এলিয়ানরাই এসব সংকেত পাঠাচ্ছে?

  04-12-2016 07:45PM

পিএনএস: সম্প্রতি একটি খবর সবাইকে বেশ উত্তেজিত করেছে। মহাশূন্যের কোনো এক স্থান থেকে অদ্ভুত কিছু সংকেত আসছে পৃথিবীতে।

তবে এমন সংকেত অনেক সময় আসে এবং তা নিয়ে বেশ আলোচনা হয়। দেখা গেছে,প্রতি ছয় মাস অন্তর একবার এ বিষয়ে নিয়ে আলোচনা চলে।

তবে এবারের সংকেতটি অনেক স্পষ্ট এবং খেয়াল করে দেখার মতো। এই সংকেত স্পষ্ট হয়ে এসেছে সূর্যের মতোই একটি নক্ষত্র থেকে। এই সংকেত বার বার এসেছে। কাজেই একে একেবারে প্রাকৃতিক বলে মনে করা যাচ্ছে না। অজানা উৎস থেকে বিপ এবং ব্লুপ আসছে। মহাকাশে এসব শব্দ উৎপন্ন করতে পারে এমন জিনিসের অভাব নেই।

এখন পর্যন্ত কোনো বিজ্ঞানী বা মহাকাশচারী সহজে বলতে পারেননি যে, আমি এলিয়েন দেখেছি। কিন্তু ভিনগ্রহের প্রাণী যে রয়েছে তা শক্তভাবে বিশ্বাস করতে চান সবাই। এর মধ্যে এমন সিগনাল আসতে থাকলে বিশ্বাস আরো শক্ত হয়ে ওঠে।

১৯৬০ এর দশকে অ্যাস্ট্রোফিজিসিস্ট জোসেলিন বেল বার্নেল কাজ করছিলেন অ্যান্টনি হিউইশ। তিনি তার দামি রেডিও টেলিস্কোপ নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। তিনিই মহাশূন্যের বিশেষ এক স্থান মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করতেন। তার মনে হতো, ওই স্থান থেকে ক্রমাগত সংকেত আসছে। এইব সংকেত এতটাই নিয়মিত এবং ঠিকঠাক মতো আসতো যে, তারা উৎসের নাম দিয়ে দিয়েছিলেন 'এলজিএম' বা লিটল গ্রিন মেন।

কিন্তু এলজিএম ধারণা ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ে যখন একের পর এক নতুন উৎস থেকে সংকেত পেতে শুরু করেন তারা। খুব দ্রুতই বুঝতে পারেন তারা যে, এসব সংকেত ছোট আকারের নিরপেক্ষ নক্ষত্র থেকে আসে। এগুলো খুব শক্তিশালী চৌম্বকক্ষেত্রে তৈরি করে।

১৯৭৭ সালে অ্যাস্ট্রোনমার জেরি এম্যান ওহিয়ো স্টেট ইউনিভার্সিটির পরিচালিত একটি রেডিও টেলিস্কোপ নিয়ে কাজ করছিলেন। এই টেলিস্কোপের মাধ্যমে ভিনগ্রহের প্রাণী খোঁজা হতো।

একবার এই টেলিস্কোপে এক উজ্জ্বল, শক্তিশালী ও নিয়মিত সংকেত ধরা পড়লো। এটি ৭২ সেকেন্ড ধরে আসলো। উৎস থেকে ১৪২০ মেগাহার্জের অদ্ভুত তরঙ্গে আসতে থাকলো সংকেত। এই সংকেত পেয়ে আভিভূত হয়ে পড়লেন এম্যান। অন্য কোনো টেলিস্কোপ এই সিগনালটি পায়নি। তা ছাড়া আর কখনোই এমন সিগনাল আসেনি।

১৯৯৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার পার্কেস রেডিও টেলিস্কোপ এক অদ্ভুত সংকেত পেলো।এই সংকেতের তরঙ্গ ওঠা-নামা করেই আসছিল। এ ধরনের সংকেতকে বলে 'পেরিটন্স'। এই সংকেত গোটা বিশ্বের টেলিস্কোপ অপারেটর এবং অ্যাস্টোনমারদের বিমুগ্ধ করে রাখতো।

আসলে এলিয়েন নিয়ে কল্পনা ও আলোচনা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রমাণকে হার মানায়। এ সংক্রান্ত কোনো আলোচনা কখনোই থামেনি। এখানে একটি হাইপোথিসিসের কথা উল্লেখ করা যায়।

এলিয়েনরাই যে এসব রহস্যময় রেডিও সংকেত তৈরি করছে, সে ধারণা সব সময়ই ভুল। কারণ বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন প্রাণী যেকোনো ধরনের সংকেত তৈরি করতে পারে। আবার এও ঠিক যে, এলিয়েনরা এসব শব্দও সৃষ্টি করতে পারে। এই শব্দগুলো এলিয়েনরাই সৃষ্টি করছে বা করে নাই, সে বিষয়টি আমরা কখনোই মিথ্যা প্রমাণ করতে পারি না। কাজেই 'এসব সংকেত কেন আসছে তা আমরা জানি না' কিংবা 'এলিয়েনরাই এসব সংকেত পাঠাচ্ছে' ইত্যাদি ভাবতে পারি আমরা।

জ্যোতির্বিদরা তাদের টেলিস্কোপগুলোকে খুবই ভালোবাসেন। কারণ এর মাধ্যমেই তারা বিজ্ঞানের জটিল কাজ সম্পন্ন করতে পারেন। এসব সংকেতই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের ব্যাখ্যাতীত ঘটনা যা ঘটে চলেছে। আর এ কারণেই এখনো কাজ করে যাচ্ছেন জ্যোতির্বিদরা। এসব ঘটনা বা সংকেতই তথ্য দেয় যে, এই পৃথিবীর বাইরে অসীম এক দুনিয়া রয়েছে। সূত্র: লাইভ সায়েন্স



পিএনএস/বাকিবিল্লাহ্

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন