বিমার ঝলকে ঊর্ধ্বমুখী শেয়ারবাজার

  12-05-2024 08:32PM

পিএনএস ডেস্ক: একদিনে যতটা বাড়া সম্ভব চারটি কোম্পানির শেয়ার দাম ততটাই বেড়েছে। আরও ৮টির শেয়ার দাম বেড়েছে ৫ শতাংশের ওপরে। এর মধ্যে ৮ শতাংশের বেশি দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে দুটি প্রতিষ্ঠান। এ চিত্র দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বিমা খাতের। তালিকাভুক্ত ৫৮টি বিমা কোম্পানির মধ্যে ৪৭টিই দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে।

সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার (১২ মে) শেয়ারবাজারে বিমা কোম্পানিগুলোর শেয়ার দাম বাড়ার ক্ষেত্রে এমন দাপট দেখানোর ফলে সার্বিক শেয়ারবাজারেও ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ফলে টানা তিন কার্যদিবসের পতন কেটে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনের গতি।

প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৫০ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়লেও বিমা খাত যতটা দাপট দেখিয়েছে আর কোনো খাত এতটা দাপট দেখাতে পারেনি। বিমা খাতের ৮১ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেড়েছে। ফলে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে পৌনে এক শতাংশ।

অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার থেকে বেশি। তবে এ বাজারটিতেও দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে বিমা খাত। ফলে বেড়েছে সবকটি মূল্যসূচক। মূল্যসূচক বাড়লেও সিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে।

এর আগে গত সপ্তাহের শেষ তিন কার্যদিবস শেয়ারবাজারে টানা দরপতন হয়। এ পরিস্থিতিতে রোববোর শেয়ারবাজারে লেনদেনের শুরুতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। ফলে লেনদেনের ৩০ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান সূচক ৩০ পয়েন্ট কমে যায়।

কিন্তু এরপর এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ান। এতে লেনদেনের এক পর্যায়ে ডিএসইর তিন সূচকের মধ্যে দুটি ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। আর প্রধান মূল্যসূচক মাত্র ২ পয়েন্ট পজেটিভ থাকে। এ পরিস্থিতিতে দাম বাড়তে থাকে বিমা কোম্পানির শেয়ারের। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে বিমার দাপট বাড়তে থাকে। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে অন্য খাতের ওপরও।

এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৯৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫৯টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৩৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১২টির দাম একদিনে যতটা বাড়া সম্ভব ততোটাই বেড়েঠে। এর মধ্যে বিমা কোম্পানি রয়েছে ৪টি।

দাম বাড়ার ক্ষেত্রে বিমা কোম্পানির এমন দাপটের ফলে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৩৫ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৬৯৬ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২৫০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১১ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ২৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

এদিকে ডিএসইতে লেনদেন বেড়ে হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি চলে এসেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৯৮৫ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৯১১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৭৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা।

এ লেনদেনে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিসের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪৭ কোটি ৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেস্ট হোল্ডিংয়ের ৪৬ কোটি ২৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৩৮ কোটি ৫২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে নাভানা ফার্মা।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে-গোল্ডেন সন, ফরইস্ট নিটিং, ই-জেনারেশন, মালেক স্পিনিং, ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোড, লাভেলো আইসক্রিম এবং কহিনুর কেমিক্যালস।

অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৯৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ২৩২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০১টির এবং ৩৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা।

এসএস

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন