বিশ্বের সবচেয়ে দামি ‘সূর্যডিম’ এখন বাংলাদেশে

  10-08-2022 02:26PM



পিএনএস ডেস্ক : বিশ্বের সবচেয়ে দামি আম ‘এগ অব দ্য সান’বা সূর্যডিম। সূর্যডিমের জন্মস্থান জাপানে। জাপানি ভাষায় আমটিকে বলা হয় 'মিয়াজাকি'। বিশ্ববাজারে এটি 'রেড ম্যাঙ্গো' বা 'এগ অব দ্য সান' নামেও পরিচিত।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই আম ৫ হাজার-৬ হাজার টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে।

বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে এই আম চাষ হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে চাষ হওয়ায় প্রতি কেজি সূর্যডিম আমের খুচরা মূল্য আটশো থেকে এক হাজার টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে।

এই আমের গড়ন সাধারণ আমের চাইতে বড় ও লম্বা, স্বাদে মিষ্টি এবং আমের বাইরের আবরণ দেখতে গাঢ় লাল অথবা লাল-বেগুনির মিশ্রণে একটি রংয়ের।একেকটি আমের ওজন ৩৫০ থেকে ৪৫০ গ্রামের মতো হয়ে থাকে।

সে হিসেবে বাংলাদেশের বাজারে একেকটি আমের দামই পড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। মূলত চাহিদা মোতাবেক যোগান কম থাকা, মিষ্টা স্বাদ, ভিন্ন রঙ এবং চাষপদ্ধতির কারণে আমটির দাম এতো বেশি।

দামি এই আমটি চাষ করে ইতোমধ্যে সাড়া ফেলেছেন খাগড়াছড়ির কৃষক হ্ল্যাশিংমং চৌধুরী। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে কৃষিকাজকে নিজের পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন তিনি। খাগড়াছড়ি জেলা সদর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে মহলছড়ি উপজেলা।

ওই উপজেলার ধুমনিঘাট এলাকায় ১২শ ফুট উঁচুতে ৩৫ একর জায়গাজুড়ে নিজ উদ্যোগে তিনি গড়ে তুলেছেন হরেক রকম ফলের বাগান। নাম দিয়েছেন 'ক্রা এএ এগ্রো ফার্ম'। সেই বাগানের একটি অংশেই চাষ করা হচ্ছে 'সূর্যডিম' আম।

২০১৭ সালে হ্ল্যাশিংমং প্রথম ভারত থেকে এই আমের দশ পনেরোটি চারা কিনে নিজ বাগানে রোপণ করেন। দুই বছরের মধ্যে গাছ বড় হয়ে ওঠে এবং ২০১৯ সাল থেকে তিনি আম তোলা শুরু করেছেন। হ্ল্যাশিংমং নিজের বাগানে মা গাছ থেকে চারা রোপণ করে বাগানের পরিধি বাড়িয়েছেন। এখন তার বাগানে সূর্যডিমের ১২০টির মতো গাছ রয়েছে। যেগুলোর উচ্চতা ছয় ফুটের মতো।

চারাগুলো যত্ন করে পালন করায় এরমধ্যে প্রায় ৫০টি গাছে তিন চার বছর ধরে ফলন হচ্ছে, যা থেকে প্রতি বছর ৩শ থেকে ৪শ কেজি আম হয় বলে জানিয়েছেন মি. হ্ল্যাশিংমং।

যদিও বিরূপ আবহাওয়া এবং পানি স্বল্পতার কারণে এই আম চাষে তাকে বেশ বেগ পেতে হয়। সূর্যডিম আম সাধারণত মে মাসের ২০ থেকে ২৫ তারিখে পাকা শুরু হয় এবং জুনের ১৫ থেকে ২০ তারিখ পর্যন্ত পাওয়া যায়। চলতি বছর একটি লম্বা সময় খরা মৌসুম থাকায় এবার আম চলে এসেছে সময়ের আগেই।

এই আম চাষে নিতে হয় বিশেষ যত্ন। পরিমিত আলো, পানি, ছায়া সরবরাহের পাশাপাশি, প্রতিটি আম প্যাকেট দিয়ে ঢেকে রাখতে হয়। আম তোলার পর গরমের কারণে সেগুলো বেশিক্ষণ নিজের কাছে রাখতে পারেন না। দ্রুত বিক্রি করে দিতে হয়। এখনও এই আমের ক্রেতা খুব হাতে গোনা। সাধারণত সৌখিন আমপ্রিয় মানুষেরা এই আম কিনে নেন। সূত্র: বিবিসি

পিএনএস/আলাউদ্দিন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন