুম-খুন-ক্রসফায়ারের শিকার হওয়া স্বজনদের সংগঠন মায়ের ডাকের উদ্যোগে আজ সকালে জাতীয় জাদুঘরের সামনে দাঁড়িয়ে স্বজনরা তাদের আকুতি ও মর্মান্তিক পরিস্থিতির কথা বলতে চেয়েছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার নির্দেশে আওয়ামী গুমপন্থী পুলিশ সেখানে তাদের দাঁড়াতে দেয়নি, টেনে-হিঁচড়ে বের করে দিয়েছে।

তিনি বলেন, আজ গুম-খুন-মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার ব্যক্তিরা তাদের কথা বলতে পারে না। এক ভয়ংকর গুমের সরকার, ক্রসফায়ারের সরকার, মানবাধিকার লঙ্ঘেনের সরকার… রাষ্ট্রশক্তি নিয়ে এমনভাবে টিকিয়ে রাখতে চায় যাতে সরকারের অপরাধের বিরুদ্ধে কেউ যেন টু-শব্দও না করতে পারে। এজন্য তারা বিস্তার করেছেন এক ব্যাপক নেটওয়ার্ক।

রিজভী আরও বলেন, আসুন সাহস-আশা ও দৃঢ় সংকল্পের মনোভাব নিয়ে আমরা চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে বিজয়ের পথে ধাবিত করি। অগণতান্ত্রিক আওয়ামী নাৎসীদের অন্তঃসারশূন্য অপপ্রচারের মায়াজাল ভেদ করে স্বাধীনতা ও উদার মনোভাবের গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অক্লান্ত উদ্যোম অব্যাহত থাকবে।

এই জাতি কোনোদিনই স্বেচ্ছাতন্ত্রের কাছে আত্মসমর্পণ করেনি- এমন দাবি করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, গণতান্ত্রিক শক্তির কল্পনা ও আশা সর্বদা সজীব ও সক্রিয়। তাই বর্তমান আদর্শের সংগ্রামে আমরা বিজয়ী হবই।

গত ৪ ডিসেম্বর রাতে তেজগাঁও কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশতাক হোসেনকে সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য তুলে নেওয়ার ঘটনা উল্লেখ করে অবিলম্বে তাকে জনসমক্ষে হাজির করার দাবি জানান রিজভী।

বর্তমান আইজি প্রিজনকে দলবাজ উল্লেখ করে তিনি বলেন, কারাগারে বর্তমানে যে আইজি প্রিজন আছেন তিনি বিএনপির বন্দিদের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন। আইজি প্রিজন এমন ধরনের মানুষ যিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে নিজের অবস্থান আরো দৃঢ় করার জন্য তিনি শপথ নিয়েছেন। কারাগারের ভেতরেও বিএনপির নেতাকর্মীদের তিনি জুলুম করবেন, নির্যাতন করবেন এবং বন্দিদের যে মানবাধিকার সেটিকে চরমভাবে লঙ্ঘন করবেন। আজকে তিনি সারা দেশের কারাগারগুলোতে আরেকটি হিটলারের গ্যাস চেম্বার বানিয়েছেন, কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প করেছেন।

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, শেখ হাসিনা কারাগারগুলো পরিপূর্ণ করবেন বিএনপির নেতা-কর্মীদের দিয়ে। কারাগারগুলোতে তিনি (শেখ হাসিনা) বেছে বেছে এমন অফিসারদের নিয়োগ দিয়েছেন যারা শেখ হাসিনার ভাবধারায় অনুপ্রাণিত। শেখ হাসিনা যা চান অর্থাৎ বিএনপির নেতা-কর্মীরা উৎপীড়িত হোক, নির্যাতিত হোক, অত্যাচারিত হোক… ওরা বাইরে যেমন নির্যাতিত হয়, ওরা ধরা পড়ার পরে রিমান্ডে পুলিশ হেফাজতে মর্মান্তিক ও ভয়ংকরভাবে নিপীড়ন করা হয়। এখন কারাগারের ভেতরেও ভয়ংকরভাবে নিপীড়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকছে। এই নিপীড়ন নজিরবিহীন। এই নিপীড়ন ভাষায় বলা যাবে না। অতি উৎসাহী অফিসারেরা একপ্রকার দলীয় বন্দিদের ওপর যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।

পিএনএস/সোহান

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন