মামলা রেকর্ড করতে পুলিশের লাগল ২২ ঘণ্টা!

  22-05-2017 10:34PM


পিএনএস, কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে জমি নিয়ে সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার ঘটনায় থানা পুলিশের মামলা নিতে গড়িমসির অভিযোগ উঠেছে। মামলা না হওয়ায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা নিহতের মরদেহ নিয়ে অপেক্ষা করে স্বজন ও গ্রামবাসীরা। ১৫ ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর পুলিশ মামলা নিলে অবশেষে মরদেহটি দাফন করে পরিবারের লোকজন। কিন্তু মামলাটি রেকর্ড করতে পুলিশের সময় লাগে ২২ ঘন্টা! তবে পুলিশ বলছে, মামলাকারিরা থানায় দেরিতে এসেছে। এ ঘটনায় নুর ইসলাম নামের একজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন গ্রামবাসী।

নিহতের পরিবার জানায়, ১ একর ৭১ শতক জমি নিয়ে নাগেশ্বরীর কালীগঞ্জ বাজারের মৃত ছফর উদ্দিনের ছেলে নুর মোহাম্মদের সাথে একই এলাকার সাবেক চেয়ারম্যান শওকত আলী সর্দারের বিরোধ চলে আসছিল। ওই জমিতে গত শনিবার সকালে নুর মোহাম্মদ ও তার ভাই-ভাতিজারা ধান কাটতে গেলে প্রতিপক্ষ শওকত আলী সর্দার, তার ছেলে জুলফিকার আলী বাবু, মোস্তফা মিয়াসহ ভাড়াটে প্রায় ২০ জন লোক তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে নুর মোহাম্মদের ভাই নুরুল আমিন, উকিল আমিন, বারেক আলী, ইউনুছ আলী ও রফিকুল ইসলাম গুরুতর আহত হয়। তাদেরকে উদ্ধার করে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে নুরুল আমিনের অবস্থা গুরুতর দেখা দিলে তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নুরুল আমিন মারা গেলে ময়নাতদন্ত শেষে রাত সাড়ে ৭টার দিকে মরদেহটি বাড়িতে আনা হয়। ওইদিন রাত ৯টার দিকে দাফনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। কিন্তু তখন পর্যন্ত মামলা না হওয়ায় দাফন করা সম্ভব হচ্ছিল না।

এ ব্যাপারে নিহতের ছোট ভাই আবু ছিদ্দিক জানান, তিনি বাদী হয়ে গতকাল রবিবার দুপুর ১টার দিকে নাগেশ্বরী থানায় মামলা করতে আসেন। কিন্তু থানা পুলিশ অজ্ঞাত কারণে রাত ১২টা পর্যন্ত মামলা না নিয়ে তাদের ফেরত দেন।

তিনি আরো জানান, রবিবার রাত ৯টার দিকে প্রথম দফা দাফনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও মামলা না হওয়ায় আবারও রাত ১১টার দিকে দাফনের জন্য মাইকিং করা হয়। কিন্তু মামলা রেকর্ডভুক্ত করতে বিলম্বের কারণে দাফনও বিলম্বিত হচ্ছিল। সোমবার সকালে গ্রামবাসী ও স্বজনরা আবারও দাফনের প্রস্তুতি নিয়ে বসে থাকেন। মামলার বাদীসহ কয়েকজন স্বজন তখনও থানায়।

আবু ছিদ্দিক জানান, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা আর গুঞ্জন শুরু হলে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ১৩ জনকে আসামিকে করে মামলা রেকর্ডভুক্ত করে পুলিশ। লাশ দাফন করা হয় বেলা সাড়ে ১২টার দিকে দিকে।

তবে মামলা নিতে গড়িমসির কথা অস্বীকার করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সারওয়ার পারভেজ বলেন, তারা মূলত মামলা করতে দেরিতে এসেছে। এসে আবার বারবার আসামির নাম বদল করে মামলা করতে দেরি হয়েছে। এছাড়া বৈদ্যুতিক ঝামেলাতো আসে। পুলিশ আন্তরিক রয়েছে। একজনকে গ্রেপ্তার করে কোর্টে পাঠানো হয়েছে। বাকী আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন