সংবাদ প্রকাশে শিকল মুক্ত সুরবালা

  24-11-2017 06:14PM

পিএনএস, নওগাঁ প্রতিনিধি : অবশেষে শিকল বন্দী জীবন থেকে মুক্ত হলেন সুরবালা রানী পাহান (৬৭)।গত ২৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে তাকে শিকলমুক্ত করা হয়। সেই সাথে তার বয়স্কভাতার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত) এসএম হাবিবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এটি একটি মানবিক বিষয়। সুরবালার সন্তানদের সাথে আমরা কথা বলেছি। এখন থেকে যেখানে তারা যাবে, যেন তাদের মাকে সাথে নিয়ে যায়। আগামী ডিসেম্বর থেকে সুরবালা বয়স্কভাতা পাবেন।

এছাড়া সুরবালা যেন সুচিকিৎসা পায় সে ব্যাপারে স্থানীয় চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে। যেহেতু পরিবারটি দরিদ্র। এজন্য বয়স্কভাতার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখান থেকে যে অর্থ পাবে, ইচ্ছে করলেই তার সন্তানরা সুরবালার চিকিৎসা করাতে পারে।

বাংলাদেশের জনপ্রিয় দৈনিক আমার বার্তা, দৈনিক ভোরের পাতা, দৈনিক বজ্রশক্তি সহ আঞ্চলিক ও অনলাইন পত্রিকা পিএনএস গত ২০ নভেম্বর ‘মহাদেবপুরে বৃদ্ধার শিকলবন্দি জীবন’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর নজরে আসে প্রশাসনের। সুরবালা বড় মেয়ে জিরো পাহান আনন্দে আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন, হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে মাকে শিকলের বেড়ি পরিয়ে রেখেছিলাম বলে খুবই কষ্ট হতো। নিজেদেরও খারাপ লাগত। কিন্তু ছিল না। মা মুক্ত হয়েছে। এখন খুবই ভাল লাগছে। আরো ভাল লাগছে মায়ের নামে বয়স্কভাতার কার্ড হওয়াতে।

উল্লেখ্য, হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে গত তিন বছর থেকে দুই পায়ে শিকলের বেড়ি পরিয়ে রাখে ছয় সন্তানের জননি সুরবালাকে তার সন্তানরা। তিনি নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার চেরাগপুর ইউনিয়নের বড় মহেষপুর (জঙ্গিপাড়া) গ্রামের মৃত কালু পাহানের স্ত্রী।

গত তিন বছর আগে বিকেলে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন সুরবালা। নিখোঁজের ৫-৬ দিনপর সুরবালাকে তার সন্তানরা তাকে উদ্ধার করে নিয়ে এসে পায়ে শিকল-তালা লাগিয়ে রাখে। তারপর থেকে সুরবালা মানবেতর জীবন যাপন করছিল। দিন আনা দিন খাওয়া আদিবাসী এ অসহায় পরিবারটি সামর্থ না থাকায় ভাল ডাক্তার দেখাতে পারেনি। স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে ব্রেনের সমস্যা হয়েছে বলে জানায়। এরপর থেকে তাদের মা যেন হারিয়ে না যায় ভয়ে পায়ে শিকল পরিয়ে রেখেছিল।

পিএনএস/মোঃ শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন