রমজানে অধীনস্থ কর্মচারীর কাজ হালকা করুন

  16-03-2024 07:03PM

পিএনএস ডেস্ক: বেঁচে থাকতে হলে একে অপরের ওপর নির্ভর করতে হয়। আজ যারা অফিসপ্রধান তারাই তাদের অধীনস্থ কর্মচারীর কারণে খুব সহজেই অফিস পরিচালনা করতে সক্ষম। আপনি একটু ভাবুন, আপনার নিম্ন কর্মচারী যদি না থাকত, অফিসের কাজে আপনার কতইনা বেগ পেতে হতো। অফিস পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাসহ সব কাজই প্রধানের পক্ষে করা কষ্টের হতো। আজ যারা মালিকপক্ষ, যারা শিল্পপতি, দামি বাড়িতে বসবাস ও দামি গাড়িতে চলাচল করে, আনন্দে উল্লাসে সময়কে অতিবাহিত করে একটু লক্ষ্য করুন, আপনার এ আনন্দের পেছনে রয়েছে আপনারই অধীনস্থ শত শত শ্রমিক বা কর্মচারীর হাজারো ফোঁটা ঘাম। একজন কর্মচারীর গোটা জীবন কেটে যায় আপনার কারখানায়। মালিকের মুখে হাসি ফোটাতে, মালিককে লাভবান করতে অসহনীয় পরিবেশে কাজ করেন তারা। এমনকি মালিককে লাভবান করতে অতিরিক্ত ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজ করেন হাসিমুখে। সপ্তাহ, মাসজুড়ে কাজ করে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও মন একেবারে নষ্ট হয়ে যায়। শ্রমিকদের দুঃখ-কষ্ট তারা ব্যতীত অন্যরা খুব কমই বোঝে, যে শ্রমিক দিয়ে আমরা আজ বিত্তশালী। পরিবারকে নিয়ে আনন্দে কাটাচ্ছি।

তাদের অবহেলা করা উচিত নয়। মাহে রমজানে অধীনস্থ কর্মচারীদের থেকে কাজের বোঝা কমিয়ে দেওয়া ভালো কাজ। একজন কর্মচারীর রোজা রেখে পরিপূর্ণভাবে কাজ সম্পাদন করা যে কত কঠিন, উপরস্থ কর্মচারী কিংবা মালিকপক্ষের অনুভব করা দরকার। রমজান মাসে তাদের ওপর কষ্টকর সাধ্যাতীত কাজের বোঝা চাপানো ঠিক নয়। এটা রোজাদারকে কষ্ট দেওয়া হয়। রোজা রেখে তারা অধিক কষ্টসাধ্য কাজ করলে বেশি ক্লান্ত ও পরিশ্রান্ত হয়ে পড়ে। তারা নিজ পরিশ্রম দিয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে ১২টি মাসের ১১টিতেই কাজ করল। রোজার এই একটি মাসে তাদের অধীনস্থ কর্মচারীদের কাজকে হালকা করে দেওয়া ভালো কাজ। এ ব্যাপারে বলেন, ‘এ মাসে (রমজানে) যারা দাস-দাসীদের প্রতি সদয় ব্যবহার করেন, অর্থাৎ তাদের কাজের বোঝা হালকা করেন, আল্লাহ তাদের দয়াপরবশ হয়ে ক্ষমা করে দেন এবং জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করেন।’ শান্তির ধর্ম ইসলামে মানুষের পার্থক্য করেনি। মাটির কবরেই সবার শেষ ঠিকানা। ধনী-গরিব, মালিক-শ্রমিকের কোনো পার্থক্য করে না। একটি প্রতিষ্ঠানে সবাই সমান। মালিক নিজে যা খাবে ও পরবে, অধীনস্থ কর্মচারীকে তা-ই খাওয়াবে ও পরাবে। উঁচু-নীচুর মন মানসিকতা তৈরি করবে না। প্রিয় রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ তোমাদের ভাইদেরকে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন। অতএব, যার অধীনে কোনো ভাই থাকে তাকে তা-ই খাওয়াবে যা সে নিজে খায়, তাকে তা-ই পরাবে যা সে নিজে পরে এবং তাকে সাধ্যের অধিক কাজ চাপিয়ে দেবে না। অগত্যা তাকে দিয়ে যদি কোনো কষ্টের কাজ করাতে হয়, তাহলে তাকে সাহায্য করবে।’ বুখারি ও মুসলিম।

রমজানে বাসার কাজের ছেলেমেয়েদের অতিরিক্ত কাজ করানো হয়। অল্প বেতন দিয়ে পুরো পরিবারটিকেই গুছিয়ে রাখে তারা। একটু ভুল হলেই বকাঝকা পর্যন্ত করে। কাজের ছেলেমেয়ের হাত দিয়ে সামান্য কিছু নষ্ট হলেই শুরু হয় বেদম প্রহার বা নির্যাতন। অথচ নিজের ছেলেমেয়েদের ব্যাপারে কোনো কিছু নেই। রমজানে অতিরিক্ত রান্নার কারণে মালিকপক্ষের উচিত তাকে সাহায্য করা।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক

এসএস

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন