২রা মার্চ ঐতিহাসিক পতাকা উত্তোলন দিবস

  17-04-2017 02:49PM



পিএনএস: আসম আব্দুর রব, নূরে আলম ছিদ্দিকী, শাহজাহান সিরাজ ও আ: কুদ্দুস মাখন, এ চার ছাত্র নেতা পাকিস্তান আমলে চার খলিফা নামে খ্যাত। ৬ দফা ও ১১ দফাসহ সকল আন্দোলন সংগ্রামে শোচ্চার নেতৃত্ব ও নিয়ামক শক্তি ছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মবিশ্বাসী, সংগ্রাম ও তৎকালীন ছাত্র সমাজের প্রান শক্তি ছিলেন ওরা। তৎকালীন ও ইয়াইয়া ও পাকিস্তান সরকারের আতঙ্ক ছিলেন এই চার খলিফা। প্রভুত অনৈতিক ও লোভনীয় আশ্বাশে পদাক্ষাতকারী, বাঙ্গালী চেতনায় সমৃদ্ধ ও শোচ্চার ছিলেন তারা। এমনকি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সকল আন্দোলন সংগ্রামে দুর্জয় ছাত্র নেতৃত্ব ও ব্যক্তিত্ব ছিলেন চার নেতা।

একদিকে আন্দোলন সংগ্রাম বিরামহীন চলছে অপর দিকে ১৯৭১ সালের ২রা মার্চ এর পূর্বে ইকবাল হলে (সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে) বসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে ভিপি জনাব আসম আব্দুর রবসহ ওরা বেশ কজন ছাত্র নেতা স্বাধীনবাংলার পতাকার রং ও রুপ রেখা নিবর্ধারণ করেন।

সেই মোতাবেক ২রা মার্চ ১৯৭১, জনাব আসম আব্দুর রব ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে ঐতিহাসিব বটতলায় স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন।

সে সময় আন্দোলন, সংগ্রামের রুপকার ও পতাকা উত্তোলনের সাথে যারা সম্পৃক্ত ছিলেন, সকলেই দেশ ও জাতীয় মুক্তির প্রয়োজনে অঙ্গিকারবৃদ্ধ ছিলেন। সেই দিনটিকে আজ ঐতিহাসিক দিন হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। অত্যান্ত দু:খ ও পরিতাপের বিষয় হলো, এই দিনটি যাদের কারণে ঐতিহাসিকতা ও স্বীকৃত হলো সেই মানুষগুলোকে স্বীকৃতি থাকুক দূরের কথা,এই জাতীয় পার্বনটিতে নূন্যতম স্বরণ করা ও যেন কষ্ট সাধ্য ব্যাপার হয়ে দাড়িঁয়েছে।

এই সংকীনতার কারণ খোজাঁ একেবারে স্বাভাবিক। কারণ বাংলাদেশের রাজনীতিতে সংস্কৃতির আমৃল পরিবর্তন। স্বাধীনতার পর ১৯৭৫ সালের সেই হৃদয় বিদারক ঘটনা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে সময়ে অগ্রতান্ত্রিকভাবে হাত বদল সর্বপরি ১৯৯১ সালের পর থেকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ক্ষমতায় আসা ও থাকার প্রতিযোগিতায় অরাজনৈতিক অবৈধ অর্থশালী, পাকিস্তানী ভাবধারার নেতাদের রাজনীতিতে আত্মীয়করণ, আমলা ও সন্ত্রাসীদের রাজনীতিতে অনুপ্রবেশ ও নিয়োগ দানই আমাদের রাজনীতিকে কৌলসিত করেছে।

উপরুল্লেখিত স্বনের ও বৈশিষ্টের বৈখন্ড বাবুদের দলে টেনে এনে দলকে শক্তিশালি করা যাবে এ অনৈতিক ঘৃন্য ধারনা চিন্তা চেতনায় ও উচ্চাভিলাসই রাজনীতিতে গুনীজন ও সত্যিকারের দেশপ্রিয় ব্যক্তিদের অবমুল্যায়ীত করেছে।

এত রক্ত ও এত ইজ্জ্বতের বিনীময়ে আমরা একটি লাল সবুজের পতাকা সম্বলীত দেশ অর্জন করেছি, এদেশের মানুষের চিন্তা চেতনার আদতে দেশ পরিচালিত হবে। গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন দল ও মোর্চা গঠন হবে এমনকি বিভিন্ন মতের পার্থক্য থাকতেই পারে।
বিভিন্ন দল ও মতের পার্থক্যের কারণে ঘাত প্রতিঘাত সংঘাত হলেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানাদিতে দল মতের উর্দ্বে উঠে সকল দলের নেতাকর্মীরা আমন্ত্রিত হইতেন। স্বাধীনতা সংগ্রামে কিংবা বিভিন্ন আন্দোলন ও সংগ্রামে অবদানের জন্য সম্মানীত, প্রশংশীত ও মুল্যায়িত হতেন। ১৯৯০ সালের পর থেকে তথাকথিত গণতন্ত্রের বলয়ে এই অপসংস্কৃতি চালু হয়েছে। বিগত ২৬ বছর যাবৎ আমরা এই অপসংস্কৃতি দেখে আসছি।

অনুপ্রবেশকারীরা রাজনীতিতে পা রাখার পরই আমাদের রাজনীতিতে নতুন সংস্কৃতি চালু হয়েছে। গুনীজনদের মুল্যায়ন দূরের কথা, ভাই অন্য দল করে কেন তার সাথে সম্পর্ক রাখা যাবে না। অন্যদল করে কেন তার সাথে আত্মীয়তা করা যাবে না। মরে গেলে জানাযায় অংশ নেওয়া যাবে না। এমন ঘটনা ও বাংলার রাজনীতিতে ঘটেছে।

আমরা ধর্মীয় অনুভ’তির আদতে ও বিভিন্ন মনিষীদের মাধ্যমে জানতে ও বুঝতে পেরেছি, যিনি শক্র কিংবা প্রতিপক্ষের ভাল কাজের প্রসংশাও মূল্যায়ন করে না। তার ভাল কাজের মূল্যায়ন ও হয় না। আসুন আমরা রাজনীতি, সমাজনীতি, অর্থনীতি ও সর্বাবস্থায় আমদানী করা অপসংস্কৃতির পরিবর্তন করত: সঠিক রাস্তায় ফিরিয়ে আসি।

দেশ, জাতীর ও ভবিষ্যৎ বংশধরদের সামনে একটি দৃষ্টান্ত রাখি।

লেখক: রাজনীতিক ও সমাজ সেবক, সাবেক সভাপতি,
বাংলাদেশ আন্ত: বি: বি: ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন,
সহসভাপতি, কচুয়া কল্যাণ সংঘ-ঢাকা।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন