বগুড়ায় কালবৈশাখী ঝড়ে ২ জনের মৃত্যু, ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

  21-05-2022 07:39PM

পিএনএস ডেস্ক: বগুড়ায় ঝড়ে দেয়াল ও গাছ চাপায় দুই উপজেলার দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে একজন কাহালুতে নিজ ঘরে দেয়াল চাপায় মারা গেছেন। অন্যজন শাজাহানপুর উপজেলায় ঝড়ে ভেঙে পড়া গাছ সরাতে গিয়ে আহত হন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

শনিবার (২১ মে) বিকেলে শাজাহানপুর থানার ইনচার্জ (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এ ছাড়াও বগুড়ায় প্রচণ্ড গতির ঝড়ে ইরি-বোরো ধানসহ গাছপালা ও বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের। আজ একই দিন ভোররাতে পুরো জেলার ওপর দিয়ে এই ঝড় আঘাত হানে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন, কাহালু উপজেলার মাছপাড়া গ্রামের দিনমজুর শাহিন (৪৫) ও শাজাহানপুর উপজেলার কুষ্টিয়া গ্রামের আবদুল হালিম (৫১)।

জানা গেছে, আজ শনিবার ভোররাত সাড়ে ৩টার পরে কালবৈশাখী ঝড় শুরু হয়। ঝড়ের সঙ্গে শুরু হয় বৃষ্টি। ভোররাত ৪টা থেকে ৪টা ৪ মিনিট পর্যন্ত ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৮৬ দশমিক ৬ কিলোমিটার; যা এই মৌসুমে সর্বোচ্চ গতিবেগের ঝড়। এ ছাড়া রাতে ঝড়ের সঙ্গে জেলায় ৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে বগুড়া আবহাওয়া অফিস।

এদিকে আজ শনিবার ভোরে কাহালু উপজেলার মাছপাড়া গ্রামে ঝড়-বৃষ্টিতে একটি গাছ উপড়ে পড়ে দিনমজুর শাহিনের বাড়ির ওপর। এ সময় গাছের ভারে মাটির দেয়াল ধসে দেয়াল-চাপায় ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ ছাড়াও একই দিন ভোরের ঝড়ে আবদুল হালিমের বাড়ির ওপর একটি গাছ ভেঙে পড়ে। সকালে তিনি গাছটি সরাতে ডাল কাটছিলেন তিনি। এ সময় ওই গাছের চাপায় পড়ে গুরুতর আহত হন তিনি। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নেন স্বজনরা। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

এছাড়া একদিকে বসতবাড়ি লণ্ডভণ্ড অন্যদিকে কষ্টার্জিত ফসল ঘরে তোলার আগেই শেষ। ফলে কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতি শঙ্কা করছেন জেলার কৃষকরা। তবে আজ শনিবার বিকেল ৫ টা পর্যন্ত বেশকিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ হলেও বেশিরভাগ এলাকাতেই এখনো বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক ইউসুফ রানা মণ্ডল বলেন, গত রাতের ঝড়ে ঘরে তোলার জন্য প্রস্তুত ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে ফসলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে কাজ চলছে।

বগুড়া আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া জানান, আজ শনিবার ভোর রাত ৪টায় ঘূর্ণিঝড় শুরু হয়। মাত্র ৪ মিনিট স্থায়ী ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের গতিবেগ ছিল ৮৮ দশমিক ৬ কিলোমিটার।

তিনি আরও বলেন, ৪টা ৪ মিনিটে বাতাসের গতিবেগ কমে আসলে শুরু হয় বৃষ্টিপাত। ভোর সাড়ে ৫টা পর্যন্ত দমকা বাতাসের পাশাপাশি ৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।

নর্দান পাওয়ার সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো) বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ওমর ফারুক বলেন, ঝড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে পড়া ছাড়াও গাছের ডাল ভেঙে পড়েছে বিদ্যুতের তারে। ফলে ভোর রাত ৪টা থেকে পুরো জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আজ শনিবার সকাল থেকে কাজ চলছে। পর্যায়ক্রমে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।

পিএনএস/আনোয়ার

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন