মূল্যস্ফীতি ও ডলার এক্সচেঞ্জ রেট নতুন চ্যালেঞ্জ: গভর্নর

  19-06-2022 02:11AM

পিএনএস ডেস্ক : দেশের অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও ডলারের বিনিময় হারকে এখনকার চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেছেন, করোনার পরবর্তী সময়ে বাণিজ্য বাড়ায় অতীতের যেকোনো সময়ে সবচেয়ে বেশি ডলার বিক্রি করতে হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমাদের নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে এসেছে মূল্যস্ফীতি ও ডলার। এসব সমস্যা থেকে উত্তরণে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

শনিবার (১৮ জুন) ‘বাংলাদেশে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন প্রতিরোধে বিএফআইইউর ২০ বছর’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তেব্যে এসব কথা বলেন তিনি। রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে এ সেমিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

বিএফআইইউ প্রধান মাসুদ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন এবিবি চেয়ারম্যান সেলিম আরএফ হোসেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ। এছাড়া বিএফআইইউর একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

গভর্নর ফজলে কবির বলেন, আমাদের যে পরিমাণে রিজার্ভ রয়েছে তাতে ভয়ের কিছু নেই, নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারবো। সাধারণত তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের সমান ডলার মজুত থাকলে স্থিতিশীল ধরা হয়। আমাদের এখন ৪১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ রয়েছে।

গভর্নর বলেন, এক মাসে আমদানি ব্যয় মেটাতে সাড়ে সাত বিলিয়ন ডলারের প্রয়োজন আর তিন মাসের আমদানি ব্যয় পরিশোধে ব্যয় হবে সাড়ে ২২ বিলিয়ন ডলার। সরকারের নিরাপত্তা সামগ্রী বাবদ আরও তিন বিলিয়ন ডলার লাগে, সব মিলিয়ে ২৬ বিলিয়ন ডলার থাকলেই চিন্তা মুক্ত থাকা যায়। গত অর্থবছরে করোনায় আমদানি ব্যয় কম থাকায় বাংলাদেশ ব্যাংক অন্যান্য ব্যাংগুলো থেকে ৭ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার কিনেছিল। চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে আমদানি ব্যয়ের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংকগুলোর কাছে চাহিদা অনুযায়ী ডলার ছাড়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, কোভিডকালে আমাদের ব্যাংকাররা সেবা দিতে গিয়ে ১৮৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং অসংখ্য ব্যাংকাররা আক্রান্ত হয়েছেন। কারণ সেসময়ে সম্মুখ সারির যোদ্ধা ছিলেন ব্যাংকাররা। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো এবং ইসলামী ব্যাংক প্রত্যন্ত অঞ্চলে সেবা দিতে গিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

মানি লন্ডারিং নিয়ে গভর্নর বলেন, এন্টি মানিলন্ডারিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বিএফআইইউর। লন্ডারিংয়ের টাকা যাতে টেরোরিজমে ব্যয় না হয় সে বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।

ফজলে কবির বলেন, দুর্যোগকবলিত এলাকা বিশেষ করে সিলেটের কৃষকরা ঋণ পরিশোধ করুক বা না করুক তাদের ঋণ বিতরণ বাড়িয়ে দিতে হবে। এসময় তিনি বন্যার্ত এলাকায় সিএসআরখাত থেকে ব্যয়ের পরামর্শ দেন তিনি।

বিএফআইইউ কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থের বিষয়ে সুইস ফেডারেল অথরিটির কাছে তথ্য চেয়ে আবেদন করেছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

বিএফআইইউর অতিরিক্ত পরিচালক কামাল হোসেন বলেন, বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থের বিষয়ে সুইস ফেডারেল অথরিটির কাছে তথ্য চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। যদিও পাচার করা অর্থ উদ্ধার জটিল কাজ। সুইস ব্যাংকের পক্ষে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের ৬৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অর্থ সম্পর্কে তথ্য পেয়েছে বিএফআইইউ। চলতি অর্থবছরে (২০২১-২২) দশ মাস পর্যন্ত তদন্তাধীন নয়টি মামলার বিপরীতে ৮৬৬ কোটি টাকা জব্দ করা হয়েছে। যদিও আগের (২০২০-২১) অর্থবছরে সাতটি মামলার বিপরীতে ক্রোক করা টাকার পরিমাণ ছিল ৩৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।

পিএনএস/এএ

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন