তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্পে নিহত ছাড়িয়েছে ৯ হাজার

  08-02-2023 04:43PM

পিএনএস ডেস্ক : তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও সিরিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ৯ হাজার ছাড়িয়েছে। শক্তিশালী এ ভূমিকম্পে তুরস্কে ৬ হাজারের বেশি ভবন ধসে পড়েছে। ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া ব্যক্তিদের উদ্ধারে প্রাণপণ চেষ্টা করছেন উদ্ধারকারীরা। কিন্তু ভারী বৃষ্টি ও তুষারপাতের কারণে উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে।

দুই দেশের কর্তৃপক্ষের বরাতে গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পে তুরস্কে নিহতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬ হাজার ৯৫৭ জন। অন্যদিকে তুরস্কের প্রতিবেশী সিরিয়ায় নিহত দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫০০ জন। সিরিয়ায় নিহতদের বেশিরভাগই বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে।

তুরস্কের সরকার, হোয়াইট হেলমেটস ও সিরীয় রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুসারে, দুই দেশে ভূমিকম্পে আহতের সংখ্যা অন্তত ৩০ হাজার ৪৭৪ জন।

মঙ্গলবার ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত তুরস্কের প্রদেশে তিন মাসের জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা দিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেব এরদোয়ান।

মঙ্গলবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, সিরিয়ার নিকটবর্তী বিচ্ছিন্ন অঞ্চলে পুনরুদ্ধারের কাজ একটি প্রচণ্ড শীতকালীন ঝড়ের কারণে বাধাগ্রস্ত হয়েছে যা কিছু রাস্তাকে চলাচলের অনুপযোগী করে তুলেছে এবং খাদ্য ও ত্রাণ সরবরাহের গতি কমিয়ে দিয়েছে। তাই উদ্ধার কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, জরুরি অবস্থা ঘোষণার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোতে দ্রুত ত্রাণ কর্মীরা যেতে পারবেন। এছাড়া সেসব এলাকায় তাড়াতাড়ি আর্থিক সহায়তাও দেয়া যাবে। তিনি আরও জানিয়েছেন, ১৪ মে তারিখে নির্বাচনের ঠিক আগে জরুরি অবস্থার অবসান হবে।

এরদোগানের সরকার প্রায় এক শতাব্দীর মধ্যে তুরস্কের সবচেয়ে বড় ভূমিকম্পের ধীর প্রতিক্রিয়া হিসাবে তার সমালোচকদের দৃষ্টিভঙ্গির জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্রমবর্ধমান চাপের মধ্যে আসছে।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, ভূমিকম্পে উভয় দেশে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ২৩ মিলিয়ন ছাড়িয়ে যেতে পারে। এছাড়া সংস্থাটির পূর্বাভাসে সতর্ক করে বলা হয়েছে, নিহতের সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। ভূমিকম্পে উদ্ধার কাজে সহযোগিতার জন্য তুরস্ক ও সিরিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা।

এছাড়াও ভূমিকম্পে দুই দেশে নিহতের সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। দেশ দুটিতে আরও ভবন ধসে পড়ার শঙ্কা রয়েছে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।

ডব্লিউএইচওর ইউরোপ অঞ্চলের জ্যেষ্ঠ জরুরি কর্মকর্তা ক্যাথরিন স্মলউড বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, আরও (ভবন) ধসের শঙ্কা রয়েছে। তাই আমরা নিহতের প্রাথমিক সংখ্যা আটগুণ বাড়ার আশঙ্কা করছি। সাক্ষাৎকার দেয়ার সময় দেশ দুটিতে প্রাণহানির সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৬০০ জন। সেই হিসাবে এর সংখ্যা শেষ পর্যন্ত ২০ হাজার ছাড়িয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন ক্যাথরিন।

ক্যাথরিন বলেন, দুর্ভাগ্যবশত, ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে আমরা সবসময় একই জিনিস দেখতে পাই, তা হলো প্রাথমিক খবরে পাওয়া হতাহতের সংখ্যা পরবর্তী সপ্তাহে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।

তিনি সর্তক করেছেন, শীতের মাঝামাঝি তাপমাত্রা এবং তুষারঝড়ের অবস্থার আশ্রয় ছাড়া বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। যা করেনার মত শ্বাসতন্ত্রের ভাইরাসের সঞ্চালন করবে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) বলেছে, সোমবার তুরস্কে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর অন্তত ১০০টি আফটার শক হয়েছে।

পিএনএস/এমবিবি

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন