বাজারে আসতে শুরু করেছে দিনাজপুরী লিচু

  19-05-2023 01:28PM


পিএনএস ডেস্ক: অনন্য স্বাদের টসটসে দেশের সেরা দিনাজপুরী লিচু বাজারে আসতে শুরু করেছে। দিন দিন বেচা-কেনা বাড়ছে। সবার মন জয় করা দিনাজপুরী লিচু মানেই অন্যরকম মিষ্টি ও রসালো স্বাদ। সারাদেশে কমবেশি ফলন হলেও দিনাজপুরের লিচুর চাহিদা বেশি।

বিশেষ বৈশিষ্ট্য নিয়ে বিভিন্ন জাতের লিচুর মধ্যে বেদানা, বোম্বাই, মাদ্রাজি, চায়না-থ্রি, কাঁঠালি, মোজাফফরপুরী লিচু এখন সবার কাছেই প্রিয়। আগামী সপ্তাহ থেকে পুরোদমে লিচু বাজারে পাওয়া যাবে। এবার রোদের তীব্রতা ও বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় অনেক লিচু পাকার রং ধরে এবং এক শ্রেণির ব্যবসায়ী অপরিপক্ক এসব লিচু বিক্রি করছেন। এর স্বাদ পাওয়া যাবে না। আবার খেলে অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই সময়ের আগেই বাজারে দেখা যায় এসব লিচু।

বাজারে প্রথম আসে মাদ্রাজী লিচু। এরপর কাঁঠালি, মোজাফফরপুরী, বোম্বাই। আর শেষের দিকে বেদানা ও চায়না থ্রি লিচু বাজারে নামবে।

দিনাজপুর গোর-এ শহীদ বড়ময়দানে বসেছে লিচুর অস্থায়ী বড় বাজার। এছাড়াও কালিতলা মার্কেটসহ বিভিন্ন স্থানে বসছে লিচুর বাজার। ব্যবসায়ীরা জেলার বিভিন্ন বাগান আর বাজার থেকে লিচু কিনে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাচ্ছেন। এখন পরিবহন ছাড়াও কুরিয়ার সার্ভিসেও দেশের বিভিন্ন স্থানে লিচু যাওয়া শুরু হয়েছে।

দিনাজপুরে এবার লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩১ হাজার ৭৯০ মেট্রিক টন। লিচু উৎপাদন এবং বেচা-কেনা ৬০০কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করছে কৃষি বিভাগ।

দিনাজপুরের ১৩টি উপজেলাতে কম-বেশি লিচুর আবাদ হয়। বেশি চাষ হয় সদর উপজেলার মাসিমপুর, উলিপুর, আউলিয়াপুর, মহব্বতপুর, বিরলের মাধববাটি, করলা, রবিপুর, রাজারামপুর, মহেশপুর, বটহাট এবং চিরিরবন্দর-খানসামা উপজেলায়।

চিরিরবন্দরের লিচু চাষি আফসার আলী বলেন, আগাম জাতের মাদ্রাজী লিচুর ফলন কম হয়েছে ও আকারে ছোট হয়েছে। ঠিকমতো বৃষ্টি না হওয়ায় এমনটা হয়েছে বলে জানায় কৃষি বিভাগ। তবে বোম্বাই লিচুর ফলন এবার মোটামুটি ভালো। আশা করছি বাজারে লিচুর দাম ভালো পাবো। আগামী সপ্তাহে পুরোদমে লিচু বাজারে পাওয়া যাবে।

এখন পাইকারি বাজারে প্রতি হাজার মাদ্রাজি লিচু বিক্রি হচ্ছে ১১০০ থেকে ২৫০০ টাকায়। অন্যদিকে খুচরা বাজারে প্রতিশত মাদ্রাজি লিচু ১৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা।

মাসিমপুরের চাষী ও বিক্রেতা মোসাদ্দেক হোসেন জানান, দিনাজপুরের লিচুর দেশব্যাপী কদর রয়েছে। কিন্তু এ লিচু পাকার পর বেশিদিন রাখা যায় না। আবার গাছ থেকে নামানোর পর কয়েকদিনের মধ্যে নষ্ট হয়ে যায়। এতে তাড়াতাড়ি মৌসুম শেষ হয়ে যায়। তাই দীর্ঘদিন লিচু সংরক্ষণে একটি হিমাগার এ অঞ্চলে তৈরি হলে চাষিরা লাভবান হবে এবং সারা বছরই এর স্বাদ নিতে পারবে মানুষ। এছাড়াও লিচু রপ্তানি যোগ্য হতে পারে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, দিনাজপুর জেলায় ৫৪৯০ হেক্টর জমিতে লিচুর বাগান রয়েছে সাড়ে ৫ হাজার। এর মধ্যে বোম্বাই ৩১৭০ হেক্টর, মাদ্রাজি ১১৬৬ হেক্টর, চায়না থ্রি ৮০২ দশমিক ৫ হেক্টর, বেদানা ২৯৫ দশমিক ৫ হেক্টর, কাঁঠালি ২১ হেক্টর এবং মোজাফফরপুরী লিচু ১ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। বসতবাড়ির উঠানসহ বাগানগুলোতে লিচুগাছ রয়েছে ৭ লক্ষাধিক। এবার হেক্টর প্রতি ৫ দশমিক ৩ মেট্রিক টন লিচুর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

পিএনএস/আনোয়ার


@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন