কৃষিতে বিপ্লব আনবে ব্রি ধান ১০২

  19-05-2023 02:16PM


পিএনএস ডেস্ক: বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত পুষ্টি সমৃদ্ধ উচ্চ ফলনশীল ব্রি-১০২ জাতের নতুন ধান খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি কৃষিতে বিপ্লব ঘটাবে। এরই মধ্যে গোপালগঞ্জে ধানটির পরীক্ষামূলক চাষে মিলেছে সাফল্য। প্রতি শতাংশে এই জাতের ধান এক মণ ফলন দিয়েছে। ব্রি ধান ১০২ চাষে কৃষকের গোলা ভরে যাবে। নতুন জাতের এই ধান দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

গোপালগঞ্জের ৫টি প্রদর্শনী প্লটে এই জাতের ধান হেক্টরে ৮.১০ থেকে ৯.৫ টন পর্যন্ত ফলন দিয়েছে। সেই হিসাবে শতাংশে ফলন দিয়েছে প্রায় এক মণ বা এক মণেরও বেশি। ব্রি ধান-২৯ এর বিকল্প হিসেবে এই ধানের আবাদ করা যায়। হাইব্রিড ধানের সমান এই ধান ফলন দিতে সক্ষম। নতুন এই জাতের ধানে প্রচলিত জাতের ধানের মতো রোগবালাই নেই। লম্বা, চিকন প্রিমিয়াম কোয়ালিটির এই ধানের ভাত ঝরঝরে এবং খেতে সুস্বাদু। স্বল্প খরচে ধানের বাম্পার ফলন পেয়ে কৃষক লাভবান হয়েছেন।

ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান ও উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম এ সব তথ্য জানিয়েছেন।

ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের ওই গবেষক বলেন, ২০২২ সালে বীজ বোর্ড এই বীজধান ছাড় করে। এই বছর বোরো মৌসুমে গোপালগঞ্জের ৫টি প্রদর্শনী প্লটে প্রথম বারের মতো এই ধানের আবাদ করেন কৃষক। চিকন ধানের জাতের মধ্যে এই জাতই সর্বোচ্চ ফলন দিয়েছে। চিকন ধানে এটি নতুন আশা জাগিয়েছে। প্রিমিয়াম কোয়ালিটির ধান বাজারে অনেক বেশি দামে বিক্রি হয়। এটি আমাদের কৃষি ও কৃষকরে জন্য সু-সংবাদ। এই জাতের ধান এসডিজি অর্জনে সহায়তা করবে।এই ধানের চাষ ছড়িয়ে দিতে পারলে দেশ ধানে আরো বেশি সমৃদ্ধ হবে। কৃষকের আয় বড়িয়ে দেবে এই জাতের ধান।

ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সৃজন চন্দ্র দাস বলেন, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত একটি ক্লাইমেট স্মার্ট জাত ব্রি ধান ১০২। বোরো মৌসুমের এই ধানটি জিংক সমৃদ্ধ। কারণ মাছে-ভাতে বাঙ্গালীর ধানেই সমৃদ্ধি। এই সমৃদ্ধি নিশ্চিত করবে ব্রি ধান ১০২। এটি আমাদের প্রত্যাশা।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক মুহিব শেখ (৫০) বলেন, লম্বা ও চিকন জাতের ব্রি ধান ১০২ আমার প্রদর্শনী প্লটে সবচেয়ে বেশি ফলন দিয়েছে। আমি জীবনে চিকন ধানে এত বেশি ফলন দেখিনি। এই ধানে রোগ বালাই নেই বললেই চলে। আমার জমিতে শুধু ধান ছাড়া আর কিছুই দেখা যায়ানি।

গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামার বাড়ির উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আব্দুল কাদের সরদার বলেন, বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ ও উদ্বৃত্ত। কিন্তু এখনো দেশের বিপুল জনগোষ্ঠীর পুষ্টি চাহিদা এখনও পূরণ করা সম্ভব হয়নি। ফলে সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয় উচ্চফলনশীল (উফশী) জাতের পাশাপাশি পুষ্টিসমৃদ্ধ ধান উৎপাদনে বিশেষ নজর দিয়েছে।

বাংলাদেশর মানুষ ভাত খেতে অভ্যস্থ। তাই ভাতের মধ্যে পুষ্টি গুন থাকলে সহজেই মানুষ পুষ্টি পাবে। ব্রি উদ্বাবিত জিংক সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধু ধান-১০০ ও ব্রিধান-১০২ জাতের ধানের চাষাদ আমরা সম্প্রসারণ করবো। এতে একদিকে যেমন কৃষক অধিক ফলন পেয়ে লাভবান হবেন, তেমনি দেশের সাধারণ মানুষের পুষ্টির ঘাটতি পুরণ করবে এই ধান। এই ধান উদ্ভাবনে সরকারের উদ্দেশ্য সফল হয়েছে।

পিএনএস/আনোয়ার


@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন