গণধর্ষণের পর বিয়ে, সেই আ’লীগ নেতা বহিষ্কার

  14-09-2019 09:05PM

পিএনএস ডেস্ক : পাবনায় গণধর্ষণের পর থানায় বিয়ের ঘটনা তদন্তে নেমেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশে গঠিত পাবনা জেলা প্রশাসনের তিন সদস্যের তদন্ত দল।

শনিবার বেলা ১১টায় সদর উপজেলার যশোদল সাহাপুর গ্রামে নির্যাতিতা গৃহবধূর বাবার বাড়ি থেকে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন তারা। টানা তিন ঘণ্টা ভুক্তভোগী নারী, তার পরিবার ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে তারা সদর থানায় যান। রোববার জেলা প্রশাসকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবেন তারা।

তিন সদস্যের তদন্ত দলে রয়েছেন পাবনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জাহেদ নেওয়াজ, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইবনে মিজান ও ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. আবু জাফর।
এদিকে, গণধর্ষণের ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠায় দলীয় তদন্ত শেষে অন্যতম অভিযুক্ত শরিফুল ইসলাম ঘন্টুকে দাপুনিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হাসান শাহীন বলেন, কারো ব্যক্তিগত অপকর্মের দায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নেবে না। এক্ষেত্রে কোনো নমনীয়তা বা সহানুভূতি দেখানোর সুযোগ নেই।

তদন্ত কমিটির আহবায়ক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদ নেওয়াজ জানান, আমরা দীর্ঘ সময় ধরে ভুক্তভোগী ও সংশ্লিষ্ট সবার বক্তব্য শুনেছি। সদর থানা ও অপরাধস্থল পরিদর্শন করে তথ্য ও প্রমাণ সংগ্রহ করেছি। তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে জানালেও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

তদন্ত কমিটির সদস্য পাবনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইবনে মিজান জানান, গণধর্ষণের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় অভিযুক্ত সব আসামিকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নির্যাতিতা নারীর ডাক্তারি পরীক্ষাও সম্পন্ন হয়েছে। পুলিশি তদন্তের পাশাপাশি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশে আমরাও ঘটনা তদন্ত করছি। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করা হবে। জেলা প্রশাসক পরে প্রতিবেদনটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠাবেন।

ইবনে মিজান আরো জানান, এ ঘটনায় থানায় বিয়ের অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওবাইদুল হককে প্রত্যাহার এবং উপ-পরিদর্শক ইকারামুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চলছে।

প্রসঙ্গত, পাবনা সদর উপজেলার সাহাপুর যশোদল গ্রামের এক নারীকে গত ২৯ আগস্ট রাতে একই গ্রামের আকবর আলীর ছেলে রাসেল আহমেদ চার সহযোগীকে নিয়ে অপহরণ করে। পরে তাকে আটকে রেখে টানা চারদিন ধরে গণধর্ষণ করা হয়।

এ ঘটনায় গৃহবধূ পাবনা সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ অভিযুক্ত রাসেলকে আটক করলেও মামলা নথিভুক্ত না করে ধর্ষিতাকে তার সাথে থানা চত্বরে বিয়ে দিয়ে ঘটনা মীমাংসার চেষ্টা চালায়। এ ব্যাপারে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে পুলিশ সুপারের নির্দেশে মামলা দায়েরের পর সব আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পিএনএস/মো. শ্যামল ইসলাম রাসেল

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন