আগাম আলু চাষে ব্যস্ত নীলফামারীর কৃষকরা

  25-09-2022 01:25PM



পিএনএস ডেস্ক : দেশের উত্তরের জেলা নীলফামারী। এখানকার অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর। এ অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে কৃষিকাজ করে। তবে এ জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলায় আগাম আলু চাষ হয়ে আসছে দীর্ঘ দিন ধরে। দেশের বাজারে আগাম আলুর জন্য বিখ্যাত এই উপজেলা।

জানা গেছে, জেলার উর্বর দোআঁশ, বেলে দোআঁশ মাটিতে বিভিন্ন রকম ফসল আবাদ হয়ে থাকে। প্রতি বছর আগাম আলু চাষ করে স্বাবলম্বীও হয়েছেন অনেক প্রান্তিক ও মাঝারি কৃষক। এ বছরও অনুকূল পরিবেশে স্বল্পমেয়াদি আগাম আমন ধান ঘরে তুলে সেই জমিতে আগাম আলু চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন শত শত কৃষক।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দোআঁশ মাঠগুলোতে ৫০-৫৫ দিনে উত্তোলনযোগ্য সেভেন জাতের আগাম আলুর বীজ রোপণে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। যার আলু যত আগে উঠবে, সে তত বেশি লাভবান হবেন। মৌসুমের শুরুতে নতুন আলু ভোক্তাকে দিতে পারলে চড়া বাজারমূল্য পেয়ে দ্বিগুণ লাভবান হবেন এমন প্রত্যাশা তাদের।

রণচন্ডি ইউনিয়নের কুটিপাড়া এলাকার কৃষক মোজাম্মেল হক বলেন, এ বছর ৫ বিঘা জমিতে আগাম আলু রোপণ করেছি। আগুর (নির্দিষ্ট সময়ের আগে) আলু উত্তোলন করতে পারলে ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে বাজার ধরা যাবে। গত বছর ধান কাটার পর এই জমিতে চাষ করা আলু ক্ষেতে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে বিঘায় লাভ করেছি ৪০ হাজার টাকারও বেশি।

একই এলাকার রিকুল হোসেন আগাম আলু চাষ করেছেন ৫ বিঘা জমিতে। তিনি বলেন, আমাদের এদিকের ডাঙ্গা জমিগুলো একদম উঁচু এবং বালুমিশ্রিত। ভারী বৃষ্টিপাত হলেও তেমন ভয় থাকে না। তাই আগেভাগে দ্বিগুণ লাভের আশায় আগাম আলু চাষ করছি।

বাহাগিলী ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি গ্রামের আলুচাষি আনারুল হোসেন বলেন, গত বছর ৩ বিঘা জমিতে ৩৯ বস্তা ফলন পাই। যা উত্তোলন করে ৯০ টাকা কেজি ধরে বিক্রি করে খরচ বাদে ২ লাখ টাকা আয় হয়েছে। এবার ধান কাটার পর ১০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, চলতি বছর ৪ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ১০০ হেক্টর বেশি।

এ বছর আগাম আমন ধানে রেকর্ড পরিমাণ ফলন পেয়ে কৃষক আলু চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উঁচু জমিতে আলুচাষে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। নিচু জমিতে আবহাওয়া দেখে রোপণের কথা বলা হচ্ছে।

এ উপজেলার অন্যতম আকর্ষণ আগাম আলু ৫০-৫৫ দিনের মধ্যে বাজারে চলে আসবে। আশা করছি ভালো ফলন ও চড়া বাজার মূল্য পেয়ে কৃষক পরিবারে সমৃদ্ধি বয়ে আনবে। আগাম ধান, আগাম আলু চাষে এ জনপদে অভাব এখন অতীত।

পিএনএস/আলাউদ্দিন

@PNSNews24.com

আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন